তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি কাকে বলে

বর্তমান যুক্তি বিশ্বের জন্য তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির যুগ। বিগত শতাব্দীতে সম্পদের যে ধারণা ছিল ২১ শতকে এসে সেই ধারণা পুরোপুরিভাবে পাল্টে যায়। বর্তমানে পৃথিবীর সবাই মেনে নিয়েছে যে ২১ শতকের সম্পদ হচ্ছে জ্ঞান। আগের শতাব্দি ছিল মানুষের শক্তি বা সম্পদের উপর কোন দেশ মানুষ ব্যক্তিকে শক্তিশালী কিনা বিবেচনা করা হতো। কিন্তু বর্তমানের এই যুগে এসে দেশকে জাতিকে শক্তিশালী হিসেবে বিবেচনা করা হয় তাদের জ্ঞানের উপর নির্ভর করে। তাই বলা যায় যে কৃষি খনিজ সম্পদ কিংবা শক্তির উৎস নয় শিল্প কিংবা বাণিজ্য নয় বর্তমান পৃথিবীতে সম্পদ হচ্ছে এখন সাধারণ মানুষ।

অর্থাৎ সাধারণ দক্ষ মানুষ পৃথিবীর এখন খুব মূল্যবান সম্পদ। আমরা সবাই অনুভব করতে পারছি যে ২১ শতকের পৃথিবীটা আসলে জ্ঞানভিত্তিক একটা অর্থনীতির ওপর দাঁড়াতে শুরু করেছে। একজন দক্ষ মানুষের বা ব্যক্তির পৃথিবীর সব দেশেই তার কদর রয়েছে। এক সময় মানুষকে প্রকৃতির উপর নির্ভর করে বেঁচে থাকতে হতো। অর্থাৎ বৃষ্টি হলে মানুষ ফসল বলতে পারতো এখন আর যন্ত্র আবিষ্কার করার পর মানুষ বৃষ্টির ওপর নির্ভর করে ফসল ফলায় না যখন বৃষ্টির দরকার তখন মানুষ যন্ত্র দিয়ে মাটির নিচ থেকে জল তুলে সেচ দিয়ে সে ফসল ফলাতে পারছে।

অষ্টাদশ থেকে উনবিংশ শতাব্দীতে শিল্প বিপ্লবের পর মানুষ যন্ত্রের উপর নির্ভর করে পৃথিবীর অর্থনীতি নিয়ন্ত্রণ করছে। পরবর্তীতে আধুনিক কম্পিউটার এর বিকাশ এবং প্রচলন শুরু হওয়ার পর মানুষ এই কম্পিউটার কে ব্যবহার করে প্রায় সব ধরনের কাজ করে থাকছে এই যন্ত্রটির মাধ্যমে। পৃথিবীতে জ্ঞান অর্জনের একটা সুনির্দিষ্ট পদ্ধতি দীর্ঘদিন থেকে মোটামুটি একইভাবে কাজ করে আসছিল। তথ্যপ্রযুক্তির উন্নতি হওয়ার পর প্রথমবার এই পদ্ধতির এক ধরনের পরিবর্তন শুরু হতে করেছে এবং এটি এখন ই লার্নিং নামে নতুন কিছু শব্দের সাথে আমরা পরিচিত হতে শুরু করেছি। আমাদের এই বাংলাদেশের বিশাল জনগোষ্ঠী রয়েছে। সে কারণে স্কুলের শিক্ষার্থী সংখ্যাও প্রত্যেকটি শ্রেণীকক্ষে অনেক বেশি হয়ে থাকে।

নানা ধরনের অর্থনৈতিক সীমাবদ্ধ থাকার কারণে আমাদের স্কুলগুলোতে দক্ষ শিক্ষকের অভাব রয়েছে। লেখাপড়ার জন্য প্রয়োজনীয় শিক্ষা প্রকরণ বলতে গেলে তেমন কিছুই নাই। তবে আমরা এই তথ্য প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে এই শিক্ষা ব্যবস্থাকে আমল পরিবর্তন নিয়ে আসতে পারি। অনলাইন ভিত্তিক শিক্ষাব্যবস্থা চালু হতে পারে এই তথ্য প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে। যদিও করোনা মহামারীর সময় থেকে সামান্য করে হলেও আমাদের এই তথ্যপ্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে তথ্যপ্রযুক্তিবিদরা এ ধরনের শিক্ষা ব্যবস্থা কিছুটা হলেও শুরু করতে পেরেছে। শুধু শিক্ষা ব্যবস্থা কেন আমাদের বর্তমানের এই ডিজিটাল বাংলাদেশ এখন এই তথ্য প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে অফিশিয়াল অনেক কাজই করে থাকছে।

এখন ব্যাংকের একাউন্টের হিসাব রাখার জন্য আর বিশাল সেই লেজার বুক গুলো বের করতে হয় না। কম্পিউটারের ডাটাবেজে সকল তথ্য সংরক্ষিত আছে। এখন সেখান থেকেই অর্থাৎ তথ্যপ্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়েই সব হিসাব নিকাশ করা হয়ে থাকে ডাটাবেজের মাধ্যমে। তাই আমাদের এই ডিজিটাল ব্যবস্থা ব্যবস্থা প্রচলনের ফলে সরকারি ব্যবস্থা সমূহ কে আধুনিক ওযু গোপযোগী করার পাশাপাশি সরকারি ব্যবস্থা সমূহের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা সম্ভব হয়েছে। এবং এই তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ফলে নাগরিকের হয়রানি এবং বিরম্বনার অবসান ঘটে এবং দেশে সুশাসনের পথ নিষ্কণ্টক হয়েছে। একটা সময় ছিল যখন পাবলিক পরীক্ষার ফলাফল সংগ্রহ করা আমাদের শিক্ষার্থীদের জন্য অনেকটা দুষ্কর হয়ে পড়তো।

অর্থাৎ কয়েকদিন আগে ফলাফল প্রকাশ করলে সেই ফলাফল দেখতে তাদের খবরের কাগজের দিকে তাকিয়ে থাকতে হতো। কিন্তু বর্তমানে সেকেন্ডের মধ্যে অথবা মুহুর্তের মধ্যে সকল রেজাল্ট সকল শিক্ষার্থী পেয়ে যাচ্ছে শুধুমাত্র এই তথ্যপ্রযুক্তির উন্নতির কারণে। তথ্যপ্রযুক্তি সম্পর্কিত বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আমরা আলোচনা করলাম তাহলে এখন দেখতে পারি এই তথ্যপ্রযুক্তি কাকে বলে?

তথ্য প্রযুক্তি: বর্তমান আধুনিক যুগে জ্ঞান-বিজ্ঞানের যুগে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেয়ার জন্য অথবা দক্ষ ব্যবস্থাপনার জন্য তথ্য আহরণ ও সংরক্ষণ প্রক্রিয়াকরণ ও বিতরণের গুরুত্ব অনেক। আর এই তথ্য আহরণ সংরক্ষণ প্রক্রিয়াকরণ তথ্যবিতরণ ও এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সামগ্রিক কার্যাবলী পরিচালনার বিজ্ঞানসম্মত প্রক্রিয়াকেই তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বলা হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *