জড়তার ভ্রামক কাকে বলে

বল প্রয়োগ না করা পর্যন্ত অস্থির বস্তু যে স্থির থাকতে চায় কিংবা গতিশীল বস্তু যে গতিশীল থাকতে চায় বস্তুর এই বৈশিষ্ট্যটাই হচ্ছে পদার্থবিজ্ঞানের ভাষায় জড়তা। হঠাৎ গাড়ি চলতে শুরু করলে আমরা যেভাবে পেছনের দিকে একটা ঝাঁকুনি খাই সেটাই হচ্ছে জড়তার উদাহরণ হিসেবে বলা যেতে পারে। শরীরের নিচের অংশ গাড়ির সাথে লেগে আছে। তাই আমরা এর আগে অবশ্য বেগ দ্রুতি ত্বরণ বন্ধন অতিক্রান্ত দূরত্ব এবং তাদের একটির সাথে অন্যটির সম্পর্ক বিষয়ে কথা বলা হয়েছে। তাই গতির সমীকরণ গুলি আমরা এখান থেকে বের করতে পেরেছি এবং গতি সংক্রান্ত সমস্যার সমাধান করতে সেগুলো ব্যবহারও আমরা করেছি। এই অধ্যায় আমরা বল প্রয়োগ করে কিভাবে গতির সৃষ্টি করা যায় কিংবা গতিকে প্রভাবিত করা যায় সেটি আমরা অবশ্য জানব। আমরা এজন্য নিউটনের প্রথম সূত্রটি দিয়ে শুরু করতে পারি যে নিউটনের প্রথম সূত্রের প্রথম অংশ থেকে অংশ নিয়ে কারো সমস্যা হয় না কারণ আমরা সব সময় দেখে যে স্থির বস্তুকে ধাক্কা না দেওয়া পর্যন্ত সেটা নিচ থেকে নড়ে না স্থির থেকে যায়।

অর্থাৎ দ্বিতীয় অংশটি নিয়ে সমস্যা কারণ আমরা কখনোই কোন চলন্ত বস্তুকে অনন্তকাল চলতে দেখিনা। সেটি একসময় অবশ্যই থেমে যাবে। তাই এই জনতা সম্পর্কে আমাদের অবশ্যই জেনে নিতে হবে। আজকে আমাদের অবশ্যই নির্ণয় করতে হবে জনতা কি কাকে বলে।
একটি কণার ভর ও ঘূর্ণন অক্ষ হতে এর লম্ব দূরত্বের বর্গের গুণফলকে উক্ত কণার জড়তার ভ্রামক বলে। বস্তুর মধ্যস্থিত সবগুলো কণার জড়তার ভ্রামকের সমষ্টিকে উক্ত বস্তুর জড়তার ভ্রামক বলে। তাই আজকে আমাদের নির্ণয় করতে হবে জনতার ভ্রামক। কোন অক্ষের চারিদিকে ঘূর্ণবায়ন কোন বস্তুর উপর যে টক প্রয়োগ করলে তাতে একক কণিক ধরনের সৃষ্টি হয় তাকে ওই অক্ষের সাপেক্ষে জড়তার ভ্রামক বলা হয়ে থাকে।

অর্থাৎ একটা বস্তু সরলরেখায় চললে ভরের যে ভূমিকা কৌণিক গতিতে চললে জড়তার ভ্রামকের একই ভূমিকা হয়ে থাকে। জড়তা হিসেবে দেখালে দেখাতে হয় যে একটি বস্তু যদি উলম্ব অক্ষ এর সাপেক্ষে ঘূর্ণরাত্র থাকে তাহলে তার জাড়তার ভ্রামক হবে-
ওই বস্তু কণাটির ভর= m – {1}
ঘূর্ণন অক্ষ হতে এর দূরত্ব = r – {1}

তাই সংজ্ঞা অনুযায়ী বলা হয় যে কোন টিপ যেন তার ভ্রামক জনতার ভ্রামক বা কণা সমূহের তথা বস্তুর কৌণিক বেগের উপর নির্ভর করে না। এটি নির্ভর করে ঘূর্ণন অক্ষসাপেক্ষে বস্তুর ভর বন্টনের ওপর। কৌণিক বেগ কম বা বেশি হলে কৌণিক ভরবেগ ও গতিশক্তি কম বেশি হবে কিন্তু ঘূর্ণন অক্ষসাপেক্ষে একটি বস্তুর জনতার ভ্রামক অপরিবর্তিত থাকবে। আবার বলা যায় যে কোন দৃঢ় বস্তুর সমগ্র ভর যদি একটি নির্দিষ্ট বিন্দুতে কেন্দ্রীভূত করা যায় যাতে করে একটি নির্দিষ্ট অক্ষের সাপেক্ষে ঐ কেন্দ্রভূত বস্তুকণার জড়তার ভ্রামক, ঐ নির্দিষ্ট অক্ষের সাপেক্ষে দৃঢ় ঐ বস্তুর জনতার ভ্রামক এর সমান হয় তাহলে ওই নির্দিষ্ট অক্ষ থেকে কেন্দ্রীভূত বস্তু কণার লম্ব দূরত্বকে চক্র গতির ব্যাসার্ধ বলা হয়। তাই বলা যায় যেহেতু একটা স্থির থাকার জনতা তাই এটাকে বলে স্থির জড়তা।

গতি জড়তার কারণে আমরা মানুষজনকে চলন্ত বাস ট্রেন ইত্যাদি জায়গায় গতিশীল বলে মনে হয়ে থাকে। তাই গতি জনতার কারণে এরকম মনে হওয়ার বিষয়ে মনে হয়। আমরা আজকে জনতা সম্পর্কে বিভিন্ন বক্তব্য আপনাদের সামনে এখানে তুলে ধরলাম কিন্তু এখন আমাদের দেখাতে হবে যে যারতার ভ্রামক কি বা কাকে বলে। তাহলে চলুন দেখি যে জনতার ভ্রামক কাকে বলে। জড়তার ভ্রামক: কোন ঘূর্ণনরত দৃঢ় বস্তু যে অসংখ্য বস্তু কণার সমন্বয়ে গঠিত, ঘূর্ণন অক্ষ থেকে তাদের প্রত্যেকটির দূরত্বের বর্গ ও ভরের গুণফলের সমষ্টিকে ঐ ঘূর্ণন অক্ষের সাপেক্ষে বস্তুটির জড়তার ভ্রামক বলে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *