বাফার দ্রবণ কাকে বলে

বাফার দ্রবণ রসায়নে একটি গুরুত্বপূর্ণ দ্রবণ। রসায়ন বিজ্ঞানে বিভিন্ন দ্রবণ নিয়ে আমাদের বিক্রিয়া করতে হয়। এই বিক্রিয়াগুলির মধ্যে বিভিন্ন ধরনের দ্রবণে তৈরি করে বিক্রিয়ায় অংশ নেওয়া প্রয়োজন হয়। তবে এই বিভিন্ন প্রকার দ্রবণ এর মধ্যে আজকে আমাদের দেখাতে হবে বাফার দ্রবণ কাকে বলে। এবং এই বাফার দ্রবণ কি সেই সম্পর্কে আমাদের জানতে হবে। যে দ্রবণে এসিড ও ক্ষার যুক্ত করার পরেও দ্রবণের পিএইচ মানের কোন পরিবর্তন ঘটে না এই ধরনের দ্রবণকেই বাফার দ্রবণ বলা হয়। বেবাফা দ্রবণে দ্রবীভূত এসিড ও ক্ষারক প্রশমিত হয়। পিএইচ হল কোন জলীয় দ্রবণের প্রকৃতি অম্লীয় নাকি ক্ষারীয় নাকি নিরপেক্ষ প্রকৃতির ইত্যাদি জানার জন্য আমাদের পিএইচ একক ব্যবহার করা হয়। কোন দ্রবণের ph হল ওই দ্রবণে উপস্থিত হাইড্রোজেন আয়নের ঘনমাত্রার ঋণাত্মক লগারিদম।

তাই হাইড্রোজেন আয়ন দ্বারা হাইড্রোজেন আয়নের মোলার ঘনমাত্রা অর্থাৎ ১ লিটার দ্রবণে কত হাইড্রোজেন আয়ন রয়েছে সেটা বোঝানো হয়ে থাকে। যদি বিশুদ্ধ পানিতে এসিড যোগ করা হয় এবং এসিড যোগের কারণে যদি হাইড্রোজেন আয়নের সংখ্যা ১০ গুন বেড়ে গিয়ে প্রতিলিটারে ট্রেন টু দি পাওয়ার মাইনাস সিক্স মোল হয় তাহলে দ্রবণের pH মান কমে যাবে। আর পিএইচ এর পরিমাপ করার জন্য পিএইচ স্কেল ব্যবহার করা হয়।
pH স্কেল: যদিও অংকের হিসাবে পিএইচ এর মান ঋণাত্মক থেকে শুরু করে যে কোন ধনাত্মক সংখ্যা হওয়া সম্ভব কিন্তু বাস্তব জীবনে ব্যবহারিক ক্ষেত্রে পি এইচ এর মান শূন্য থেকে ১৪ পর্যন্তই বিবেচনা করা হয়। অর্থাৎ নিরপেক্ষ কোন দ্রবণের পিএইচ হল এর মান সেভেন আমরা দেখেছি যে যেকোনো অ্যাসিড দ্রবনের পিএইচ এর মান সাথে চেয়ে কম অপরদিকে যে কোন ক্ষারের দ্রবণের ph এর মান 7 এর চেয়ে বেশি হয়।

তাই বাফার দ্রবণে pH মান পরিবর্তন হয় না। বাফার দ্রবণসমূহের নির্দিষ্ট pH সীমা রয়েছে যা pH পরিবর্তনের আগে কি পরিমান এসিড/ ক্ষারকে নিরপেক্ষ করা যায় তা নির্দেশ করে। বাফার দ্রবণ দুই প্রকার। অম্লীয় বাফার ও ক্ষারীয় বাফার দ্রবণ। বেবাফা দ্রবণ প্রকৃতিতে আগে থেকেই ছিল তবে ১৯০৮ সালে লরেন্স জোসেফ হেন্ডার্স ফান একটি সমীকরণ বের করেন যেখানে কার্বনিক এসিডকে প্রাকৃতিক বাফার হিসেবে প্রমাণ করে। কিন্তু আবার পরবর্তীতে লগারিদম এর ব্যবহারের সময় সমীকরণটির সংশোধন করেন কাল এলবার্ট হেসেলবাগ। এই কারণে এই সূত্রটি এসিড ও ক্ষারীয় দ্রবণের ক্ষেত্রে দ্রবণের পিএইচ মান নির্ণয়ে সক্ষম হয়। এছাড়াও কোন বাফার দ্রবণের ph মান কেমন হবে সেটিও এ ধরনের সমীকরণ থেকে জানা যায়।

এই সমীকরণটিকে এন্ডারসন হেফেলবাগ সমীকরণ হিসেবে অভিহিত করেন। এবং এই সূত্রটি কে প্রধানসূত্র হিসেবে ধরে প্রতিনিয়ত নতুন নতুন বাফার দ্রবণ প্রস্তুত করা হয়ে থাকে। এছাড়া আমাদের বাফার দ্রবণ নির্ণয় করতে এই পিএইচ স্কেলের পরিমাপন পদ্ধতি হিসেবে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। দ্রবণে হাইড্রোজেন আয়নের ঘনমাত্রা থেকে কিভাবে দেশের মান হিসাব করতে হয় সেটা আমাদের তবে আগে জানতে হবে। ph পরীক্ষার মাধ্যমে কোন দ্রবণের ph কিভাবে পরিমাপ করা হয় সেটা আমাদের জানতে হবে। ph এর মান পরিমাপের জন্য ইউনিভার্সাল নির্দেশক বা পিএইচ পেপার পিএস মিটার ইত্যাদি ব্যবহার করা হয়ে থাকে। আমরা বিভিন্ন এসিড ক্ষার নির্দেশকের মিশ্রণ দিয়ে ইউনিভার্সাল নির্দেশক হিসেবে ব্যবহার করা হয়। অর্থাৎ ভিন্ন ভিন্ন পিএইচ মানের দ্রবণে ইউনিভার্সাল নির্দেশক ভিন্ন ভিন্ন বর্ণ প্রদান করে।

তাহলে আমরা আমাদের বর্তমান এই পোস্টে পড়ে আপনারা অবশ্যই বাফার দ্রবণ সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা পেলেন। এবং অবশ্যই আপনারা বাফার দ্রবণ কি এবং কি ভাবে এটি ব্যবহার করা হয় এই দ্রবণ রসায়নবিজ্ঞানে কতটুকু প্রয়োজন ইত্যাদি সকল কিছু সম্পর্কে আপনারা এতক্ষণ অবশ্যই অবগত হতে পারলেন। তাই আপনাদের অবশ্যই ব্রাফাত যবন সম্পর্কে যত সংশয় ছিল অবশ্যই আপনারা এখান থেকে বুঝতে পারলেন বলে আশা রাখি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *