হরমোন কাকে বলে

মানুষ এবং বিভিন্ন প্রাণীর দেহে এক ধরনের বিশেষ নারীবিহীন গ্রন্থি থাকে। এসব গ্রন্থি থেকে নিঃসৃত রস রক্তের মাধ্যমে প্রবাহিত হয়ে দেহের বিভিন্ন শারীরবৃত্তীয় কাজ নিয়ন্ত্রণ করে। অর্থাৎ দেহের যে শারীরবৃত্তীয় কাজগুলি ঘটে থাকে তা মনে করা হয় হরমোনের প্রভাবে হয়ে থাকে। তাই হরমোন আমাদের শরীরের জন্য অবশ্যই একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। হরমোন পরিবহনের জন্য পৃথক কোন নালী থাকে না। আচ্ছা হরমোন রক্ত স্রোতের মাধ্যমে প্রবাহিত হয়ে নির্দিষ্ট লক্ষকোষে পৌঁছে কোষের প্রাণ রাসায়নিক কার্যকলাপ কে প্রভাবিত করে জৈবিক কার্যাবলী সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করে।

প্রাণীর প্রয়োজনীয় সমন্বয় কাজ স্নায়ু ছাড়াও হরমোন দ্বারা প্রভাবিত হতে পারে। হরমোনের কারণে প্রাণী তার কার্যকলাপ অর্থাৎ নড়াচড়া বা আচরণের পরিবর্তন করে থাকে। এই বিষয়টি নিয়ে বিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখায় প্রচুর গবেষণা হয়েছে। হরমোন পরিবহনের জন্য পৃথক কোন নালী নেই। হরমোন রক্তস্রোতের মাধ্যমে প্রবাহিত হয়ে নির্দৃষ্ট লক্ষকোষে পৌঁছে কোষের প্রাণ রাসায়নিক কার্যকলাপ কে প্রভাবিত করে জৈবিক কার্যাবলী সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করে।

সুস্থ দেহের চাহিদা অনুসারে গ্রন্থি থেকে অবিরত ধারায় হরমোন নিঃসৃত হয়। উদ্ভিদের বিভিন্ন কাজ এই হরমোন নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। যেমন- অক্সিন ও অন্যান্য কৃত্রিম হরমোন শাখা কলমে মূল উৎপাদনে সাহায্য করে। তাই উদ্ভিদের ক্ষেত্রে এই হরমোন অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ। ইন্ডল অ্যাসিটিক অ্যাসিড নামক এক ধরনের অক্সিন এর প্রভাবে ক্যাম্বিয়ামের কার্যকারিতা বৃদ্ধি পায়। এর কারণে কেলাস নামক এক ধরনের অনিয়ন্ত্রিত কোষগুচ্ছের সৃষ্টি হয় এবং ক্ষতস্থান পূরণ হয়ে যায়। অক্সিন প্রয়োগ করে ফলের মোচন ও বিলম্বিত করা হয়। তাই এই ধরনের হরমোন এখন উদ্ভিদ দেহে বহুল ভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে। বেশহেন ফল উৎপাদনে অক্সিন ও জিবরালিনের ব্যবহার বেড়েছে। প্রাণী দেহের অর্থাৎ প্রাণীর সুস্থ দেহের চাহিদা অনুসারে গ্রন্থি থেকে অবিরত ধারায় হরমোন মিশ্রিত হতে পারে। তবে প্রয়োজন অপেক্ষা কম অথবা বেশি পরিমাণ হরমোন নিঃসৃত হলে শরীরের নানা রকম অবাঞ্ছিত প্রক্রিয়ার সৃষ্টি হয়ে থাকে।

তাই এই অহর মন উদ্ভিদ অথবা প্রাণী উভয়ের দেহে সঠিকভাবে হওয়া উচিত। তবে বিশেষ করে প্রাণীর জন্য হরমোনের প্রভাব আরো বেশি ভাবে পরিলক্ষিত হয়। যেকোনো হরমোন সঠিক মাত্রায় বেশি হলে বিভিন্ন ধরনের রোগ বাসা বাঁধতে পারে আমাদের শরীরে। তাই সকল কিছু ঠিকঠাক হওয়ার জন্য বা ঠিকঠাকভাবে কাজ করার জন্য অবশ্যই হরমোনের প্রভাব গুলো ঠিকভাবেই তাতে কাজ করে এটি আমাদের কাম্য। আমাদের মানব দেহের নারীবিহীন গ্রন্থির মধ্যে রয়েছে বিটুইটারি গ্রন্থি থাইরয়েড গ্রন্থি প্যারাথাইরয়েড গ্রন্থি থাইমাস গ্রন্থি , এড্রেনাল বা সুপ্রারেনাল গ্রন্থি।

পিটুইটারি গ্রন্থি বা হাইপ্রোফাইসিস মস্তিষ্কের নিচের অংশে অবস্থিত থাকে। এইটি মানবদেহের প্রধান হরমোন উৎপাদনকারী গ্রন্থী হিসেবে পরিচিত। কারণ এই পৃথিবীটারী গ্রন্থির থেকেই সবচাইতে বেশি হরমোন নিঃসৃত হয়। দেহের সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ নালিব ঋণ গ্রন্থি হলেও এটি আকারে সবচেয়ে ছোট। এরপরে থাইরয়েড গ্রন্থির দিকে যদি দেখি তাহলে এটি গলায় ট্রাকের উপরের অংশে অবস্থিত। এই গ্রন্থি থেকে প্রধানত থাইরক্সিন নামক হরমোন নিঃসৃত হয়। আর এই কারণেই এই গ্রন্থির নাম থাইরয়েড গ্রন্থি।

প্যারা থাইরয়েড গ্রন্থি হল একজন মানুষের সাধারণত চারটি প্যারা থাইরয়েড গ্রন্থি থাকে যার সবগুলোই থাইরয়েড গ্রন্থির পেছনে অবস্থিত থাকে। এই গ্রন্থী হতে নিশ্চিত পেরাত হরমোন মূলত ক্যালসিয়াম এবং ফসফরাসের বিপাক নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। সর্বশেষ গ্রন্থী হল অ্যাড্রেনাল গ্রন্থী। অ্যাড্রেনাল গ্রন্থি কিডনির উপরে অবস্থিত থাকে। এই গ্রন্থে মূলত কঠিন মানসিক এবং শারীরিক চাপ থেকে পরিত্রাণের সাহায্য করে। এড্রেনালিন এই গ্রন্থি থেকে নিঃসৃত হরমোনগুলোরই একটি। এখন আমরা হরমোনের বিভিন্ন দিক এবং যে নালিবিহীন গ্রন্থি সেই নালীগুলিরও পরিচয় দেওয়া হয়েছে। তাহলে এখন আমরা দেখতে পারি যে এই হরমোন কি বা কাকে বলে? তাহলে চলুন দেখা যাক-

হরমোন: হরমোন ইংরেজি Hormone , গ্রিক: ὁρμή) যে জৈব-রাসায়নিক তরল যা শরীরের কোনো কোষ বা গ্রন্থি থেকে শরীরের একটি নির্দিষ্ট অংশে নিঃসরিত হয়ে রক্তরস বা ব্যাপন প্রক্রিয়ায় উৎপত্তিস্থল থেকে দূরে বাহিত হয়ে দেহের বিভিন্ন বিপাকীয় ক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ করে এবং ক্রিয়ার পর ধ্বংস প্রাপ্ত হয় তাদের হরমোন বলে। হরমোন কথার অর্থ হল ‘জাগ্রত করা’বা ‘উত্তেজিত করা’।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *