অভিস্রবণ হলো কম ঘনত্ব এলাকা থেকে বেশি ঘনত্ব এলাকায় পানির প্রবাহকে বোঝায়। অর্থাৎ আমরা যদি বাস্তবে দেখি তাহলে একটি কিসমিস অথবা ছোলাকে প্রথমে শুকনো অবস্থায় দেখলে দেখতে পাওয়া যায় যে এগুলি চুপসানো সুডৌল নয়। এক কথায় বলা যায় চুপসানো। কিন্তু এই ছোলা বা কিসমিস কে আমরা যদি দীর্ঘক্ষণ পানিতে ডুবিয়ে রাখি তাহলে এটা ফুলে ফেঁপে সুন্দর আঙ্গুরের মত টানটান হয়ে গেছে। এই সুন্দর আঙ্গুরের মত টানটান হওয়ার কারণ আমরা যদি খুঁজতে যাই তাহলে দেখতে পাবো যে আঙ্গুরের মত হওয়ার একটাই কারণ। সেটি হল কিসমিস গুলি পানি শোষণ করে এ ধরনের সুন্দর হয়েছে। কিসমিসের কোষগুলি শুকিয়ে ছিল এবং পানির মধ্যে রাখায় আবার সে পানি শোষণ করে এত সুন্দর আকার ধারণ করেছে।
তাই আমরা বলতে পারি যে পানিতে কম ঘনত্ব ছিল কিন্তু কিসমিসের মধ্যে ঘনত্ব বেশি ছিল এই কম ঘনত্ব এলাকা থেকে পানির শোষণ করে বেশি ঘনত্বয় প্রবাহিত হয়ে অর্থাৎ পানির ঘনত্বের সমতা করার কারণে কিসমিস এ ধরনের আকার ধারণ করেছে। আমরা এতক্ষন যে প্রক্রিয়ার কথা বলছিলাম এটি একটি অতি প্রয়োজনীয় প্রক্রিয়া। এই প্রক্রিয়ায় উদ্ভিদ মাটি থেকে পানি গ্রহণ করে। অর্থাৎ আমরা যখন উদ্ভিদের গোড়ার মাটি শুকিয়ে যায় তখন সেখানে পানি ঢালী। এতে মাটি নরম হয় এবং ওই এলাকায় অর্থাৎ গাছের গোড়ার এলাকায় মাটি ভেজা থাকে বা মাটি রসপূর্ণ হয়ে ওঠে। এই ভেজা মাটি থেকে গাছের শিকড়ের সেই মূল রং গুলি তাদের মূলরুমের মধ্যে কম ঘনত্ব থাকায় পানি শুষে নিয়ে উদ্ভিদ তার পানির চাহিদা মেটায়। পানি শুষে নেওয়ার এই পদ্ধতির নাম আমার রস উত্তোলন পদ্ধতি। এই পদ্ধতির সাহায্যেই উদ্ভিদ মাটি থেকে পানি গ্রহণ করে থাকে।
এই প্রক্রিয়াটি আমরা জীবন্ত কোষ ছাড়াও কৃত্রিমভাবে ল্যাবরেটরীতে ঘটানো যায়। যদি দুইটি ভিন্ন ঘনবস্তুর দ্রবণ যাদের দ্রব্য এবং দ্রাবক একি একটি বৈষম্য ভেদ্য পর্দা দিয়ে আলাদা করা হয় তাহলে কিছুক্ষণের মধ্যেই দুইটি দ্রবণের ঘনত্ব সমান হয়ে যাবে। একই দ্রব্য এবং দ্রাবক যুক্ত দুটি ভিন্ন ঘনত্বের দ্রবণ একটি বৈষম্য ভদ্র পর্দা দিয়ে আলাদা করা হলে দ্রাবক তার নিম্ন ঘনত্বের দ্রবণ থেকে উচ্চ ঘনত্বের দ্রবণের দিকে প্রবাহিত হয়। দাবকের বৈষম্য ভেদ্য পর্দা ভেদ করে তার নিম্ন ঘনত্বের দ্রবণ থেকে উচ্চ ঘনত্বের দ্রবণের দিকে প্রবাহিত হওয়াকেই অভিস্রবণ প্রক্রিয়া বলা হয়। অভিস্রবণ প্রকৃতপক্ষে দ্রাবকের ব্যাপন কেননা এক্ষেত্রে যেদিকে দ্রাবকের পরিমাণ অনুপাতিক ভাবে বেশি সেদিক থেকে যাবক প্রবাহিত হয় সেদিকে যেদিকে যাবকের পরিমাণ অনুপাতিক ভাবে কম থাকে সেদিকে যাবে।
অন্যভাবে বলা যায় অভিস্রবণ হলো দ্রাবকের উচ্চ ঘনত্ব থেকে দ্রাবকের নিম্ন ঘনত্বের দিকে যাবকের প্রবাহ যেহেতু দ্রব্যের পক্ষে বৈষম্য ভেদ্য পর্দা অতিক্রম করা সম্ভব নয়। আমরা বাস্তব জীবনে এ ধরনের উদাহরণ দেখতে পারি। উদাহরণটি হল আমরা জিলাপি ভাজান বিষয়টি সবাই দেখেছি এবং সবাই এই জিলাপির সঙ্গে পরিচিত আছি। জিলাপি ভেজে যখন চিনি র দ্রবণ তৈরি করা হয় সেই দ্রবণের মধ্যে দেওয়া হয় তখন তার মধ্যে সেই চিনির দ্রবণ গুলি অর্থাৎ জিলাপির মধ্যে চিনির দ্রবণ গুলি ঢুকে যায়। এটিও একটি অভিস্রবণ প্রক্রিয়ার মতই ঘটে থাকে। কারণ জিলাপির মধ্যে ফাঁকা থাকার কারণে সেই দ্রবণ দিয়ে জায়গা দখল করে অর্থাৎ ঘনত্ব সমান করে দেয়। অভিস্রবণের বিষয়গুলি আমরা এতক্ষণ আলোচনা করলাম এখন তাহলে আমাদের দেখাতে হবে অভিস্রবণ কাকে বলে। তবে এই আলোচনার প্রেক্ষিতে সকলেরই অভিস্রবণ সম্পর্কিত ধারণাটি জন্মে গেছে যে অভিস্রবণ কাকে বলে। তাও আমরা দেখতে পারি অভিস্রবণ কাকে বলে?
অভিস্রবণ: একই দ্রব্য এবং দ্রাবকযুক্ত দুইটি ভিন্ন ঘনত্বের দ্রবণ একটি বৈষম্য ভেদ্য পর্দা দিয়ে আলাদা করা হলে, দ্রাবক তার নিম্ন ঘনত্বের দ্রবন থেকে উচ্চ ঘনত্বের দ্রবণের দিকে প্রবাহিত হয়। দাবকের বৈষম্য পর্দা ভেদ করে তার নিম্ন ঘনত্বের দ্রবণ থেকে উচ্চ ঘনত্বের দ্রবণের দিকে প্রবাহিত হওয়াকেই অভিস্রবণ প্রক্রিয়া বলা হয়।