ভাষা আন্দোলন ছিল বাঙালি জাতির জন্য ঐতিহাসিক একটা আন্দোলন। পৃথিবীর ইতিহাসে হয়তো এরকম আন্দোলনের সংখ্যা খুবই কমই রয়েছে যারা ভাষার জন্য নিজের প্রাণ দিতে পিছপা হয়নি। বাঙালির ভাষা আন্দোলন ছিল ১৯৪৭ সাল থেকে ১৯৫৬ সাল পর্যন্ত পূর্ব বাংলা অর্থাৎ বর্তমানে বাংলাদেশ সংগঠিত একটি সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক আন্দোলন। বাংলা ভাষা কে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার লক্ষ্যে সেই সময়ের গণআন্দোলনের উন্মোচন ঘটেছিল। যদিও আন্দোলনটি পূর্ণরূপ পেয়েছিল ১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারি তে। তবে এর বীজ রোপন করা হয়েছিল বহু আগেই। তাই একজন বাঙালি হিসেবে ও বাংলা ভাষার মানুষ হিসেবে আপনাকে অবশ্যই জেনে রাখা উচিত
ভাষা আন্দোলনের সময় পূর্ব বাংলার মুখ্যমন্ত্রী কে ছিলেন। তাছাড়া এ ধরনের প্রশ্নের সম্মুখীন আমাদের অনেক সময় অনেক ক্ষেত্রেই হতে হয় তাই আপনাদের সুবিধার জন্য আমরা আমাদের আজকের আর্টিকেলটিতে এই বিষয়টি সম্পর্কে জানিয়ে দিব। রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে বাঙালি জাতির একটি গণ আন্দোলন ছিল ভাষা আন্দোলন। বাঙালির ওপর উর্দুকে চাপিয়ে দেয়ার পশ্চিম পাকিস্তানি জুলুমের প্রতিবাদ এবং মাতৃভাষার অধিকার প্রতিষ্ঠার রক্তাক্ত দিন ১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারি। এ দিন ঢাকার রাজপথে বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দিয়ে বাংলার ভাষার মর্যাদা প্রতিষ্ঠা করেন এদেশের দামাল ছেলেরা। পৃথিবীর ইতিহাসে এই ঘটনাটি একটি অনন্য ঘটনা।
পৃথিবীর ইতিহাস থেকে আমরা দেখতে পাই বিশ্বের নানা রাষ্ট্রে নানা স্থানে ভাষার দাবিতে সংগ্রাম হয়েছে। কিন্তু সে সংগ্রাম রক্তক্ষয়ের মাধ্যমে যায়নি। তাছাড়া বাঙ্গালীদের আন্দোলন অসাম্প্রদায়িক জাতীয় চেতনার ভিত্তি ও ভাষা ভিত্তিক জাতীয়তা সুদৃঢ় করেন। ভাষা আন্দোলনের মাধ্যমে বাঙালি জাতি তাদের বাংলা ভাষা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। তবে অনেক কিছু ত্যাগের মাধ্যমে তাদের এই অর্জন সম্ভব হয়েছে। পাকিস্তানের গর্ভনর ঢাকায় আগমনের পরে উর্দুকে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা করার প্রস্তাব গৃহীত হয়। ফলে পূর্ব বাংলার ছাত্র এবং বুদ্ধিজীবী মহলে তীব্র ক্ষোতের সৃষ্টি হয়।
তারা বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্রভাষার করার তাগিদে প্রস্তাব প্রস্তাব দিয়ে থাকেন। কিন্তু পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী এই প্রস্তাবে রাজি হয় না। প্রতিবাদ স্বরুপ ১৯৪৮ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি পূর্ব বাংলার ছাত্ররা হরতাল ধর্মঘট পালন করে। ফলে পূর্ববাংলা প্রাদেশিক সরকার অনেকটা দুর্বল হয়ে পড়ে। তারা গ্রহণ করে নানা রকম নিপীড়ন মূলক তৎপরতা। বেশ কিছু ছাত্র নেতাকে গ্রেফতার করে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠিয়ে দেয়া হয়। এসকল ঘটনার প্রেক্ষাপটে পূর্ব বাংলায় অবস্থান কারী বাংলাভাষী সাধারণ জনগণের মধ্যে গভীর ক্ষোভের জন্ম হয় ও বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করে। আর সেই ভাষা আন্দোলনের সময় পূর্ব বাংলার মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন নুরুল আমিন। সে সময় নূরুল আমিন বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে পাকিস্তানীদের সঙ্গে কাজ করেছিলেন।