শ্বসন কাকে বলে Class 7, 9, 10 শ্বসন কত প্রকার? শ্বসনের গুরুত্ব লিখ?

জীবের জীবনধারণ অর্থাৎ চলন ক্ষয় পূরণ বৃদ্ধি জনন প্রভৃতি জৈবিক কাজগুলো সুস্থভাবে সম্পন্ন করার জন্য শক্তির প্রয়োজন হয়। এই শক্তির প্রধান উৎস হলো সূর্যালোক। সালোকসংশ্লেষণের সময় উদ্ভিদ সৌরশক্তিকে শর্করা জাতীয় খাদ্য বস্তুর মধ্যে স্থিতিশক্তি রূপে সঞ্চয় করে রাখে। খাদ্যের মধ্যে সঞ্চিত এই ধরনের শক্তি যে তার জীবন ধারণের জন্য সরাসরি ব্যবহার করতে পারেনা। শ্বসনের সময় জীব দেহে এই স্থিতিশক্তির রাসায়নিক শক্তি হিসেবে তাপ রূপে মুক্ত হয় এবং জীবের বিভিন্ন শারীরবৃত্তীয় ও কাজের জন্য প্রয়োজনীয় শক্তির যোগায়। শর্করা জাতীয় খাদ্যবস্তু ছাড়াও প্রোটিন ফ্যাট এবং বিভিন্ন জৈব এসিড শ্বসনিক বস্তুর উপর ব্যবহৃত হয়।

জীবদেহে এই জটিল যৌগগুলো প্রথমে ভেঙ্গে জারিত হয় এবং পরে জারিতে হয়ে রাসানিক শক্তিতে রূপান্তরিত হয়। সাধারণ তাপমাত্রায় জীব দেহের প্রতিটি কোষে দিবারাত্রি চব্বিশ ঘন্টাই শ্বসন চলতে থাকে। তবে উদ্ভিদের বদ্ধিষ্ণু অঞ্চলে শাসন ক্রিয়ার হার অনেক বেশি হয়ে থাকে। সজীব কোষের সাইটোপ্লাজম ও মাইটোকনডিয়াতে শ্বসন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়। এ জৈব রাসায়নিক প্রক্রিয়ায় যেতে হওয়ার যৌগিক খাদ্যদ্রব্য জারিত করে সরল দ্রব্যে পরিণত করে এবং শক্তির উৎপন্ন করে। শাসনের সময় অক্সিজেনের প্রয়োজনীয়তার ভিত্তিতে শাসনকে প্রধানত দুই ভাগে ভাগ করা হয়। সেগুলো হচ্ছে সবাত শ্বসন ও অবাধ শ্বসন।

সবাত শ্বসন: যে শাসন প্রক্রিয়ায় অক্সিজেনের প্রয়োজন হয় এবং শ্বসনিক বস্তু যেমন শর্করা প্রোটিন লিপিড বিভিন্ন ধরনের জৈব এসিড ইত্যাদি সম্পূর্ণভাবে জারিত হয়ে কার্বন ডাই-অক্সাইড পানি এবং বিপুল পরিমাণ শক্তি উৎপন্ন করে তাকে সবাত শ্বসণ বলে। সবাত শ্বসনই হল উদ্ভিদ ও প্রাণীর স্বাভাবিক শ্বসন প্রক্রিয়া। সবাত শ্বসন প্রক্রিয়ায় এখনো গ্লুকোজ সম্পূর্ণরূপে জারিত হয়ে সর্বমোট ৬ অনু কার্বন ডাই অক্সাইড ৬ অনু পানি এবং ৩৮ টি এটিপি উৎপন্ন করে।

অবাধ শ্বসন: যে শ্বসন প্রক্রিয়া অক্সিজেনের অনুপস্থিতিতে হয় তাকে অবাত শ্বসন বলে। অর্থাৎ যে শ্বসন প্রক্রিয়ায় কোনো শ্বসনিক বস্তু অক্সিজেনের সাহায্য ছাড়াই কোষের ভিতরকার এনজাইম দিয়ে আংশিক রূপে জড়িত হয়ে বিভিন্ন প্রকার জৈব যৌগ যেমন ইথাইল অ্যালকোহল ইলেকট্রিক অ্যাসিড ইত্যাদি কার্বন ডাই অক্সাইড এবং সামান্য পরিমাণ শক্তি উৎপন্ন করে তাকে অবাত শ্বসন বলে। শাসন প্রক্রিয়ায় উৎপন্ন শক্তি দিয়ে জীবের সব ধরনের ক্রিয়া বিক্রিয়া এবং কাজকর্ম পরিচালিত হয়। শাসনে নির্গত কার্বন ডাই-অক্সাইড জীবের প্রধান খাদ্য শর্করা উৎপাদনের জন্য সালোকসংশ্লেষণে ব্যবহৃত হয়। যে প্রক্রিয়া উদ্ভিদের খনিজ লবণ পানিশোষণে সাহায্য করে যা পরোক্ষভাবে উদ্ভিদের বৃদ্ধি এবং অন্যান্য জৈবিক প্রক্রিয়া চালু রাখে। কোষ বিভাজনের প্রয়োজনীয় শক্তি ও কিছু আনুষাঙ্গিক পদার্থ শ্বসন প্রক্রিয়া থেকে আসে। তাই বলা যেতে পারে এই প্রক্রিয়া জীবের দৈহিক বৃদ্ধি ও নিয়ন্ত্রণ করে।

এ প্রক্রিয়া বিভিন্ন উপক্ষার ও জৈব এসিড সৃষ্টিতে সহায়তা করার মাধ্যমে জীবনের অন্যান্য যৌগিক কাজেও সহায়তা করে। কিছু কিছু ব্যাকটেরিয়া অক্সিজেনের উপস্থিতিতে বাঁচতে পারেনা। এদের শক্তি উৎপাদনের একমাত্র উপায় হল অবাত শ্বসন। এ প্রক্রিয়ায় ইথাইল অ্যালকোহল তৈরি হয়, যা বিভিন্ন শিল্পে ব্যবহৃত হয়। ল্যাক্টিক এসি ড ফার্মেন্ট্রেশন এর মাধ্যমে এই প্রক্রিয়ায় দই পনির ইত্যাদি উৎপাদিত হয়। রুটি তৈরিতে এই প্রক্রিয়া ব্যবহৃত হয়। ইষ্টের অবাধ শাসনের ফলে অ্যালকোহল এবং কার্বন-ডাই-অক্সাইড গ্যাস তৈরি হয়। এই কার্বন ডাই অক্সাইড গ্যাসের চাপে রুটি ফুলে গিয়ে ভিতরে ফাঁপা হয়। তাই বলা যায় শাসন প্রক্রিয়াটি জীবজগতের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রক্রিয়া। এই প্রক্রিয়াটি ঠিকভাবে না চললে জীবজগৎ অবশ্যই হুমকির মুখে পড়বে।

আজকে আমাদের দেখাতে হবে শাসন কাকে বলে?
শ্বসন : শ্বসন একটি বিপাকীয় ক্রিয়া, এই ক্রিয়া চলাকালে প্রতিটি জীব পরিবেশ থেকে অক্সিজেন গ্রহণ করে ও কার্বন-ডাই-অক্সাইড ত্যাগ করে। শারীরবৃত্তি ও শ্বসন হলো বাতাস হতে জীবের অক্সিজেনের সরবরাহের এবং বিপরীত প্রক্রিয়ায় কার্বন-ডাই-অক্সাইডের নির্গমন প্রক্রিয়া।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *