অর্থনীতিতে অবিরাম উৎপাদন প্রক্রিয়া হল সিডিউল বা সমষ্টিগত উৎপাদন প্রক্রিয়া। এই প্রক্রিয়ায় অবশ্যই একটি উৎপাদক কারখানায় যে ধরনের উৎপাদন ব্যবস্থা প্রচলিত রয়েছে সেই উৎপাদন ব্যবস্থা যেভাবে চলে এই উৎপাদন ব্যবস্থা সেভাবেই চলতে থাকবে। এই উৎপাদন ব্যবস্থা অবশ্যই মোট উৎপাদন লাইনের আউটপুটের সাথে সংশ্লিষ্ট হয়ে থাকে। অর্থাৎ একটি কারখানায় যে ধরনের উৎপাদন এর লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় সে অনুযায়ী উৎপাদন ব্যবস্থা চলতে থাকে। আবার সবিরাম উৎপাদন ব্যবস্থার দিকে দেখলে দেখা যায় যে এই উৎপাদন ব্যবস্থায় প্রতিটি ফরমায়েশ অপারেশন কর্মকেন্দ্র বিভাগ এবং কারখানার জন্য বিস্তারিত সিডিউল প্রণয়ন করতে হবে সবার প্রথমে।
তাই দেখা যায় সবকিছু মেইন্টেইন করার পর সাবিরাম উৎপাদন ব্যবস্থায় যেতে হবে। তাই বলা যায় অবিরাম উৎপাদনের সময় সমন্বয় সাধন করা অত্যন্ত সহজ হয়। কারণ একবার এই প্রক্রিয়ায় ইনপুট দেওয়ার পর তা পর্যায়ক্রমে আউটপুট হিসেবে বের হতে থাকে অথবা প্রোডাক্ট গুলি উৎপাদন হতে থাকে। তাই এই প্রক্রিয়াগুলো এমন ভাবে বিন্যস্ত করা থাকে যাতে সমন্বয় সাধন তন্ত্র সহজ হয়ে আসে। তাই আমরা এই উৎপাদন ব্যবস্থাকেই সহজ বলে মনে করা হয়। সবিরাম উৎপাদন ব্যবস্থায় সবকিছুর মধ্যে সমন্বয়কার সাধন করা অত্যন্ত কঠিন কাজ হয়ে দাঁড়ায়। কারণ একটি কর্ম ক্ষেত্রে একাধিক ফরমায়েশের বিভিন্ন ধরনের কাজ সম্পাদিত হওয়ার কারণে এটি একাধিকবার নতুন করে তৈরি করা অত্যন্ত কঠিন বলে মনে করা হয়।
অবিরাম উৎপাদন প্রক্রিয়ায় সব সময় একই ধরনের কাজ হয়ে থাকে বলে এটি একবার উৎপাদন ব্যবস্থা চলে গেলে একই ধরনের উৎপাদন করে থাকে বা একই হারে উৎপাদন করে থাকে এজন্য পরবর্তীতে আর বিশেষ শ্রম দেওয়ার প্রয়োজন পড়ে না। সবিরাম উৎপাদন ব্যবস্থা প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এবং ফরমায়শে কাজ করতে হয় বলে এটি সব সময় জটিল ও কঠিন মনে হয়ে থাকে। আবার অবিরাম উৎপাদন ব্যবস্থা সিডিউল সাধারণত একইভাবে প্রস্তুত করা যায় না এই কারণে অনেক সময় সিডিউল আলাদা আলাদা হতে পারে। এবং সবি রাম উৎপাদন ব্যবস্থা বাজারজাতকরণে বিভিন্ন উৎপাদন ব্যবস্থার সিডিউল করতে হয় অর্থাৎ সিডিউল মেনেই বাজারজাতকরণ করতে হয় এজন্য এই ব্যবস্থার কাজ অনেকটা চাপের মধ্যে থাকতে হয়।
এ কারণে এই সাবিরাম উৎপাদন ব্যবস্থা অনেকের কাছে কঠিন মনে হতে পারে। সবিরাম উৎপাদন ব্যবস্থায় অবশ্যই সিডিউল মেনে কাজ করতে হয়। অবিরাম উৎপাদন ব্যবস্থায় উৎপাদনের হার বিভিন্নভাবে নিরূপণ করা হয়ে থাকে। হতে পারে সেটা মাসিক দৈনিক সাপ্তাহিক এ ধরনের যে কোন উপায়ে হার নির্ণয় করা হয়। এই উৎপাদন ব্যবস্থায় যেভাবেই হার নির্ণয় করি না কেন এখানে উৎপাদনের হাড়ের তেমন কোন তারতম্য হবে না। অপরপক্ষে সবিরাম উৎপাদন ব্যবস্থায় যে ফরমায়েশ বা অর্ডার আগে ডেলিভারি দিতে হবে সেখানে তার সময় অনুযায়ী উৎপাদন ব্যবস্থা বাড়তে পারে বা কমতে পারে। অর্থাৎ আগে বিপণন ব্যবস্থার জন্য তৈরি প্রোডাক্টগুলি আগে তৈরি করার জন্য অথবা সেটা বেশি হতে পারে কমও হতে পারে আর যেগুলি পড়ে ডেলিভারি দিতে হবে সেগুলো একরকম উৎপাদন হার হতে পারে অর্থাৎ এখানে উৎপাদনের তারতম হতে পারে বা হয়।
এই কারণে অবিরাম উৎপাদন ব্যবস্থায় উৎপাদন প্রক্রিয়ায় উৎপাদনের গতি পরিবর্তনের নমনীয়তা পরিলক্ষিত হয় না কিন্তু সবিরাম উৎপাদন ব্যবস্থায় উৎপাদন শিডিউলে উৎপাদনের হার অথবা গতি পরিবর্তিত হয়ে থাকে। এ সকল কারণে দেখা যায় যে অবিরাম উৎপাদন ব্যবস্থার শিডিউল পরিবর্তন করা অত্যন্ত কঠিন একটি কাজ কিন্তু পক্ষান্তরে অবিরাম উৎপাদন প্রক্রিয়ার শিডিউল অহরহই পরিবর্তিত হতে পারে। তাহলে আপনারা আমাদের এই বিস্তারিত লেখা থেকে অবশ্যই অবিরাম ও অবিরাম উৎপাদন ব্যবস্থার পার্থক্য গুলি ভালোভাবে দেখে নিলেন। অবিরাম ও অবিরাম উৎপাদন ব্যবস্থা অবশ্যই দুটি দুই ধরনের উৎপাদন ব্যবস্থা। এবং এই দুই উৎপাদন ব্যবস্থার মধ্যে ব্যাপক পরিবর্তন বা পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়।
