নবায়নযোগ্য শক্তি কাকে বলে

আমাদের দৈনন্দিন জীবনে আমরা বিভিন্ন কাজের সাথে জড়িত হয়ে থাকি। এই কাজগুলো করতে আমাদের অবশ্যই শক্তি বা ক্ষমতার প্রয়োজন হয়। এই শক্তি দুই ধরনের হতে পারে। একটি নবায়নযোগ্য শক্তি আরেকটি অনবায়নযোগ্য শক্তি। নবায়নযোগ্য শক্তি এবং অনবায়নযোগ্য শক্তি সম্পর্কিত তথ্যগুলি না জানলে আমরা শক্তির সংকট নিরেশনে আমাদের কি কি করতে হতে পারে সেটি আমরা বুঝতে পারবো না। তাই আমাদের উচিত হবে আমাদের নবায়নযোগ্য বা অনবায়নযোগ্য শক্তি সম্পর্কিত জ্ঞানগুলি অর্জন করা। তাই এ পর্যায়ে আজকে আমাদের দেখাতে হবে নবায়নযোগ্য শক্তি কি? আমরা জানি বিভিন্ন শক্তিকে এক রূপ থেকে আরেক রূপে রূপান্তর করতে পারি। আমরা এটাও জানি যে শক্তির সৃষ্টিও করতে পারেনা বা আমরা সৃষ্টির ধ্বংস করতে পারি না। অর্থাৎ পৃথিবীতে যে পরিমাণ শক্তি ছিল সেই পরিমাণ শক্তি শেষ পর্যন্ত একই থাকে শুধু আমরা শক্তির এক রূপ থেকে আরেক রূপে রূপান্তর করতে পারি মাত্র।

রূপান্তরের পূর্বে এবং পরে মোট শক্তির একই থাকে শক্তির কোন অপচয় এখানে হয় না। তাই এ কথা আমরা বলতে পারি যে প্রকৃতপক্ষে আমরা কোন নতুন শক্তি সৃষ্টি করতে পারে না এমনকি শক্তি ধ্বংস করতে। অর্থাৎ বিশ্বের সামগ্রিক শক্তির কোন তারতম। এই বিশ্ব সৃষ্টির প্রথম মুহূর্তে যে পরিমাণ শক্তি ছিল আজও সেই একই পরিমাণ শক্তি বর্তমান রয়েছে। আর এটাকেই বলা হয় শক্তির নিত্যতা বা সংরক্ষণশীলতা। কিছু কিছু শক্তি আছে সেই শক্তিগুলো আমরা নবায়নযোগ্য করে ফেলতে পারি না অর্থাৎ একই শক্তি বারবার আমরা ব্যবহার করতে পারি একেই নবায়নযোগ্য শক্তি বলা হয়ে থাকে। নবায়নযোগ্য শক্তির মধ্যে আমরা দেখতে পাই বায়োগ্যাস সৌরশক্তি পানির জোয়ার ভাটা এবং সমুদ্র প্রবাহ হতেযোগ্য শক্তির উৎপন্ন বা উপাদান হিসেবে ধারণা লাভ করতে পারি।

গরু ছাগল হাঁস মুরগি শুকর ইত্যাদির মল মিশ্রিত বিভিন্ন টাক টাটকা শাকসবজি বা উদ্ভিদ পচিয়ে আমরা বায়োগ্যাস তৈরি করতে পারি। এই বায়োগ্যাস থেকে আমরা রান্না করার বা তাপশক্তি উৎপাদন করি সেই তাপ শক্তি আবার আলোক শক্তিতে রূপান্তরিত করা যায়। এভাবে এই নবায়নযোগ্য শক্তিটি আমরা দুই রূপের ব্যবহার করতে পারি পচা গলা মল থেকে আমরা গ্যাস তৈরি করে গ্যাস রান্নার কাজে অর্থাৎ তাপ শক্তি এবং আলোক শক্তি পেয়ে থাকে আবার সেই অবশিষ্ট বর্জ্যগুলা দিয়ে উদ্ভিদ বিভিন্ন সার তৈরি হয়। তাই বায়োগ্যাস একটি নবায়নযোগ্য শক্তি হিসেবেই ব্যবহৃত হয়। এরপর বালা যেতে পারে বায়ু প্রবাহ। অর্থাৎ সভ্যতার বিকাশ এবং বিজ্ঞানের ক্রমবিকাশের ফলে এই বায়ুপ্রবাহকে মানুষ বর্তমানে বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করে চলেছে।

আদিম মানুষেরা চার-পাঁচটা পাখার সাহায্যে চক্র বানিয়ে বাতাসের সাহায্যে চক্র ঘোরাত। চাকরির ঘর্ষণ কাজে লাগিয়ে মানুষ কুয়া থেকে পানি তোলা কৃষি সেচ জব অথবা গম ভাঙ্গানো আখ মারাই ধানকাটা খরকাটা ইত্যাদি কাজে ব্যবহার করত এক সময়ে। পরে মানুষ বাতাসকে কাজে লাগিয়ে কাঠের আইয়ের মত কঠিন কাজও সম্পন্ন করেছে। বর্তমানে আমরা বা মানুষরা উইন্ডমিল ব্যবহার করে বা উইন্ডমিল চালিয়ে বায়ুর দেশে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হচ্ছে প্রচুর পরিমাণে। নদীর জলের জোয়ার ভাটা কে কাজে লাগিয়ে মানুষ বিদ্যুৎ উৎপাদন করে চলেছে। অর্থাৎ নদী বাসমুদ্রের জলের জোয়ার ভাটা শক্তিকে কাজে লাগিয়ে বিভিন্ন যন্ত্র-চালনার ব্যাপারটি অনেকদিন আগেই উদ্ভাবিত হয়েছে। কিন্তু জোয়ার ভাটা শক্তিকে তড়িৎ শক্তিতে রূপান্তরের ব্যাপারটি খুব বেশি দিনের নয়। বিভিন্ন দেশের জোয়ার ভাটার শক্তি কাজে লাগিয়ে তড়িৎ উৎপাদন নেক চেষ্টা চলছে। সূর্য থেকে পাওয়া যে শক্তি সেটাই সৌরশক্তি।

এই সৌরশক্তিকে কাজে লাগিয়ে পৃথিবীতে বিভিন্ন ধরনের শক্তি উৎপাদন হচ্ছে। অর্থাৎ এ কথা আমরা বলতে পারি যে সৌরশক্তি হচ্ছে যাবতীয় শক্তির উৎস। তাই আমরা এখন দেখে নিতে পারি নবায়নযোগ্য শক্তি কি এবং কাকে বলে।

নবায়নযোগ্য শক্তি: নবায়নযোগ্য নাম থেকে আমরা সহজেই বুঝতে পারবো যে এর অর্থ কি বোঝায়। যা কিছু নবায়ন করা যায় তাই নবায়নযোগ্য। এক্ষেত্রে কোন জিনিস ব্যবহার করে শক্তি উৎপাদন করে পুনরায় ওই জিনিসটি দ্বারা আবার শক্তি উৎপাদন করা যায়। অর্থাৎ যে শক্তির উৎস কে বারবার ব্যবহার করা যায় তাই হল নবায়নযোগ্য শক্তি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *