দুটি রশ্মি পরস্পরের সাথে মিলিত হলে মিলিত বিন্দুতে উৎপন্ন জ্যামিতিক আকার কে কোণ বলা হয়। জ্যামিতিতে বিভিন্ন ধরনের কোণ হয়ে থাকে। যেমন: সূক্ষ্মকোণ সমকোণ স্থূলকোণ সরলকোণ প্রবৃদ্ধকোণ সন্নিহিত কোণ, একান্তর কোণ, অনুরূপ কোণ ইত্যাদি। ত্রিভুজের তিন কোণের সমষ্টি ১৮০° বা দুই সমকোণ হয়। চতুর্ভুজের চার কোণের সমষ্টি ৩৬০ ডিগ্রী বা চার সমকোণ হয়। আবার ত্রিভুজের যেকোনো এক বাহুকে বর্ধিত করলে যে বহিঃস্থ কোণ উৎপন্ন হয় তা অন্তস্থ বিপরীত কোণ দ্বয়ের সমষ্টির সমান হয়। কোন ত্রিভুজের প্রত্যেক বাহুকে উভয় দিকে বর্ধিত করলে যে ছয়টি বহিঃস্থ কোণ উৎপন্ন হয় তাদের সমষ্টি ৮ সমকোণ হবে।
সমকোণী ত্রিভুজের অতিভুজ ও অন্য যে কোন বাহু অপেক্ষা বৃহত্তর হয়। কোন ত্রিভুজের শীর্ষবিন্দু থেকে ভূমির মধ্যবিন্দুর সংযোজক সরলরেখাকে বলে মধ্যমা। ত্রিভুজের তিনটি মধ্যমা হয়। মধ্যমাত্রয় সমবিন্দু। মধ্যমাত্রয় পরস্পরকে ২:১ অনুপাতে বিভক্ত করে। কোন ত্রিভুজের তিনটি বাহুর দৈর্ঘ্য তার পরিসীমার সমান হয়ে থাকে। ত্রিভুজের মধ্যমা তিনটির সমষ্টি তার পরিসীমা অপেক্ষা ক্ষুদ্রতম হয়। ত্রিভুজের ভূমির মধ্যবিন্দু থেকে অন্য দুই বাহুর উপর অঙ্কিত লম্ব সমান হলে ত্রিভুজটি সমদ্বিবাহু ত্রিভুজ। একই ভূমির বিপরীত পার্শে অঙ্কিত দুটি সমবাহু ত্রিভুজ সামান্তরিক গঠন করে। দুই বাহু ও অন্তর্ভুক্ত কোণ এবং তিন বাহু ও দুই কোন এক বাহু দেওয়া থাকলে ত্রিভুজ অঙ্কন করা যায়। দুটি ত্রিভুজ সর্বসম হওয়ার শর্ত দুই বাহু ও অন্তর্ভুক্ত কোণ, তিনটি বাহু, দুই কোণ এক বাহু, সমকোণী ত্রিভুজের অতিভুজ ও এক বাহুর সমান হলে।
আমরা তাহলে ত্রিভুজের বিভিন্ন ধরনের কোণগুলি কাকে বলে দেখে নিতে পারি।
সূক্ষ্মকোণ: এক সমকোণ বা ৯০ ডিগ্রি এর ছোট কোণকে সূক্ষকোণ বলা হয়।
সমকোণ: একটি সরলরেখার উপর অন্য একটি সরলরেখা লম্বভাবে টানলে এবং লম্বের দুপাশে অবস্থিত ভূমি সংলগ্ন কোণ দুটি সমান হলে প্রতিটি কোণকে সমকোণ বলা হয়। অথবা যে কোনের পরিমাপ ৯০ ডিগ্রী তাকেই সমকোণ বলা হয়।
স্থূলকোণ: ৯০ ডিগ্রি এর চেয়ে বড় কিন্তু ১৮০° বা ২ সমকোণ এর চেয়ে ছোট কোণকেই স্থূলকোণ বলে।
সরল কোণ: দুই সমকোণ বা ১৮০° কোণের সমান কোণ কে সরল কোণ বলে।
প্রবৃদ্ধ কোণ: দুই সময় কোন অপেক্ষা বড় কিন্তু 4 সমকোণ অপেক্ষা ছোট কোণকে প্রবৃদ্ধ কোণ বলে।
বিপ্রতীপ কোণ: দুটি সরলরেখা, পরস্পর ছেদ করলে যে চারটি কোণ উৎপন্ন হয় এদের যেকোনো একটিকে তার বিপরীত কোণের বিপ্রতিপ কোণ বলে।
একান্তর কোণ: দুটো সমান্তরাল সরলরেখাকে অপর একটি সরলরেখা ছেদ করলে ছেদের বিপরীত পাশে সমান্তরাল যে রেখা কোণ উৎপন্ন করে তাদের একান্তর কোণ বলে।
অনুরূপ কোণ: দুটো সমান্তরাল সরলরেখাকে অপর একটি সরলরেখা ছেদ করলে ছেদকের একই পার্শে যে কোন উৎপন্ন হয় তাদের অনুরূপ কোণ বলে।
আমাদের এখন দেখাতে হবে সন্নিহিত কোণ কাকে বলে?
জ্যামিতিতে কোন সম্পর্কে আলোচনা করা হয়ে থাকে। গ্রিক শব্দ যে ও নীতি নিয়ে গঠিত হয়েছে জ্যামিতি। জ্যামিতিকে গণিতেরই একটি শাখা বলে গণ্য করা হয়ে থাকে। ভূমির পরিমাপ সম্পর্কিত বিষয়গুলি জ্যামিতিতে আলোচনা করা হয়ে থাকে। শুধু ভূমি নয় বিভিন্ন ধরনের আকৃতির পরিমাপ অবস্থান সম্পর্কে জ্যামিতিতে ধারণা দেওয়া হয়ে থাকে। অর্থাৎ গণিতবিদ্যার যে শাখায় ভূমি বা স্থানের পরিমাপ সম্পর্কে আলোচনা করা হয়ে থাকে তাকে জ্যামিতি বলে। জ্যামিতিকে স্থানভিত্তিক বিজ্ঞান ও বলা হয়ে থাকে।
প্রাচীন মিশরে জ্যামিতিবিদ্যার উৎপত্তি হয় বলে ধারণা করা হয়ে থাকে। প্রাচীনকালে যে সকল সভ্যতা আবিষ্কার করা হয়েছে সে সকল সভ্যতায় দেখা যায় জ্যামিতির ব্যবহার ছিল সেই সময়ে। আবিষ্কৃত শৈশব সভ্যতার শহরের নকশাগুলি থেকে দেখা যায় বা ধারণা পাওয়া যায় যে জ্যামিতি না জানলে এ ধরনের নকশা করা বুড়োহ বিষয় ছিল। তাহলে চলুন দেখি সন্নিহিত কোণ কাকে বলে
সন্নিহিত কোণ: দুটি কোণের যদি একটি সাধারন বাহু থাকে তবে একটি কোণকে অপর কোণের সন্নিহিত কোণ বলে।