বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থায় কোন পাঠ পড়ানোর পর শিক্ষার্থীরা কি বিষয়ে শিখবে সে সম্পর্কে শিক্ষকদের যে দিকে খেয়াল রাখতে হয় তা হল শিখনফল এর দিকে। অর্থাৎ একজন শিক্ষক একটি নির্দিষ্ট পাঠ পড়ানোর পর যে শিখনফল নির্ধারণ করা হয় সেই শিখনফল তারা কি শিখতে পারলো কিনা সেদিকে নজর দিয়ে তাকে সে বিষয়ে পাঠদান করতে হয়। এই পাঠদান শেষে অর্জিত শিখনফল যদি না হয় তাহলে শিক্ষার্থীদের পুনরায় আবার সেই বিষয়ে পাঠদান করা উচিত বা করতে হবে। আর এই কারণেই শিক্ষকদের পূর্ব নির্ধারিত বা পূর্বেই নির্ধারণ করে দেয়া হয় এই পাঠ শেষে শিক্ষার্থীরা কি কি অর্জিত হবে সেই বিষয়গুলি। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে প্রকাশিত একটি শিক্ষক মডিউলে শিখন ফলের যে সজ্ঞা প্রদান করেছেন তারা আমরা সেখানে সেই শিখন ফলের সংজ্ঞাটি আপনাদের জ্ঞাতার্থে তুলে ধরছি।
সেখানে শিখন ফলের সংজ্ঞা দেওয়া হয় এভাবে-
কোনো একটি পাঠ শেষে শিক্ষার্থী কী জ্ঞান, দক্ষতা, দৃষ্টিভঙ্গি অর্জন করবে সে সম্পর্কে সুস্পষ্ট ও সুনির্দিষ্ট প্রত্যাশা হলো শিখনফল ” মডিউলটিতে বলা হয়েছে যে, জ্ঞানের প্রসার, অনুধাবন ক্ষমতার ব্যাপ্তি, ইতিবাচক মানসিকতার পরিবর্তন এবং শারীরিক দক্ষতার উন্নয়ন সাধনের মাত্রা শিখনফলে বিজ্ঞাপিত হয়। প্রকৃতপক্ষে শিখনফল অর্জনের মাধ্যমে পাঠের উদ্দেশ্য অর্জিত হয়। তাই বাংলাদেশ সরকারের শিক্ষা মন্ত্রণালয় এই শিখনফল অর্জিত হচ্ছে কিনা সেদিকে সজাগ দৃষ্টি রেখেছে তারা। এবং এই শিখনফল কিভাবে শিক্ষার্থীদের অর্জন করানো যায় সেই সংক্রান্ত নীতিমালা তৈরি করে তারা বাংলাদেশের প্রতিটি শিক্ষকদের উপযুক্ত ট্রেনিং এর ব্যবস্থা করেছেন।
এবং প্রতিটি শিক্ষক সেই ট্রেনিং এর আওতায় এসে ট্রেনিং নিয়ে তারা কিভাবে এই শিখনফল অর্জন করা যায় সেই সম্পর্কে ধারণা লাভ করার জন্য ট্রেনিং নিচ্ছে এবং তারা সেভাবেই ক্লাসে শিক্ষার্থীদের দান করানোর চেষ্টা করে যাচ্ছে নিরলস ভাবে। এবং প্রান্তিক শিক্ষার্থীগণ যাতে প্রতিটি পাঠের বা এই নির্দিষ্ট পাঠ গুলির শিক্ষা অর্জন করে শিখনফল গুলি লাভ করতে পারে সেদিকে শিক্ষক সহ সংশ্লিষ্ট সকলেই শিক্ষার্থীদের পাঠদান করে যাচ্ছেন এবং বুঝিয়ে যাচ্ছেন যে কিভাবে শিক্ষা অর্জন করলে বা কতটুকু শিক্ষা অর্জন করলে এই শিখনফল অর্জন করা সম্ভব হয়। শিখন ফলের কিছু মূলনীতি আছে সেই মূলনীতি গুলি হল-এটি অর্জন করতে হলে একশন ভার্ব ব্যবহার করতে হবে। সবাইকে একসাথে শিখনফল অর্জন করতে হবে একসাথে একাধিক শিখনফল বা একাধিক অ্যাকশন ভাব দিয়ে একটি বা একাধিক শিখনফল লেখা যাবে না।
শিখন ফলের কিছু বৈশিষ্ট্য রয়েছে এই বৈশিষ্ট্য গুলি আমরা এখন দেখে নিতে পারি। বৈশিষ্ট্য গুলি হল-
এটি পরিমাপ যোগ্য, অর্জন যোগ্য, প্রাসঙ্গিক এবং সময়াবদ্ধ।
তাহলে দেখা যাচ্ছে যে শ্রেণী শিক্ষাক্রম কার্যক্রমে শিক্ষকদের যে সময় নির্ধারণ করে দেওয়া হয় সেই সময়ের মধ্যে তারা পাঠদান করলে সেই পাঠদানের অর্জিত ফল শিক্ষার্থীদের হচ্ছে কিনা শিখনফল থেকে তা আমরা বুঝে নিতে পারব। তাই শিক্ষার্থীদের এদিকে মাঠে মনোযোগ করানোর বিষয়ে আমাদের অর্থাৎ শিক্ষকদের দৃষ্টি রাখতে হবে এবং শিক্ষকদের আরেকটি বিষয় দৃষ্টি রাখতে হবে সেটি হচ্ছে একদিনের একটি শ্রেণী ঘন্টায় যতগুলি শিখনফল অর্জন করানো সম্ভব তাকে সেই টুকুন শিখুন ফলে বেছে নিতে হবে। শিক্ষার্থীরা যাতে প্রতিটি পাঠে মনোযোগী হয় সেদিকে অবশ্যই একজন শিক্ষকের সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে নইলে যে শিখনফল আছে পাঠের সেই শিখনফল অর্জিত হবে না।
আর শিখনফল যদি অর্জিত না হয় তাহলে একজন শিক্ষকের সমস্ত পাঠদান করাই বোঝার পর্যবেষিত হতে পারে। তাই আমরা শিখনফল কি সে সম্পর্কে সংজ্ঞা দিতে হলে এই সংজ্ঞা দেওয়া যায় যে-
শিখনফল: নির্দিষ্ট কোন সময়ব্যাপী চলা শিখন শিক্ষণ কার্যক্রম বা কোর্স শেষে নির্দিষ্ট সময়ে শিক্ষার্থীদের যে জ্ঞান দক্ষতা ও দৃষ্টিভঙ্গি অর্জন করতে পারে বা অর্জন হবে বলে প্রত্যাশা করা হয় তাকে শিখনফল বলে ধরে নেওয়া যেতে পারে।