আমরা একথা বলতে পারি যে সংখ্যার ইতিহাস মানব সভ্যতার ইতিহাসের মতোই প্রাচীন। কারণ প্রাচীনকালে গুহাবাসী মানুষরা যখন আস্তে আস্তে কিছু শিখতে শুরু করেছিল তখনই তাদের বিভিন্নভাবে সংখ্যার প্রয়োজন হয়ে পড়ে। অর্থাৎ সেই গুহা বাসী মানুষ যখন তাদের কৃষিকাজের দিকে আস্তে আস্তে নিজেদের গুহার পাশেই কৃষিকাজ পশুপালন ইত্যাদি করতে শুরু করেছিল তখন থেকেই তাদের সংখ্যার প্রয়োজন জরুরিভাবে হয়েছিল। কারণ তাদের পশুগুলির সংখ্যা বা মনে রাখার জন্য কোন চিহ্ন তারা ব্যবহার করত। আর তখন থেকেই মনে করা হয় সংখ্যার যোগ শুরু। তাই পরিমাণকে প্রতীক দিয়ে সংখ্যা আকারে প্রকাশ করার পদ্ধতি থেকে গণিতের উৎপত্তি হয় বলে মনে করা হয়ে থাকে। অর্থাৎ এটা মনে করা হয় যে গ্রিক দার্শনিক অ্যারিস্টোটল প্রাচীন মিশরের পুরোহিত সম্প্রদায়ের অনুশীলনের মাধ্যমে যে গণিতের আনুষ্ঠানিক অভিষেক ঘটে সে কথা বলেছিলেন অনেক আগেই।
তাই আমরা দেখতে পাই যে বিভিন্ন ধরনের সংখ্যা আমাদের বর্তমান গণিতবিদ্যায় রয়েছে। স্বাভাবিক সংখ্যার গণনার প্রয়োজনেই প্রাচীন ভারতবর্ষের গণিতবিজ্ঞান সর্বপ্রথম তারা কিছু প্রতীক যেমন ০ ও ১০ ভিত্তিক স্থানীয় মান পদ্ধতির প্রচলন শুরু করেছিলেন। তাই আমরা বলে ছিলাম যে শব্দ বিভিন্ন ধরনের বিভিন্ন প্রকারের হয়ে থাকে সেটি আধুনিক গণিতবিদ্যার ভাগ করা হয়েছে। যেমন স্বাভাবিক সংখ্যা বাস্তব সংখ্যা দশমিক সংখ্যা ভগ্নাংশ সংখ্যা ঋণাত্মক সংখ্যা ধনাত্মক সংখ্যা অরিনাত্মক সংখ্যা মৌলিক সংখ্যা যৌগিক সংখ্যা প্রকৃত সংখ্যা অপ্রকৃত সংখ্যা মিশ্র সংখ্যা সসীম সংখ্যা অসীম সংখ্যা ইত্যাদি।
এ ধরনের সংখ্যাগুলিকে বাস্তব সংখ্যা বলা হয়ে থাকে। তাই আমরা বলতে পারি যে বাস্তব সংখ্যাটি এতগুলি রূপ। তাই আমরা বাস্তব সংখ্যা কে বিভিন্ন রূপে দেখতে হলে প্রথম থেকে শুরু করতে হবে। বাস্তব সংখ্যা প্রধানত দুই ধরনের হয়ে থাকে। প্রথমটি মূলদ সংখ্যা অপরটি অমূলদ সংখ্যা। মূলদ সংখ্যা আবার দুই ধরনের হয়ে থাকে। একটি পূর্ণ সংখ্যা অপরটি ভগ্নাংশ সংখ্যা। অমূলদ সংখ্যা এক ধরনেরই হয়ে থাকে অসীম অনাবৃত দশমিক ভগ্নাংশ।
পূর্ণ সংখ্যা তিন ধরনের হয়ে থাকে। যথা: ধনাত্মক সংখ্যা ০ সংখ্যা ঋণাত্মক সংখ্যা। ধনাত্মক সংখ্যা তিন প্রকারের। যথা: মৌলিক সংখ্যা যৌগিক সংখ্যা এবং মৌলিক নয় যৌগিক নয় এমন একটি সংখ্যা সেটি হচ্ছে ওয়ান বা বাংলায় এক। ভগ্নাংশ সংখ্যা দু প্রকারের হয়ে থাকে। একপ্রকার সাধারণ ভগ্নাংশ এবং অপর প্রকার দশমিক ভগ্নাংশ। সাধারন ভাগব দুই ধরনের হয় যথা একটি প্রকৃত ভগ্নাংশ অপরটি অপ্রকৃত ভগ্নাংশ কখনো কখনো আবার অপ্রকৃত ভগ্নাংশকে মিশ্র ভগ্নাংশ বলা হয়ে থাকে। দশমিক ভগ্নাংশ দুই ধরনের হয় একটি সসীম ভগ্নাংশ দশমিক অপরটি অসীম আবৃত্ত দশমিক সংখ্যা। সসীম দশমিক ভগ্নাংশ অর্থাৎ যে দশমিক ভগ্নাংশ গুলোকে শেষ করা যায় না অর্থাৎ কল্পনাতেও তাদেরকে শেষ করা যায় না কল্পনার পরেও যদি কোন অংক থাকে সেটিকে ই অসীম দশমিক ভগ্নাংশ বলা হয়ে থাকে।
আবার আমরা বলতে পারি কোন আবৃত দশমিক ভগ্নাংশে দশমিক বিন্দুর ডানদিকের অংক গুলোর সব অথবা পর পর থাকা কিছু অংশ বারবার আসতে পারে। তাহলে এই কিছু অংশ বারবার অংশকে না লিখে তাদের ওপর আমরা পৌনঃপুনিক চিহ্নটি বসিয়ে দিতে পারি। তাহলে আবার যে সকল দশমিক ভগ্নাংশে দশমিক বিন্দুর ডানে একটি অংক বারবার আসে বা একাধিক অংক পর্যায়ক্রমে বারবার আসে এদের আবৃত দশমিক ভগ্নাংশ বলা হয়। আবৃত্ত বা পৌনঃপুনিক দশমিক ভগ্নাংশের যে অংশ বারবার অর্থাৎ কোন কোন আসে তাকে আবৃত অংশ আর বাকি অংশকে অনাবৃত অংশ বলা হয়ে থাকে।
দশমিক ভগ্নাংশে দশমিক বিন্দুর পর আবৃত্যাংশ ছাড়া অন্য কোন অংক না থাকলে একে বিশুদ্ধ পৌনঃপুনিক ভগ্নাংশ বলা হয় এবং পৌনঃপুনিক দশমিক ভগ্নাংশে দশমিক বিন্দুর পর আবৃত্তাংশ ছাড়া এক বা একাধিক অংক থাকলে একে মিশ্র পৌনঃ ভগ্নাংশ বলা হয়।
বাস্তব সংখ্যা সম্পর্কিত বিভিন্ন তথ্যই আমরা এই আলোচনায় তুলে ধরলাম।
বাস্তব সংখ্যা: স্বাভাবিক সংখ্যাগুলিকে বাস্তব সংখ্যা বলা হয়ে থাকে যেমন: ১,২,৩,৪,৫,৬,৭,৮,৯,……. ইত্যাদি সংখ্যাকে বাস্তব সংখ্যা বলা হয়ে থাকে।