প্রাকৃতিক পরিবেশে ক্ষুদ্রাতি ক্ষুদ্র জীব দেহ থেকে শুরু করে অতি বৃহদাকার ও উচ্চশ্রেণীর উদ্ভিদ ও প্রাণীদেহের সাংগঠনিক এবং কার্যপ্রণালীতে প্রচুর মিল এবং অমিল দুটিই রয়েছে। সকল জীব দেহের মধ্যে সাধারণ মিল বা সদৃশ্যটি হলো যে দেহ মাত্রই কোষ দ্বারা গঠিত হয়। অর্থাৎ প্রাণী বা উদ্ভিদ সকলেরই দেহে কোষ দ্বারা গঠিত। তাই বলা যায় যে বিগত কয়েকশো বছর ধরে বিজ্ঞানীগণ নিরলস প্রচেষ্টায় কোষের গঠন আকৃতি প্রকৃতি ও অন্যান্য বিষয়ে প্রচুর গবেষণামূলক কাজ করে গেছেন। এবং উদ্ভিদ ও প্রাণী কোষের মধ্যে এই সাদৃশ্য এবং বৈসাদৃশ্য গুলি তারা বের করতে পেরেছেন। একটি জীবদেহের সব কোষের গঠন প্রকৃতি এক রকম নয় বরং ভিন্ন ভিন্ন হয়ে থাকে।
আমরা এই পোস্টে কোষের গঠন বা উদ্ভিদ ও প্রাণী কোষের মধ্যে পার্থক্য কি সেগুলি বিস্তারিতভাবে তুলে ধরার চেষ্টা করে যাব। তাহলে আমরা প্রথমেই দেখে নিই উদ্ভিদ কোষের বর্ণনা সম্পর্কে। প্রতিটি জীব দেহ এক বা একাধিক কোষ নিয়ে গঠিত হয়। একটি আদর্শ উদ্ভিদ কোষ প্রধানত দুইটি অংশ হয়ে থাকে এই দুইটি অংশ হলো একটি কোষপ্রাচীর এবং অপরটির প্রোটোপ্লাজম। তাহলে এখন আমরা প্রথমে দেখে নেই কোষপ্রাচীর অংশটি।
কোষ প্রাচীর: উদ্ভিদ কোষের ক্ষেত্রে করছিলির বাইরে জড় পদার্থ দিয়ে তৈরি হয় বা তৈরি একটি পুরো প্রাচীর থাকে আর এটিকেই কোষ প্রাচীর বলা হয়। কোষ প্রাচীরটি সাধারণত সেলুলয়েজ দ্বারা গঠিত হয়ে থাকে। প্রাণী কোষে এ ধরনের কোষ প্রাচীর থাকে না তাই প্রাণী কোষের আবরণটি প্লাসমা পর্দার দ্বারা গঠিত হয়ে থাকে। কোষের সজীব অংশকে রক্ষা করা এবং কোষের সীমারেখা নির্দেশ করা কোষ প্রাচীরের প্রধান কাজ হয়।
এরপর আসা যাক প্রোটোপ্লাজম সম্পর্কিত সকল তথ্য কি সেগুলি দেখা।
প্রোটোপ্লাজম: প্রোটোপ্লাজম কোষের অর্ধতরল জেলির মত যে আঠালো ও দানাদার বর্ণহীন একটি সজীব অংশ থাকে সেটিকেই প্রোটোপ্লাজম বলা হয়। প্রোটোপ্লাজমের নানাবিধ বিক্রিয়ার ফলে জীবনের বৈশিষ্ট্য গুলো পরিলক্ষিত হয়। এটি বিভিন্ন জৈব ও অজৈব যৌগ সমন্বয়ে গঠিত। প্রোটোপ্লাজমে আবার দুইটি অংশ থাকে একটি সাইটোপ্লাজম ও অপরটি নিউক্লিয়াস ধারণ করে।
সাইটোপ্লাজম: কোষের প্রোটোপ্লাজমের নিউক্লিয়াসের বাইরে যে জেলির মত অংশ থাকে সেটিকে সাইটোপ্লাজম বলে।
কোষ গহ্বর: সজীব কোষের বিভিন্ন অঙ্গাণু এবং নির্জীব বস্তু সমূহ সাইটোপ্লাজমের ধাত্রে থাকে। উদ্ভিদ কোষের নির্জীব বস্তু সমূহের মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন রকমের সঞ্চিত পদার্থ বর্জ্য পদার্থ এবং রক্ষিত পদার্থ গুলি। এবার তাহলে আমরা প্রাণী টিস্যু সম্পর্কে বা প্রাণী কোষ সম্পর্কে সামান্য কিছু দেখে নিতে পারি।
প্রাণী কোষ: বহু খুশি প্রাণীদেহে অনেক কোষ একত্রে কোন বিশেষ কাজে নিয়োজিত থাকে। একই ভূমি ও কোষ থেকে উৎপন্ন হয়ে এক বা একাধিক ধরনের কিছু সংখ্যক পোষ্ট জীবদেহের কোন নির্দিষ্ট স্থানে অবস্থান করে সমষ্টিগতভাবে একটা কাজে নিয়োজিত থাকলে ওই পোস্টগুলোকে সমষ্টিগতভাবেই আমরা টিস্যবা তন্ত্র বলে থাকি। আমরা কিভাবে হাঁটাচলা করি কিভাবে খাবার খায় কিভাবে সংগ্রহ নিয়ে এগুলা দেখলে বোঝা যাবে যে এই কাজগুলো আলাদা আলাদা ভাবে হয়ে থাকে। তাই এই কাজগুলো করার জন্য আমাদের দেহের হার-মাংস মস্তিষ্ক অনেকগুলো পোস্ট দিয়ে তৈরি যাদের গঠন ও কাজ ভিন্ন প্রকৃতির হয়ে থাকে।
তাই পায়ের কাজ বা করতে পারে কানের কাজ কান পেটের কাজ পেট এইভাবে আলাদা আলাদা টিস্যু দিয়ে তৈরি আলাদা আলাদা কোষ দিয়ে তৈরি হওয়ার কারণেই এগুলো কাজ করা সম্ভব হয়ে থাকে। বহু খুশি প্রাণীতে এভাবে অনেকগুলো কই যখন কোন নির্দিষ্ট কাজ করে থাকে তখন এই কোর্সগুলোকে একত্রে অবশ্যই টিস্যু বলা হয়। এসব কোষের উদ্দেশ্য এক হলেও এদের আকার আয়োজন এবং গঠন ভিন্ন ভিন্ন হতে পারে। এবং এটা নির্ভর করে টিস্যু বা কোষের কাজের ধরনের ওপর।