শব্দ কাকে বলে

শব্দ হলো অর্থপূর্ণ ধ্বনি বা ধনী সমষ্টি। ধ্বনির অর্থপূর্ণ মিলন ঘটলে তাকে বলা হয় শব্দ। তাই অর্থপূর্ণ শব্দ তৈরি করতে হলে ধনী বা ধ্বনির লিখিত প্রতীক বা প্রতীক চিহ্ন গুলো এমনভাবে সাজাতে হবে যাতে করে তার একটি অর্থ থাকে। ধ্বনির অর্থপূর্ণ মিলনের শব্দ গঠিত হয়। যে ধ্বনির অর্থ নেই তা শব্দ হতে পারেনা। এই ধ্বনি বা বর্ণগুলোর আলাদা কোন অর্থ নেই আবার একসঙ্গে করলেও তাদের কোন অর্থ হয় না। তাই মকল শব্দ হয় না। কিন্তু এই ধ্বনি বা বর্ণগুলোকে যদি নিজের মতো করে সাজাই তবে অবশ্যই একটি শব্দ হবে যেমন কমল একটি শব্দ আবার কলম একটি শব্দ তাই এই দুটিকে বর্ণগুলিকে অর্থপূর্ণ ভাবে সাজানোর কারণে শব্দ তৈরি হয়েছে। কমল অর্থ পদ্মফুল তাই এটি শব্দ আবার কলম বলতে আমরা লেখার উপকরণকে বুঝে থাকি তাই এটিও একটি শব্দ। সুতরাং এ কথা বলা যায় যে কমল ও কলম একই ধ্বনি সমষ্টির দুইটি অর্থবোধক শব্দ। তাই এগুলো শব্দের উদাহরণ হিসেবে বলা যেতে পারে। শব্দ দিয়েই বাক্য গঠিত হয়।

শব্দ যখন বাক্যে ব্যবহৃত হয় তখন তাকে পদ বলে থাকে। শব্দ খুব ছোট হতে পারে আবার অনেক বড় হতে পারে। ছোট শব্দ হিসেবে বলতে পারি এ, ও, কে, এই, কই, বাবা ইত্যাদি। আবার বড় শব্দের উদাহরণ হতে পারে বিদ্যালয় হাসপাতাল সাংবাদিক ইত্যাদি। আমরা বড় এবং ছোট দুই ধরনের শব্দই দেখে নিতে পারলাম। বাংলা ভাষায় রয়েছে অজস্র শব্দ। যুগ যুগ ধরে অজস্র শব্দ জমেছে বাংলা ভাষার শব্দ ভাণ্ডারে। বাংলা একটি জীবন্ত ভাষা। প্রতিটি সজীব ভাষার ধর্মই হল নদীর স্রোতের মতো বারবার সেধারা বদল করে। পুরনো পথ ছেড়ে নতুন পথে বইয়ে চলা। যুগে যুগে ভাষার শব্দ বদলাতে থাকে। অনেক শব্দ হারিয়ে যায় আবার নতুন শব্দ জন্ম নেয়। শব্দের এই ইতিহাস খুবই বিচিত্র ও চিত্রকর্ষক।

এর পেছনে লুকানো আছে বিভিন্ন যুগের সামাজিক রাজনৈতিক ও বাস্তব অতি বাস্তব নানান কাহিনী। বাংলা ভাষার শব্দ সংখ্যা যেমন বৃত্তান্ত কম নয় তেমনি এই ভাষার সব শব্দ খাঁটি বাংলাও নয়। তাই বাংলা ভাষায় ব্যবহৃত শব্দের সঙ্গে পরিচিত হতে হলে প্রথমেই দৃষ্টি দিতে হবে শব্দের উৎসের দিকে। বর্তমানে বাংলা ভাষায় যে শব্দভাণ্ডার ব্যবহৃত হয় তা বহুদিন ধরে দেশি-বিদেশি অগণিত শব্দের সমাবেশের সমৃদ্ধ হয়ে উঠেছে। এবার অতিথি ইতিহাসের দিকে একটু দৃষ্টি দেওয়া যাক হাজার হাজার বছর আগে কিংবা তারও আগে বৃহত্তর বাংলা নামে ভূখণ্ডটি একসময় সমুদ্রের তলদেশে নিমজ্জিত ছিল। তখন তার কোন অস্তিত্বই ছিল না।

কালকে আমি ভৌগোলিক ক্রিয়া প্রক্রিয়ায় বিশাল এই খন্ড দ্বীপের মত সমুদ্র থেকে জেগে ওঠে। অতঃপর কখনো এই ভূখণ্ডে জনবসতি শুরু হয়েছিল তা বলা খুবই কঠিন হয়ে যায়। অনুমান করা হয় প্রায় সাড়ে সাত হাজার বছর আগে বঙ্গ জনগোষ্ঠী প্রাচীন বাংলাদেশের বসতি স্থাপন শুরু করেন। এই বঙ্গ থেকেই নাকি বাংলা। তারপর সেই বিরাট ভূমিতে এসেছে নানা জাতের নানা বর্ণের নানা ধর্মের মানুষ। সবাই বহিরাগত। তাই বহিরাগত নানা গোষ্ঠীর নানা বর্ণ নানা ভাষা এসে আমাদের এই বাংলা ভাষার শব্দ ভান্ডার কে সমৃদ্ধ করেছে। এখন তাহলে দেখা যাক শব্দ কাকে বলে।

শব্দ: মানুষের মুখনিঃসৃত একবার একাধিক অর্থবোধক ধ্বনি বা ধ্বনি সমষ্টিকে শব্দ বলে। আরো সহজ করে বলা যায় যে একবার একাধিক ধনী বা বর্ণ মিলিত হয়ে যদি একটি অর্থ প্রকাশ করে তবে তাকে শব্দ বলে। যেমন- মেঘনা একটি শব্দ। এই শব্দটি উচ্চারণের সাথে সাথে আমাদের চোখের সামনে একটি নদীর ছবি ভেসে ওঠে। এরূপ সিলেট আরেকটি শব্দ এবং এটি একটি স্থানকে চিহ্নিত করে। সুখ শব্দটি দ্বারা আমরা মনের একটি বিশেষ অবস্থাকে বুঝে থাকি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *