বাংলা সাহিত্যের লিখিত প্রথম রুপি হল কবিতা। অর্থাৎ বাংলা সাহিত্য যে ৬০০ থেকে ৭০০ সালের মধ্যে লিখা গ্রন্থ আবিষ্কৃত হয় অর্থাৎ প্রাচীন নিদর্শন সেটি হচ্ছে চর্যাপদ এই চর্যাপদ কবিতা আকারে লেখা ছিল। তাই এ কথা বলা যায় যে কবিতা দিয়েই বাংলা সাহিত্যের শুরু হয়। এবং সাহিত্য রচনা প্রথম কবিতা আকারেই বা ছন্দ বাধ্য ভাবেই লিখতো বাংলা সাহিত্যের প্রথম লেখক বা কবিরা। এরপর মধ্যযুগের যে নিদর্শনগুলি পাওয়া যায় বাংলা সাহিত্যের সেখানেও ছন্দবদ্ধ ভাবে সাহিত্য রচনা হয়েছে। আর কবিতা হল কবির মনের মাধুরী মিশিয়ে কয়েক লাইনের মধ্যে সমস্ত ভাষাটিকে প্রকাশ করা হয়। অর্থাৎ বৃহৎ কৃষকের অল্প কিছু ছন্দগাথা লাইনের মধ্যে প্রকাশ করার অর্থই হলো কবিতা।
আবার এ কথা বলা যায় যে কবির বেদনা বৃদ্ধ হৃদয়ে কবিতার জন্ম দেয়। বাহিরের জগতের স্পর্শ শব্দ বা আপন মনের ভাবনা বেদনা অনুভূতিকে কল্পনায় এনে যিনি অনুভূতি স্নিগ্ধ ভাষায় প্রকাশ করে তাই হল কবিতা। কোন একটি বিশেষ পরিপ্রেক্ষিতে এবং কোন একটা সূত্র ধরে কবিতার মনের মাধুরী মিশিয়ে কবির আনন্দ বেদনা যখন কোন ভাষার মাধ্যমে ছন্দবদ্ধ ভাবে প্রকাশ করে থাকে তখন সেটি কবিতার জন্ম হয়। তাই দেখা যায় যে কবিতা কবির সন্তানের মত হয়ে থাকে যা কবির দ্বারা সৃষ্টি হয় অতি আদর ভালবাসা মমতা দিয়ে।
বস্তুত কবির মনের ভাবনা কল্পনা যখন তার অনুভূতির রঙ্গে রাঙ্গিয়ে যথাযথভাবে শব্দ ভান্ডারে বাস্তব সুষমা মন্ডিত চিত্তক ও ছন্দময় রূপ দেয় তখন এটি কবিতা হয়। এক সময় বাংলা সাহিত্য রচনা ছিল শুধুমাত্র কবিতার ওপর নির্ভর করে। অর্থাৎ আমরা যদি প্রথম থেকে শুরু করে মধ্যযুগ পর্যন্ত দেখি তাহলে কবিতা দিয়ে শুরু হয় বাংলা সাহিত্য কে সমৃদ্ধ করা। পরবর্তীতে অর্থাৎ আধুনিক যুগের দিকে সেই প্রথম শুরু হয় গদ্যতে প্রবন্ধ ছোটগল্প নাটক যাত্রাপালা ইত্যাদি রচনা করা। এগুলো রচনার পূর্ব পর্যন্ত ছিল শুধুমাত্র কবিতার মাধ্যমে বাংলা সাহিত্যের সবকিছুর রচনা করা। এরপর অবশ্য আস্তে আস্তে বাংলা সাহিত্যের সেইসব বাধা ধরা বাধা নিয়ম-নীতি তোয়াক্কা না করে চলিত ভাষায় এবং গদ্য রচনার মাধ্যমে বিভিন্ন সাহিত্য রচনা হতে থাকে। এবং এই সাহিত্য গুলি পাঠকদের কাছে অত্যন্ত জনপ্রিয় হতে থাকে।
এবং এই জনপ্রিয়তা পাওয়ার কারণে সাকে বাধা সেই সাহিত্য রচনার পরবর্তী যে সাহিত্য গুলি এসেছে বাংলার সাহিত্য সেগুলি মানুষের গ্রহণযোগ্য তাও পেয়েছে এবং বাংলা সাহিত্যকে অনেক সমৃদ্ধ করে গেছে। আমাদের বাংলা সাহিত্যের আদি নিদর্শন চর্যাপদ গুলো কবিতা হিসেবে রচিত ছিল। এবং এই চর্যাপদের শুধু ধর্মের কথাই ছিল না এখানে ছিল বিভিন্ন সমাজ চিত্র সেই সময়কার দৈনন্দিন অবস্থা অর্থাৎ ইতিহাসের ভাষা পাওয়া যায় ইতিহাসের প্রতি ছবি পাওয়া যায় সেই চর্যাপদের মধ্য থেকে। চর্যাপদ থেকে আমরা পাই যে সে সময়কার সমাজ জীবন কেমন ছিল কিভাবে মানুষের বসবাস ছিল যাতায়াত কেমন ছিল সকল ধরনের চিত্রই চর্যাপদ পর্যালোচনা করলে পেতে পারি। আর এগুলি এতই জীবন্ত ছিল যে সেই চর্যাপদ গুলি পর্যালোচনা করলে আমরা প্রাচীন গাছপালা ঘর-বাড়ি সমাজচিত্র সকলে জীবন তো মনে হয় আমাদের সামনে।
চর্যাপদ থেকে আমরা পাই সেই প্রাচীন বাংলার সুখ দুঃখের ইতিহাস বা তারা কেমন ধরনের অলংকার ব্যবহার করত তাদের যানবাহন কেমন ছিল ইত্যাদি সকল বিষয়েই ধারণা পাওয়া যায় এই চর্যাপদ থেকে। এক কথায় বলা যায় যে চর্যাপদের পথগুলি আমরা ভালোভাবে বিশ্লেষণ করলে তখনকার সম্পূর্ণ সমাজ চিত্র আমাদের চোখের সামনে এসে দাঁড়ায় এবং মনে হয় এইমাত্র আমরা সেই প্রাচীনকাল থেকে হেঁটে এলাম এক্ষুনি এতটাই জীবন্ত ছিল সেই চর্যাপদের পথগুলি। কবিতা সম্পর্কে বিভিন্ন কথায় আমরা আমাদের এই পোস্টে তুলে ধরলাম। তবে এখন আমরা দেখতে পারি কবিতা কাকে বলে?
কবিতা: কবিতা বলতে আমরা বুঝি যে ছন্দবদ্ধ পদকেই কবিতা বলা হয়। ছন্দই কবিতার প্রাণ ছন্দ এই কবিতাকে তার স্বরূপ গত বৈশিষ্ট্য দান করে।