পোলার যৌগ কাকে বলে

রাসায়নিক বিক্রিয়ায় বিভিন্ন ধরনের যৌগ থাকে। এই যৌগগুলি নিয়েই আমাদের কাজ করতে হয়। অর্থাৎ আমরা বিভিন্ন বিক্রিয়া সংঘটিত করানোর সময় বিভিন্ন যৌগ যোগ করতে হয়। এই যৌগগুলি একে অপরের সাথে বিক্রিয়া করে থাকে। আমরা যখন অধিকাংশ সমিতির যোগ্য পানিতে দ্রবীভূত না হয় তবে কিছু কিছু সমযোজী যৌগ পানিতে দ্রবীভূত হয় এর কারণ আমরা জানতে পারি যে প্রথমে পানির বন্ধন গঠন সম্পর্কে জানার প্রয়োজন হয়। পোলার যৌগ কি সেটি জানার জন্য আমাদের দ্রাব্যতা বা দ্রবণতা সম্পর্কে জানার প্রয়োজন আছে। এই কারণে আমরা পোলার যৌগ জানার আগে একটু জেনে নিতে পারি যে যাব্যতা বা দ্রবণীয়তা কি। আমরা যখন পানিতে বিভিন্ন দ্রব্য দিয়ে থাকি যেমন চিনি লবণ ইত্যাদি দিলে অবশ্যই সেটি পানির মধ্যে দ্রবীভূত হয়ে যায়। তাহলে দেখতে পাচ্ছি যে চিনি এবং লবণ অর্থাৎ খাবার লবণ পানিতে দ্রবীভূত। কিন্তু এরকম অনেক দ্রব্য আছে যেগুলো পানিতে দ্রবীভূত হয় না।

সিলভার ক্লোরাইড পানিতে দ্রবীভূত হয় না আবার ন্যাপথলিন সরিষার তেল কেরোসিন এগুলো নিয়ে যদি আমরা দেখি দেখব যে এগুলো পানিতে দ্রবীভূত হয় না। তাই সমযোজী যৌগ সাধারণত প্রাণীতে দ্রবীভূত হয় না বলেই আমরা জেনে থাকি। আবার যদি দেখি যে কিছু কিছু সমযোজী যৌগ আছে যেগুলো পানিতে দ্রবীভূত হয়। এগুলোর মধ্যে আমরা আগেই বলেছি যে চিনি গ্লুকোজ অ্যালকোহল এইগুলি।এই কারণে আমরা বলতে পারি যে সামগ্রিকভাবে কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া প্রায় সকল আইনিক যৌগই পানিতে দ্রবীভূত হতে পারে কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া প্রায় সকল সমযোজী যৌগই পানিতে দ্রবীভূত হয় না।

তবে আমরা জানি যে সবচেয়ে ভালো দ্রাবক হচ্ছে পানি। অর্থাৎ যত দ্রাবক রয়েছে তার মধ্যে পানি সবচাইতে উৎকৃষ্ট দ্রাবক বলে গণ্য করা হয়। আমরা যে দেখলাম কিছু কিছু যৌগ পানিতে দ্রবীভূত হয় এর কারণ অবশ্যই আছে কারণ হলো প্রথমে পানির বন্ধন গঠন সম্পর্কে আমাদের জানতে হবে। আমরা জানি যে পানি একটি সমযোজী যৌগ অর্থাৎ পানির অণুতে একটি অক্সিজেন পরমাণুর সাথে দুইটি হাইড্রোজেন পরমাণু ইলেকট্রন শেয়ারের মাধ্যমে সমাজের যৌগ সমযোজী বন্ধনে আবদ্ধ থাকে। কিন্তু আমরা জানি যে অক্সিজেন পরমাণু হাইড্রোজেন পরমাণু থেকে অধিক তড়িৎ ঋণাত্মক হওয়ায় পানির অনুর সমযোজী বন্ধনীতে ব্যবহৃত ইলেকট্রন দুইটি অক্সিজেনের দিকে সামান্য পরিমাণে সরে যেতে পারে বা সরে যায়। আর যেই কারণে অক্সিজেন পরমাণু আংশিক ঋণাত্মক আধান ও হাইড্রোজেন পরমাণুর আংশিক ধনাত্মক আদান প্রাপ্ত হয়ে থাকে।

অর্থাৎ এ কথা বলা যায় যে পানির অনুতে আংশিক ধনাত্মক এবং আংশিক ঋণাত্মক প্রান্তের সৃষ্টি হয়। এরকম ধনাত্মক ও ঋণাত্মক আধান প্রাপ্ত সমযোজী যৌগকেই আমরা পোলার যৌগ বলে থাকি। সুতরাং এ কথা বলা যায় যে পানির একটি পোলার সমযোজী যৌগ এবং দ্রাবক হিসেবে পানি একটি পোলার দ্রাবক।মনে রাখতে হবে যে সমযোজী বন্ধনস্থ ইলেকট্রন যুগলকে কোন পরমাণু কর্তৃক নিচের দিকে আকর্ষণ করার ক্ষমতাকে উক্ত পরমাণুর তড়িৎ ঋণাত্মকতা বলা হয়। ব্লাড যৌগের উদাহরণ হিসেবে আমরা অসংখ্য উদাহরণ দেখাতে পারি। যেমন: সালফার ডাই অক্সাইড, হাইড্রোক্সাইড, পানি ইত্যাদি। তাই পোলার যৌগ সম্পর্কে আমরা যদি একটু ভালোভাবে চর্চা করার চেষ্টা করি বা একটু সময় নিয়ে যদি চর্চা করি তাহলে অবশ্যই সকল কিছু সম্পর্কে জানা যাবে। এজন্য শিক্ষার্থীদের প্রতি নির্দেশ তারা যেন একটু সময় নিয়ে পোলার যৌগ সম্পর্কে বিভিন্ন পড়াগুলো দেখে নেয়।

পোলার দ্রাবক পানিতে আর্নিক যৌগ যোগ করলে পানির অণুগুলো ধনাত্মক প্রান্ত রাসায়নিক যৌগের ঋণাত্মক প্রান্ত বা অ্যানায়ন কে আকর্ষণ করে। আবার একইভাবে পানির অনুর ঋণাত্মক প্রান্ত আয়নিক যৌগের ধনাত্মক প্রান্ত বা ক্যাটায়ন কেউ আকর্ষণ করে। তাহলে আমরা এখন দেখতে পারি যে পোলার যৌগের সংজ্ঞা কি?

পোলার যৌগ : যে সমযোজী যৌগের মধ্যকার মৌলের তড়িৎঋণাত্বকতার পার্থক্যের কারণে ধণাত্বক ও ঋণাত্বক প্রান্তের সৃষ্টি হয় সে সমযোজী যৌগকে পোলার যৌগ বলে। পোলার যৌগের বৈশিষ্ট্যকে বলে পোলারিটি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *