ক্রেতা ও ভোক্তার মধ্যে পার্থক্য কি

আমাদের দেশে বাজার ব্যবস্থাপনা রয়েছে। অর্থাৎ হাটবাজারে আমাদের দেশীয় পণ্য অথবা বিদেশ থেকে আমদানিকৃত পণ্য গুলি ক্রয় বিক্রয় করা হয়। এই ক্রয় বিক্রয়ের মধ্যে দিয়ে পণ্যগুলি মানুষের কাছে অর্থাৎ সর্বোপরি তৃণমূল মানুষের কাছে পৌঁছে যায়। সকল ধরনের পণ্যই আমরা হাটে বাজারে ক্রয়-বিক্রয় করতে পারি। এই পণ্যগুলি বা পণ্য সমূহ যারা ক্রয় করে তাদেরকে ক্রেতা বলা হয়ে থাকে বাজার বিপণন ব্যবস্থাপনায়। তাই ক্রেতা বলতে আমরা বুঝি যারা কোন পণ্য ক্রয় করে তারাই হলো ক্রেতা। আর এই পণ্যগুলি যারা বিক্রয় করবে তাদেরকে বিক্রেতা বলা হয়ে থাকে। আমরা দেখেছি হাটে বাজারে কিছু মানুষজন তাদের পণ্যের পসরা সাজিয়ে বসে থাকে ক্রেতাদের আকর্ষণ করার জন্য। আর কে তারাও এসব পণ্যগুলি আকর্ষিত হওয়ার পর যেটি তার পছন্দ হয় সেই পণ্যটি যে দোকানে পায় সেখান থেকে সে ক্রয় করে নেয়।

এভাবে প্রতিটি ক্রেতাই তার পছন্দ কৃত পণ্যটি খুঁজতে থাকে বিভিন্ন দোকানের তাদের সাজানো পশুরায়। এখানে যারা দোকানদার তাদেরকে বিক্রেতা হিসেবে অভিহিত করা হচ্ছে এবং পণ্যগুলি যারা ক্রয় করছে তাদেরকে ক্রেতা বলে অভিহিত করা হচ্ছে। তাই ক্রেতা বলতে আমাদের মধ্যে কেমন কোন জটিলতা নেই যে কারা ক্রেতা, কে ক্রেতা এই সম্পর্কিত বিষয়টি নিয়ে। এক কথায় আমরা বললে বলতে পারি যে দোকান থেকে বা হাট বাজার থেকে যারা পণ্যগুলি ক্রয় করে তাদেরকে আমরা ক্রেতা বলে থাকি। এবং এই পণ্যগুলি দ্বারা বিক্রয় করে থাকে তাদেরকে দোকানদার বা বিক্রেতা বলা হয়ে থাকে। বিক্রেতা যেমন দুই তিন ধরনের হয়ে থাকে তেমনি ভাবে ক্রেতারাও ২-৩ ধরনের হয়ে থাকে। অর্থাৎ উৎপাদনকারী একজন বিক্রেতা পাইকারি বিক্রেতা এবং সর্বোপরি খুচরা বিক্রেতা। একটি পণ্য অথবা ফসল যারা উৎপাদন করে তাদেরকে উৎপাদনকারী বলা হয়ে থাকে।

এই উৎপাদনকারীরা সরাসরি খুচরা বিক্রেতার কাছেও তার পণ্য বিক্রয় করতে পারে অথবা সে পাইকারি বিক্রেতার কাছে উৎপন্ন বিক্রয় করে থাকে। এরপর আসা যাক যারা পাইকারি বিক্রেতা তারা উৎপাদনকারীর কাছ থেকে পণ্য ক্রয় করে খুচরা বিক্রেতার কাছে তাদের প্রায়চিত পণ্য বিক্রয় করে থাকে। এজন্য এদেরকে পাইকারি বিক্রেতা বলা হয়ে থাকে। এরপর খুচরা বিক্রেতারা পাইকারি বিক্রেতা কাছ থেকে তার দেড় পণ্য ক্রয় করে নিয়ে তাদের দোকানে সাজিয়ে রাখে এবং তারাই তৃণমূল অর্থাৎ ভোক্তার কাছে তাদের পণ্য বিক্রয় করে থাকে। উৎপাদনকারীর কাছ থেকে এই পণ্যগুলি ভোক্তার কাছে আসতে কয়েকবার হাত বদল হওয়ার কারণে একটি পণ্য উৎপাদন খরচ থেকে খুচরা মূল্য অনেক বেড়ে যায়। এবং এই বেড়ে যাওয়াটা প্রায় দুই তিন গুণ হয়ে থাকে কখনো কখনো। তাহলে এবার আসা যাক ভোক্তা সম্পর্কিত তথ্য গুলি নিয়ে। ভোক্তা হলেন একজন ব্যক্তি।

যিনি ব্যক্তিগতভাবে কোন পণ্য বা সেবা ক্রয় করে থাকেন নিজের ভোগ অথবা ব্যবহার করার জন্য। ভোক্তাও একজন ক্রেতা হতে পারে তবে সকল ক্রেতা ভোক্তা হবার প্রয়োজন নেই। তাই ভোক্তা এবং ক্রেতা একই অর্থে ব্যবহার করে ফেলি আমরা অনেক সময়। কিন্তু ভোক্তা এবং ক্রেতার মধ্যে অবশ্যই পার্থক্য রয়েছে। ভোক্তা পণ্য বার সেবা ক্রয় করে নিজের পরিবারের ব্যবহারের জন্য। কিন্তু ক্রেতা পণ্য ক্রয় করে তার পেশা হতে পারে অথবা ব্যবহার করার জন্য কখনো কখনো হতে পারে। তাই বলা যেতে পারে যে সকল ভোক্তাই ক্রেতা হতে পারে কিন্তু সকল ক্রেতা ভোক্তা হতে পারে না। এ কারণে আমাদের ভোক্তা সম্পর্কিত বিষয়টি জেনে নেওয়া অত্যন্ত জরুরি বলে আমরা মনে করি।

ভোক্তা এবং ক্রেতাকে একই অর্থে গুলিয়ে ফেলা চলবে না। ক্রেতা যেকোনো কারণে পণ্য ক্রয় করতে পারে তবে ভোক্তা শুধুমাত্র ভোগ করার জন্য পণ্য ক্রয় করে থাকে। এজন্যই তাকে ভোক্তা বলা হয়ে থাকে আমরা সকলেই কোন না কোন ভাবে অবশ্যই ভোক্তা। এবং কখনো কখনো ক্রেতা হলেও সকল সময় ক্রেতা নাও হতে পারি সে ক্ষেত্রে আমরা ভোক্তা। এবং ভোক্তা অধিকারের জন্য যে আইন রয়েছে সে আইন আমাদের দেশে পুরোপুরিভাবে বাস্তবায়ন হওয়া অত্যন্ত জরুরী।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *