আমাদের নদীমাতৃক বাংলাদেশের প্রচুর পরিমাণে নদী থাকায় আমরা সবাই নদী সম্পর্কে অবগত আছি। তবে নদীর প্রধানত দুই ভাগে ভাগ করা হয়ে থাকে। যথা: নদ এবং নদী। আজকে আমাদের দেখাতে হবে নদ এবং এই নদী এই দুইয়ের মধ্যে পার্থক্য কি কি রয়েছে। প্রথমে আমাদের জানতে হবে নদ কাকে বলে এবং নদী কাকে বলে এই বিষয় টি। আমরা নদ নদীর উৎপত্তির স্থল থেকে বিচারবিশ্লেষণ করলে দেখতে পাই যে নদ এবং নদী একইভাবে সৃষ্টি হয়েছে। তাই একথা বলা যায় যে উৎপত্তিস্থলের ওপর ভিত্তি করে না দেবেন নদী এই দুই প্রকার আলাদা হয়নি। তাহলে আমাদের দেখতে হবে কিসের উপর ভিত্তি করে মদ এবং নদী দুই প্রকারের সৃষ্টি হয়েছে।
আমরা এর আগে এ কথাও শুনে এসেছি যে যে নদীর শাখা নদী নেই তাকে নদ বলে এবং যে নদীর এক থেকে একাধিক শাখা নদী রয়েছে তাদেরকে নদী বলা হয়। এটিও আসলে ঠিক নয়। অর্থাৎ নদ-নদী এভাবে আলাদা হয়নি। আমরা একাধিক নদের দিকে তাকালে বা তাদের বিচার-বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় যে তাদের একাধিক শাখা নদী রয়েছে তার পরেও এ সকল নদকে নদী বলা হয় না নদী বলা হয়। আমরা যে নদ নদী সম্পর্কিত উত্তরগুলি দিয়ে থাকি তাতে বেশিরভাগ লোকই এ ধরনের উত্তর দিয়ে থাকে। তবে এ ধরনের উত্তর ও নদনদীর ক্লাসিফিকেশন এর ক্ষেত্রে সঠিক নয়। এই উত্তরগুলো আসলে হাস্যকর মনে হয়। আমরা এধরনের উত্তরের ব্যাকরণগত বা অন্য যেকোনো তথ্য বিচার করলে এর সঠিকতা পাই না। তাহলে নদ এবং নদীর সম্পর্কে ব্যাখ্যা বা সঠিক উত্তর দেওয়ার জন্য তাহলে আমরা দেখি কোনটা সঠিক হতে পারে।
না দেবেন নদী আসলে এটি ব্যাকরণগত নাম কোন উৎপত্তিগত বা উৎপত্তিস্থল আলাদা বা শাখা আছে শাখা নেই এ ধরনের কোন ব্যাপার নয়। আসল ব্যাপারটা হল মদ এবং নদীর নামের ক্ষেত্রে বা ব্যাকরণগত কারণেই নদ এবং নদী আলাদা হয়ে থাকে। নদ এবং নদী এই দুইয়ের সাথে শাখা বা না থাকা নিয়ে কোন কারণ নয়। এই দুইয়ের মাঝে পার্থক্য হল ব্যাকরণগত। বাংলা, হিন্দি , ফারসি ইত্যাদি ভাষার ক্ষেত্রে , পুরুষবাচক শব্দ সাধারণত অ-কারান্ত এবং নারীবাচক শব্দ আ-কারান্ত বা ই , ঈ-কারান্ত হয় ।যেমনঃ রহিম (অ-কারান্ত) -রহিমা (আ-কারান্ত, নামের শেষে আ আছে ) , রজক (অ-কারান্ত) – রজকী ( ঈ-কারান্ত, নামের শেষে ঈ তেমনিভাবেঃ ফুল-ফুলি, কুমার-কুমারী, নদ-নদী ইত্যাদি।
তাই যে সকল ‘নদীর’ নাম পুরুষবাচক অর্থাৎ অ ও উ -কারান্ত করে তারা ‘নদ’ আর যে সকল ‘নদীর’ নাম নারীবাচক অর্থাৎ আ-কারান্ত বা ঈ , ই-কারান্ত তারা নদী। যেমনঃ কপোতাক্ষ, ব্রম্মপুত্র, নীল,দামোদর,শংখ, আমাজন, সবই নদের নাম, যমুনা,পদ্মা,মেঘনা,ভলগা,আত্রাই,ইছামতি,মধুমতি, ভাগিরথী সবই নদীর নাম । তাই বলা যায় যে ব্রহ্মপুত্র নদের শাখা নদী থাকলেও এটি নদ, এবং একই কারণে নীল নদ হয়। এবং আমাজানকে অনেকে নদী বললেও এটি আসলে নদ। নদীর নাম অ ও উ -কারান্ত দেখবেন , নিশ্চিন্তে তাকে ‘নদ’ বলুন , আর আ,ই ও ঈ-কারান্ত দেখবেন নিশ্চিন্তে ‘নদী’ বলুন। তাহলে আজকে আমরা আমাদের এই পোস্টে নদী এবং নদ সম্পর্কিত ধোঁয়াশা সকলের কাছে দৃশ্যমান হলো বলে আমার অনুমান।
আমরা সকলেই আজ থেকে বা এই পোস্ট পড়ার পর থেকে নদী এবং ননদকে আলাদা করার বিষয়ে আগের সেই চিরাচরিত সংজ্ঞা গুলি দেবো না। আমরা ওপরের নিয়মগুলি দেখে তারপর বিচার করব কোনটি নদ এবং কোনটি নদী। তাহলে আপতো দৃষ্টিতে নদ এবং নদীর কোন উৎপত্তিগত নামের পার্থক্য নেই শুধুমাত্র নামের কারণেই নদ এবং নদী হয়ে থাকে।