পরাগায়ন কাকে বলে

পরাগায়ন মানব জীবন শুধু নয় প্রাণী কুলের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রক্রিয়া। কারণ উদ্ভিদের এই পড়ায় গান মানব সভ্যতা না প্রাণীকুলকে বাঁচিয়ে রাখার একটি প্রক্রিয়া বলে মনে করা হয়। পরাগায়নের মাধ্যমে উদ্ভিদের বীজ উৎপন্ন হয় এবং সেই বীজ বা ফল বা ফুল খেয়ে সমগ্র প্রাণীকুল তারা জীবন ধারণ করে থাকে এই কারণে বলা হয় প্রাণীকুলের জন্য পড়াবেন একটি বিশেষ প্রক্রিয়া। পরাগায়নকে পরাগ সংযোগও বলা হয়। পরাগায়ন ফুল এবং বীজ উৎপাদন প্রক্রিয়ার পূর্বশর্ত বলে মনে করা হয়। ফুলের পরাগধানী থেকে ভর আগরানোর একই ফুলে অথবা একই জাতের অন্য ফুলের গর্ভমুন্ডের স্থানান্তরিত হওয়াকেই পরাগায়ন বলে। পরাগায়ন দুই ধরনের হতে পারে একটি স্বপরাগায়ন এবং অপরটি পর – পরাগায়ন।

স্ব-পরাগায়ন: একই ফুলে বা একই গাছের ভিন্ন দুটি ফুলের মধ্যে যখন পরাগায়ন ঘটে তখন তাকে স্ব-পরাগান বলে। সরিষা ধুতুরা ইত্যাদি উদ্ভিদের স্ব-পরাগায়ন ঘটে থাকে। স্ব- পরাগায়নের ফলে পরাগরেণ্যর অপচয় কম হয়, পরাগায়নের জন্য বাহুকের ওপর নির্ভর করতে হয় না এবং পরাগায়ন নিশ্চিত হয়। এর ফলে নতুন যে উদ্ভিদ উৎপন্ন হয় তাতে বৈশিষ্ট্যেরও কোন পরিবর্তন আসে না এবং কোন একটি প্রজাতির চরিত্রগত বিশুদ্ধতা বজায় থাকে। তবে এতে জিনগত বৈচিত্র কম থাকে। এই বীজের থেকে জন্ম নেওয়া নতুন গাছের অভিযোজন ক্ষমতা কমে যায় এবং অচিরেই প্রজাতির বিলুপ্ত ঘটতে পারে।

পর-পরাগায়ন: একই প্রজাতির দুইটি ভিন্ন উদ্ভিদের ফুলের মধ্যে যখন পড়ার সংযোগ ঘটে তখন তাকে পর – পরাগায়ন বলে। শিমুল, পেঁপে ইত্যাদি গাছের ফুলে পর-পরাগায়ন হতে দেখা যায়। পর – পরাগায়নের ফলে নতুন চরিত্রের সৃষ্টি হয় বীজের অংকুরোদগমের হার বৃদ্ধি পায় বীজ অধিক জীবনী শক্তি সম্পন্ন হয় এবং নতুন প্রজাতির সৃষ্টি হয়। দুইটি ভিন্ন গুণসম্পন্ন গাছের মধ্যে পরাগায়ন ঘটে তাই এর ফলে যে বীজ উৎপন্ন হয় তা নতুন কোন সম্পন্ন হয় এবং ২০ থেকে যে গাছ জন্মায় তাও নতুন গুণ সম্পন্ন হয়। এই কারণে এসব গাছে নতুন বৈচিত্র্যের সৃষ্টি হয়। তবে এটি বাহক নির্ভর প্রক্রিয়া হয় পরাজয়নের নিশ্চয়তা থাকে না এতে প্রচুর পরাগেরানোর অপচয় ঘটে। ফলে প্রজাতির বিশুদ্ধতা নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনাও থাকে এই মাধ্যমে। পড়ার স্থানান্তরের কাজটি অধিকাংশ ক্ষেত্রে কোনো না কোনো মাধ্যমের দ্বারা হয়ে থাকে। যে মাধ্যমে পড়াক বহন করে গর্ভ মন্ড পর্যন্ত নিয়ে যায় তাকে পরাগায়নের মাধ্যম বলা হয়ে থাকে।

এই পরানের মাধ্যম বিভিন্ন কীটপতঙ্গ বায়ুর পানি দাদুর শামুক-পাকে এমনকি এ ধরনের মানুষও হতে পারে এ ধরনের পরাগায়নের বাহক। পরাগায়নের উদ্দেশ্যে বা পরাগ্রনর সংগ্রহের উদ্দেশ্যে বিভিন্ন ফুলে কীটপতঙ্গরা মধুর আশায় গিয়ে থাকে ফলে তাদের পায়ে বিভিন্ন লেগে যায় এবং সেই কীটপতঙ্গ আরেকটি ফুলে যখন বসে তখন আরেকটি ফুলের গভমন্ডে গিয়ে পতিত হয় ফলে পরাগায়ন ঘটে থাকে। টাই পরা গান বিভিন্ন পশুপাখি কীটপতঙ্গ সকলের জন্যই একটি আনন্দের বিষয়। এই প্রক্রিয়াটি সমগ্র প্রাণীজগতের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। পরাগানের মাধ্যমগুলো থেকে আমরা বিভিন্ন ফল-ফল তো পেয়ে থাকি বা নতুন উদ্ভিক্ষ পেয়ে থাকে এছাড়াও আমরা পরাগায়নের প্রক্রিয়ার সময় মধু পেয়ে থাকে। মধু আমাদের জন্য উপকারী একটি উপকরণ। বায়ুর মাধ্যমেও অনেক পরাগায়েন ঘটে থাকে। কলমি লতা এবং কাশি জাতীয় উদ্ভিদের পরাগান বায়ু পরাগের মাধ্যমে হয়ে থাকে। ধান গম জাতীয় বিভিন্ন শস্যের পরাজয়ের এই বায়ুর মাধ্যমে হয়ে থাকে।

আমরা পরাগায়নের বিভিন্ন দিক সম্পর্কে এতক্ষণ আলোচনা করলাম। তাই আমরা এখন দেখতে পাই যে পরাগায়ন অবশ্যই একটি ভালো প্রক্রিয়া। তাহলে আমরা এখন দেখতে পাই পরাগায়নের সংজ্ঞাটি কি হতে পারে।

পরাগায়ন: যে পদ্ধতিতে ফুলের পরাগধানী থেকে পরাগরেণু সেই ফুল বা একই প্রজাতির অন্য কোনো উদ্ভিদের ফুলের গর্ভমুন্ডে স্থানান্তরিত হয় তাকে পরাগায়ন বলে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *