আমাদের সমাজে বিভিন্ন ধরনের লোকের বাস। অর্থাৎ আমরা যে সমাজে বাস করি সেই সমাজে বিভিন্ন ধরনের বিভিন্ন গোষ্ঠীর লোক বসবাস করে অর্থনৈতিকভাবে ধনী গরিব ইত্যাদি বিভিন্ন শ্রেণীর মানুষই সমাজে রয়েছে। ধনী এবং গরিবের মাঝে অর্থনৈতিক সমন্বয় সাধন করার লক্ষ্যে মহান আল্লাহতালার কাছ থেকে যাকাতের বিধান রয়েছে। অর্থনৈতিকভাবে সচ্ছল ব্যক্তিদের অবশ্যই যাকাত আদায় করতে হয়। এই যাকাত আদায় করলে সমাজের দুর্বল লোকেরাও অর্থনৈতিকভাবে সফল হয়ে উঠবে একসময়। এবং সে কারণেই মহান আল্লাহতালা যাকাতের প্রচলন চালু করেছেন বলে বর্ণনা রয়েছে। এই ডাকাতের কারণে ধনী এবং গরিবের মাঝে সেতুবন্ধন তৈরি হবে।
এতে সমাজে শান্তি-শৃঙ্খলা এবং সর্বোপরি সম্প্রীতি বজায় থাকবে। আর সে কারণেই হযরত মুহাম্মদ যাকাতকে ইসলামের সেতুবন্ধ হিসেবেই উল্লেখ করে গেছেন। তিনি বলেছেন যাকাত হলো ইসলামের সেতুবন্ধ। আমরা যদি যাকাত শব্দের আভিধানিক অর্থ খুঁজে তাহলে দেখব যে যাকাত শব্দের আভিধানিক অর্থ হল পবিত্রতা পরিশুদ্ধতা ও বৃদ্ধি পাওয়া। তাই ইসলামী শরীয়তের দৃষ্টিতে কোন মুসলিম নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হলে বসন্তে তার সম্পদের শতকরা ২.৫০ হারে নির্দিষ্ট খাতে ব্যয় করাকেই যাকাত বলা হয়। নিসাব হলো ন্যূনতম সম্পদ যা থাকলে যাকাত তার জন্য ফরজ হয়ে ওঠে। তবে যাকাত প্রদানে ধ্বনির সম্পদ পবিত্র পরিশুদ্ধ এবং বৃদ্ধি পায় তাই এ কারণেই একে যাকাত বলা হয়। ইসলামের দৃষ্টিতে যাকাত গরীবের প্রতিধ্বনির দয়া নয় বরং এটা গরিবের অধিকার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত।
আর এই কারণেই যাকাত আদায় করাকে আবশ্যক মনে করেছেন। এ সম্পর্কে আল্লাহ তা’আলা বলেছেন যে তোমরা সালাত কায়েম করো এবং যাকাত আদায় করো। আল্লাহতালা পবিত্র কুরআনে অনেক স্থানে সালাতের সাথে যাকাতের কথা বলেছেন। যাকাত ইসলামের ৫০ তম্ভের মধ্যে তৃতীয় স্তম্ভ। হঠাৎ ডাকাতের সামাজিক নৈতিক অর্থনৈতিক এবং ধর্মীয় গুরুত্ব রয়েছে। আর এসব কারণেই মহান আল্লাহ মুসলমানদের ওপর যাকাত ফরজ করেছেন। সামাজিকভাবে যাকাতের গুরুত্ব রয়েছে। যাকাতসমাজ থেকে অস্থিতিশীলতা এবং বিশৃঙ্খলা দূর করে পারস্পরিক সৌহার্দ্য স্থাপন করে। এই কারণে যাদের জন্য যাকাত প্রযোজ্য তারা অবশ্যই যাকাত আদায় করবেন। সামাজিক মানুষদের মধ্যে নিরাপত্তা দানের পাশাপাশি সমাজের মানুষের মাঝে সম্পদের বৈষম্যক দূর হয় যদি আমরা সবাই ঠিকমতো যাকাত আদায় করি।
এবং সমাজের মধ্যে থেকে এই বৈষম্য দূর করার লক্ষ্যে আল্লাহতালা বলেন যে যাতে সম্পদ শুধু তোমাদের অর্থশালীদের মধ্যেই আবর্তিত না হয়। আর এই কারণেই সমাজে যাকাত ব্যবস্থা চালু করে বৈষম্য দূর করে সাম্যের ভিত্তিতে জীবন গড়ে তোলাই হল আমাদের দায়িত্ব এবং কর্তব্য। নৈতিকতার দিক থেকেও যাকাতের গুরুত্ব অপরিসীম। যাকাত মানুষের মনে খোদাভীতি সৃষ্টি করে থাকে। পবিত্র ও উন্নত দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি করে এ যাকাত আদায় করার কারণে। যাকাত অপচয় রোধ করতেও শেখায় এই কারণে যাকাত মানুষের আত্মিক প্রশান্তি নৈতিক উন্নতি সম্পদের পবিত্রতা এবং পরিশুদ্ধতা নিশ্চিত করে থাকে। আবার ইসলামী এ যাকাত অর্থনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ কারণ ইসলামী অর্থব্যবস্থার উৎস গুলোর মধ্যে যাকাত হল অন্যতম। এর উপর ইসলামী রাষ্ট্রের অর্থনৈতিক ভিত্তি এবং জনকল্যাণমুখী প্রকল্প সমূহের সাফল্য নির্ভর করে থাকে। এই যাকাত এর কারণে সম্পদের প্রবাহ গতিশীল হয়।
ধনীর সম্পদ পুঞ্জিভূত না হয়ে দরিদ্র লোকের হাতেও আছে এই দিক থেকে যাকাত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হয়। আর এই কারণেই রাষ্ট্রের অর্থনীতি সচল হয়। উৎপাদন বৃদ্ধি পায় এবং বেকারত্ব হ্রাস পায়। মাথাপিছু আয় বেড়ে যায় এই যাকাতের কারণেই। রাষ্ট্রের অর্থনৈতিক মজবুত এবং শক্তিশালী হয়ে থাকে। অবশেষে ধর্মীয় দিক থেকেও যাকাত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হয় অর্থাৎ কোন মুসলমান যাকাত না দিলে সে আর পরিপূর্ণ মুসলমান থাকতে পারে না। তাহলে আমরা যাকাত সম্পর্কিত বিভিন্ন তথ্য এবং উপাত্ত গুলি বিশ্লেষণ করলে দেখতে পাই যে যাকাত শব্দের অর্থ এবং যাকাত কি সেই সম্পর্কে।