সমযোজী বন্ধন কাকে বলে

রাসায়নিক পদার্থের অনুতে পরমাণু সমূহ এলোমেলো বা বিক্ষিপ্তভাবে থাকে না। পরমাণু সমূহ সুবিন্যাস্ত ভাবে থেকে থাকে। অর্থাৎ কোন আকর্ষণ শক্তি দ্বারা এই পরমাণুগুলো একে অপরের সাথে বন্ধন ভুক্ত হয়ে থাকে। যে আকর্ষণ শক্তির মাধ্যমে অণুতে দুটি পরমাণু পরস্পর যুক্ত থাকে তাকে আমরা রাসায়নিক বন্ধন বলে থাকি। এই রাসানিক বন্ধন বিভিন্ন প্রকারের হয়। যেমন আয়নিক বন্ধন, সমযোজী বন্ধন, কিংবা ধাতব বন্ধন। আজ আমাদের দেখাতে হবে সমযোজী বন্ধন কাকে বলে। আমরা জানি সকল পদার্থই অনু বা পরমাণু দিয়েই গঠিত হয়ে থাকে। এপর্যন্ত পৃথিবীতে মোট ১১৮টি মৌলের আবিষ্কৃত হয়েছে। এই ১১৮ টি মৌলভি ভিন্ন ভিন্ন পরমাণু রয়েছে। এদের মধ্য থেকে এক বা একাধিক মৌলের পরমাণু দিয়েই সকল পদার্থের অনুগঠিত হয়।

আমরা একথা জানি যে একটি ধাতব পরমানু ও একটি অধাতব পরমানুর রাসায়নিক সংযোগের সময় ধাতু তার সর্বশেষ শক্তিস্তরের ইলেকট্রন অধাতব পরমাণুর সর্বশেষ শক্ত স্তরে স্থানান্তর করে ক্যাটায়ন ও অ্যানায়ন তৈরির মাধ্যমে আয়নিক বন্ধনের সৃষ্টি করে। কিন্তু আমরা যদি দুইটি দাঁত অধাতব পরমাণুর মধ্যে রাসায়নিক সংযোগ করাতে চাই তাহলে সেটি ঘটবে অন্যভাবে। রাধা তোর বেলায় পরমাণুর শেষ শক্ত স্তরের ইলেকট্রন ত্যাগ বা গ্রহণ করা সহজ নয় বলে তাদের ভেতর বন্ধন তৈরি করা কঠিন মনে হতে পারে। কিন্তু বাস্তবে দুইটি অধাতব পরমাণুর বন্ধন গঠন করে।

উদাহরণস্বরূপ বলা যেতে পারে দুইটি ক্লোরিন অর্থাৎ অধাতু পরমানকে যখন কাছাকাছি রাখা হয় তখন তাদের মধ্যে এক ধরনের রাসায়নিক বন্ধন গঠিত হয়ে ক্লোরিন অনুতে পরিণত হয়। ক্লোরিন এর সর্বশেষ শক্ত স্তরে সাতটি ইলেকট্রন থাকায় ক্লোরিন পরমাণুর সর্বশেষ শক্তিশ্তরের ইলেকট্রন প্রদান করতে চাইবে না বরং গ্রহণের প্রবণতা দেখাবে।

কিন্তু দাতা পরমাণু না থাকায় গ্রহণ প্রক্রিয়াও ঘটবে না। তাই দুটি ক্লোরিন পরমাণু কাছাকাছি এলে প্রত্যেকটি পরমাণুর সর্বশেষ শক্তিশ্থা থেকে একটি করে ইলেকট্রন এসে জোড়াবদ্ধ হয় এবং ওই ইলেকট্রন জোড়া উভয় পরমাণুর নিউক্লিয়াসের মাঝে মাঝে অবস্থান করে। একে ইলেকট্রনের ভাগাভাগি বা ইলেকট্রনের শেয়ারিং বলে। এর ফলে উভয় পরমাণু তাদের সর্বশেষ শক্তিশ্বর রে আটটি ইলেকট্রন লাভ করে এবং নিষ্ক্রিয় গ্যাস এর ইলেকট্রন বিন্যাস লাভ করে। ফলস্বরূপ দুটি ক্লোরিন পরমাণুর নিউক্লিয়াস গুলো একে অপরের কাছ থেকে দূরে সরে যেতে পারেনা অর্থাৎ এরা এক ধরনের বন্ধনে আবদ্ধ হয়।

এ ধরনের বন্ধন কে সমযোজী বন্ধন বলে থাকি। অর্থাৎ দুটি অধাতব পরমাণুর রাসায়নিক সংযোগের সময় অধাতব পরমান্নদাতা তাদের সর্বশেষ শক্তিস্থানের একটি ইলেকট্রন কে সরবরাহ করে একজোড়া ইলেকট্রন তৈরি করে। এরপর এই এক জোড়া ইলেকট্রন উভয়ে পরমাণু শেয়ারের মাধ্যমে যে বন্ধন গঠিত হয় তাকে সমযোজী বন্ধন বলা যেতে পারে। রাসায়নিক বন্ধন এর ফলে যোজ্যতা ইলেকট্রনের ধারণা আমরা বুঝিয়ে দিতে পারব।

মৌলের প্রতীক যৌগমূলকের সংকেত এগুলোর যোজনী ব্যবহার করেই যৌগের সংকেত লেখা যায়। আবার নিষ্ক্রিয় গ্যাসের স্থিতিশীলতাও ব্যাখ্যা করা যায় যদি রাসায়নিক বন্ধন বা সমযোজী বন্ধন সম্পর্কে একজন শিক্ষার্থী ভালোভাবে শিক্ষা নেয়। আমাদের সমযোজী বন্ধন জানতে হলে অষ্টক ও দুইয়ের নিয়মের ধারণাও রাখতে হয়। এছাড়াও আয়ন কিভাবে এবং কেন সৃষ্টি হয় আহ্নিকবন্ধন গঠনের বিভিন্ন প্রক্রিয়া কি হতে পারে বা সমযোজী বন্ধন গঠনের প্রক্রিয়া গুলি আমাদের বর্ণনা করা হল। তাই এখন আমাদের দেখাতে হবে সমযোজী বন্ধন সম্পর্কে বিভিন্ন ধারণা এবং এর সংজ্ঞা।আমাদের আজকে জানতে হবে যে সমযোজী বন্ধন কাকে বলে? আমরা রাসায়নিক বন্ধন এর বিভিন্ন পদ্ধতি বিভিন্ন প্রক্রিয়া বিক্রিয়া এগুলো দেখে নিলাম কিন্তু সমযোজী বন্ধন কাকে বলে এটি এখন আমরা দেখতে পারি।

সমযোজী বন্ধন: আমরা তাহলে সমযোজী বন্ধন হিসেবে বলতে পারি যে দুটি অধাতব পরমাণু রাসায়নিক সংযোগের সময় অধাতব পরমাণু দেওয়ায় তাদের সর্বশেষ শক্তি স্তরের একটি ইলেকট্রন কে সরবরাহ করে একজোড়া ইলেকট্রন তৈরি করে। এরপর এই একজোড়া ইলেকট্রন উভয় পরমাণু শেয়ারের মাধ্যমে যে বন্ধন গঠিত হয় তাকেই সমযোজী বন্ধন বলে। প্রতিটি সমযোজী বন্ধনে দুইটি ইলেকট্রন অংশগ্রহণ করে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *