আবহাওয়া ও জলবায়ুর মধ্যে পার্থক্য

আবহাওয়া হচ্ছে কোন স্থানের বায়ুমণ্ডলীয় অবস্থাকে বুঝিয়ে থাকে। অর্থাৎ আমরা আর হামেশাই বলে থাকি যে আজকের আবহাওয়া কেমন এর অর্থ এই যে এখন বায়ুমণ্ডলীয় অবস্থা কেমন সেটা বুঝিয়ে থাকে। তাই আবহাওয়া বলতে কোন স্থানের স্বল্প সময়ের বায়ুমণ্ডলীয় রেকর্ডকেই বুঝিয়ে থাকি অর্থাৎ সেটি কোন একদিনের অথবা একবেলার হতে পারে। আমাদের সংবাদ মাধ্যমগুলি অর্থাৎ রেডিও টেলিভিশন এ ধরনের সকল সংবাদ চ্যানেল সংবাদপত্র ইত্যাদি থেকে আমরা প্রতিনিয়ত আবহাওয়ার খবর পেয়ে থাকি। এই খবরটি বা এ ধরনের আবহাওয়ার খবরটি সেই অঞ্চলের সেই এলাকার সেই জায়গার অল্প কিছুক্ষণের অথবা একদিনের অথবা ২/১দিনের হতে পারে।

দীর্ঘ সময়ের আবহাওয়া কেমন হবে সেটি আরেকটি জিনিস বা আরেক ধরনের হয়ে থাকে। আবার অন্যদিকে সেই অঞ্চলের ৩০ থেকে ৩৫ বছরের আবহাওয়ার গড় কে জলবায়ু বলা হয়। জলবায়ু বিষয়টি একটি বৃহৎ এলাকা নিয়েই ধরা হয়। সেটা হতে পারে কোন অঞ্চল কোন জেলা এই ধরনের বৃহৎ স্থানকেই বুঝিয়ে থাকে। তাই আমরা আবহাওয়া এবং জলবায়ু সমার্থক শব্দে ব্যবহার করলেও আসলে এটি দুইটি দুই জিনিস। আবহাওয়া বলতে একরকম এবং জলবায়ু বলতে আরেকরকম বুঝায়। অর্থাৎ জলবায়ু বলতে কোন একটি বৃহৎ অঞ্চল জুড়ে আবহাওয়ার উপাদান গুলো যেমন বায়ুর তাপ চাপ আর্দ্রতা বৃষ্টিপাত ইত্যাদির ২০ থেকে ২৫ বছরের গড় করে তাকে ২০ বছর হলে কুড়ি দিয়ে এবং 25 বছর হলে ২৫ দিয়ে ভাগ করে যে আবহাওয়া পাওয়া যাবে সেটি হবে সেই অঞ্চলের গড় জলবায়ু। তাই আবহাওয়া প্রতিনিয়ত পরিবর্তন হতে পারে কিন্তু জলবায়ু পরিবর্তন হতে সময় লাগবে অর্থাৎ জলবায়ু যদি পরিবর্তন হয় তাহলে আস্তে আস্তে পরিবর্তন হবে।

তাই বলা যায় যে আবহাওয়া হল বায়ুমণ্ডলের অবস্থা এবং এই অবস্থা আসলে বায়ুমন্ডলের যে চারটি ভাগ আছে তার সর্বনিম্নভাগে অর্থাৎ টপোস্ফিয়ারে হয়ে থাকে। আর অন্যদিকে জলবায়ু বলতে কোন এলাকা বা সমগ্র পৃথিবী হতে পারে সেসব এলাকায় বিস্তারিত এলাকার আবহাওয়ার গড় কে হাবরা বুঝে থাকি। অর্থাৎ কোন অঞ্চলে গত ২০-২৫ বছর ধরে যত বৃষ্টিপাত হয়েছে সেই বৃষ্টিপাত পরিমাপ করে তাকে ২০ বছর হলে ২০ বছর দিয়ে ভাগ করে আমরা বলে দিতে পারব যে এ বছর বা আগামী এক দুই বছর কেমন ধরনের বৃষ্টিপাত হবে সেই এলাকাতে।

এভাবে আমরা আরো কিছু অর্থাৎ কেমন ধরনের করা হয় সেই খরা সম্পর্কেও একইভাবে আমরা বুঝে থাকব। তাই আমরা বলতে পারি যে অন্যান্য গ্রহে আবহাওয়া কিভাবে কাজ করে এবং পৃথিবীতেই বা আবহাওয়া কিভাবে কাজ করে সেটি জানার জন্য আমাদেরকে সৌরজগতের একটি বিখ্যাত ল্যান্ডমার্ক বৃহস্পতি গ্রেট লেডিস স্পট একটি এন্টি সাইক্লোনিক ঝড় যার অস্তিত্ব কমপক্ষে ৩০০ বছর ধরে ছিল বলে জানা যায়।

তবে আমরা আর শুধু আবহাওয়া গ্রহ গুলির মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয় বা আবহাওয়ার গ্রহ গুলোর মধ্যেই সীমাবদ্ধ কিনা সেটি আমাদের জানার জন্য অনেক কিছু বুঝতে হবে। তবে এটি বলা যায় যে আবহাওয়া শুধু গ্রহ গুলোর মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে না। আমরা একথা জানি যে কোন তারা সৌরজগৎ থেকে হারিয়ে যাচ্ছে তার কারণ হচ্ছে সেটি হল খুব পাতলা বায়ুমন্ডলের সৌর বায়ুর কারণে এই ঘটনা ঘটে থাকে। আবহাওয়া বা বায়ুর চাপ তাপমাত্রা এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় চালিত হয় শুধুমাত্র বায়ুর আদ্রতা বা জলীয় বাষ্পের আর্দ্রতার কারণে।

একটি অঞ্চলের বায়ুর আদ্রতা যদি বেশি হয় বা কম হয় তাহলে সেখানকার আবহাওয়া ভারী হয়ে থাকে আবার যদি হালকা হয় তাহলে হালকা আবহাওয়া গুলি সহজেই সরে যেয়ে ভারী আবহাওয়া গুলি ওখানে চলে আসে এভাবেই ঝড় এবং ঝড় হওয়ার সৃষ্টি হয়ে থাকে। অর্থাৎ আমরা আবহাওয়ার পার্থক্যকে বলতে পারি সূর্যের কোণের কারণে অর্থাৎ পৃথিবীর সাথে সূর্য যে কোনে অবস্থান করে তার ওপর নির্ভর করে আবহাওয়ার ও পরিবর্তন ঘটতে পারে। যে অঞ্চলে সূর্য খাড়া ভাবে কিরণ দিয়ে থাকে সে অঞ্চলের আবহাওয়া বা তাপমাত্রা বেশি হয়ে থাকে ফলে উষ্ণ আবহাওয়া হালকা হয়ে অন্যদিকে চলে যায় এবং অন্য জায়গার অর্থাৎ শীতল আবহাওয়া সেই এলাকায় আসার কারণে ঝড়ের সৃষ্টি হয়ে থাকে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *