কোষ বিভাজন কাকে বলে

জীবজগৎ এর মধ্যে রয়েছে উদ্ভিদ এবং প্রাণী। এছাড়াও কিছু এককোষী অথবা অকোষীয় প্রাণী ও উদ্ভিদ। তাই জীবজগতের মধ্যে আমরা দেখতে পাই যে একটি সরিষা দানার মত বা তারও ছোট থেকে কোন একটি বীজ থেকে উৎপাদিত বটবৃক্ষের চারা একসময় বিরাটাকায় বটবৃক্ষে রূপান্তরিত হয়। আবার মানুষের কথাই ধরা যাক, ছোট্ট একটা শিশু একদিন বৃহদাকার মানুষের পরিণত হয়। এখানে অবশ্য দৈহিক দিক দিয়ে বলা হচ্ছে। তাহলে কেমন ভাবে হয়। আমরা জানি একটি ইটের পর আরেকটি ইট সাজিয়ে কংক্রিটের বিশাল আকার অট্টালিকা তৈরি হয়, তেমনিভাবে আমাদের দেহের বা উদ্ভিদ দেহের বা যে কোন উদ্ভিদ বা প্রাণীদেহের কুয়েত দ্বারা গঠিত। এই পোস্টগুলি বৃদ্ধি প্রাপ্ত হয়ে অর্থাৎ একটি কোষ থেকে দুইটি দুইটি কোষ থেকে চারটি চারটি কোষ থেকে আটটি এভাবে বিভাজন হয়ে বেশি কোর্স হয়ে এই ছোট্ট চারা থেকে বিশালাকার বৃক্ষ এবং ছোট্ট একটা ক্ষুদ্র প্রাণী থেকে বৃহদাকার প্রাণীতে পরিণত হয়।

তাই ক্ষুদ্র থেকে বৃহ ৎ হতে হলে বা হওয়ার জন্য কোষকে বিভাজিত হতে হয়। কোষগুলি একটি থেকে দুইটি অথবা দুইটি থেকে চারটি এ ধরনের কোষের সংখ্যা বৃদ্ধি হতে হয় তবেই গা দেহের গঠন আস্তে আস্তে বৃহৎ হতে থাকে। আজকে আমাদের এ পর্যায়ে দেখাতে হবে কোষ বিভাজন কাকে বলে? প্রাকৃতিক পরিবেশে ক্ষুদ্রাতি ক্ষুদ্র জীবদেহ থেকেই অতি বৃহদাকার যেমন সূর্যশ্রেণীর উদ্ভিদ এবং প্রাণীদের গাঠনিক কার্যপ্রণালীতে প্রচুর মিল এবং দেখা যায়। অর্থাৎ একটি প্রাণী কোষ এবং একটি উদ্ভিদ কোষ কখনো কখনো একই রকম ভাবে বিভাজিত হয় আবার অনেক সময় দেখা যায় দুইটি কোষ বিভাজনের পদ্ধতি আলাদা। তাই আমরা বলতে পারি মোটামুটি সব ধরনের কোষে যেসব ক্ষুদ্র অঙ্গানু পরিলক্ষিত হয় সেগুলোকে বর্ণনার জন্য একটি কোষের আওতায় এনে উপস্থাপন করা হয় বা কোষ বিভাজন দেখানো হয়। প্রথম দিকে যৌগিক অণুবীক্ষণ যন্ত্রের সাহায্যে বিজ্ঞানীরা কোষের যে ধারণা পেয়েছিলেন তা ইলেকট্রন অণুবীক্ষণ যন্ত্র আবিষ্কারের পর আরো সুস্পষ্ট ও

বিস্তারিতভাবে দেখতে পায় তারা। বিজ্ঞানীরা এই অণুবীক্ষণ যন্ত্রের সাহায্যে দেখতে পাই প্রতিটি জীবদেহে এক বা একাধিক কোষ দিয়ে গঠিত। একটি আদর্শ উদ্ভিদ কোষ প্রধানত দুই ভাগে গঠিত। কোষ প্রাচীর এবং প্রোটোপ্লাজম। এছাড়াও কোষের মধ্যে থাকে বা রয়েছে এ ধরনের বস্তুগুলি হল প্রোটোপ্লাজম সাইটোপ্লাজম কোষ গহবর মাইটোকন্ডিয়া গলজি বডি সেন্ট্রিওল নিউক্লিয়াস ইত্যাদি। সকল জীবকোষ যেহেতু একই রকম নয় সে কারণে এদের মধ্যে গঠনগত পার্থক্য যেমন আছে তেমনি আছে আকৃতি এবং কাজের পার্থক্য। নিউক্লিয়াসের গঠনের ভিত্তিতে কোষ দুই ধরনের একটি আদি কোষ এবং অপরটি প্রকৃত কোষ। আদিকোষ হল কোন সুগঠিত নিউক্লিয়াস থাকে না। এজন্য এদের আদি নিউক্লিয়াসযুক্ত বলা হয়। এসব কোষের নিউক্লিয়াস কোন পর্দা দিয়ে আবৃত থাকে না তাই নিউক্লিও বস্তু সাইটোপ্লাজমে ছড়ানো থাকে।

এরপর বলা যায় প্রকৃত কোষ বা সুকেন্দ্রিক কোষ: এসব কোষের নিউক্লিয়াস সুগঠিত অর্থাৎ নিউক্লিয়ার ঝিলি দিয়ে নিউক্লিয় বস্তু পরিবেষ্টিত ও সুসংগঠিত। এসব কষে রাইবোজোম সহ সকল অঙ্গানু উপস্থিত থাকে। ক্রোমোজোমে ডি এন এ প্রোটিন হিস্টোন এবং অন্যান্য উপাদান থাকে।

কোষ সম্পর্কিত বিভিন্ন তথ্য দেখার পর এখন আমরা দেখতে পারি কোষ বিভাজন কাকে বলে: কোষ বিভাজন বলতে বলা যায় যে, কোষ বিভাজন একটি মৌলিক ও অত্যাবশ্যকীয় প্রক্রিয়া। যার দ্বারা জীবের দৈহিক বৃদ্ধি ও বংশবৃদ্ধি ঘটে থাকে। যে প্রক্রিয়া জীব কোষের বিভক্তির মাধ্যমে একটি থেকে দুটি বা চারটি কোষের সৃষ্টি হয় তাকেই কোষ বিভাজন বলা হয়ে থাকে। তাই আমরা বলতে পারি আমাদের এই মানবদেহ একটিমাত্র কোষ থেকেই জীবন শুরু হয়। তাই কোষ বৃদ্ধি জীবের জন্য একটি অতীব গুরুত্বপূর্ণ এবং জরুরী বিষয়। তাই জীবজগতের ক্রমবর্ধমান এগিয়ে চলার পথের সাথী কোষবিভাজন। কোষ বিভাজন না হলে পৃথিবী থমকে দাঁড়াবে বিলুপ্তির পথে চলে যাবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *