দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরবর্তী সময়ে জাতিসংঘ নামক আন্তর্জাতিক সংগঠনটি প্রতিষ্ঠিত হয়। আর এই সংগঠনটি বিশ্বের জাতি সমূহের একটি সংগঠন। ১৯৪৫ সালের ৫১ টি রাষ্ট্র নিয়ে আন্তর্জাতিক এই সংগঠনের যাত্রা শুরু হয়েছিল। আর এই সংগঠনটির প্রধান উদ্দেশ্য ছিল আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আইন, নিরাপত্তা, অর্থনৈতিক উন্নয়ন, সামাজিক অগ্রগতি এবং মানবাধিকার বিষয়ে পারস্পরিক সহযোগিতা র পরিবেশ সৃষ্টি করা। তারই পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশের মুক্তি যোদ্ধে বিশ্বের বৃহৎ শক্তিশালী দেশ গুলোর বিশেষ ভূমিকা ছিল এবং বিশ্বের দেশগুলোর অভিভাবক হিসেবে জাতি সংঘের ভূমিকা ছিল গুরুত্বপূর্ণ। তাই আমাদের অনেক সময় অনেক ক্ষেত্রেই মুক্তিযুদ্ধের সময় জাতিসংঘের মহাসচিব কে ছিলেন এ প্রশ্নটির মুখোমুখি হতে হয়। তাই আপনারা এ প্রশ্নের উত্তরটি সম্পর্কে জেনে নিতে অনেকেই বেশ আগ্রহী। তাই আমরা আপনাদের জন্য এ প্রশ্নের সঠিক উত্তরটি সম্পর্কে আমাদের আজকের পোষ্টেটিতে জানিয়ে দিব।
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ও বিশেষ ভূমিকা পালন করেন বিশ্বের অন্যতম আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান জাতিসংঘ। যুদ্ধ শুরু হওয়ার আগে জাতিসংঘ যে কোনো ভাবে এই যুদ্ধকে এরিয়ে যেতে চেয়েছিল। কিন্তু যখন যুদ্ধ শুরু হয়ে যায় একেবারে এর প্রেক্ষাপট ছিল ভিন্ন। পুরো দমে যখন বাংলাদেশ যুদ্ধ শুরু হতে লাগলো বাংলাদেশ থেকে প্রায় এক কোটি শরণার্থী পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছিল। তখন জাতি সংঘ বাংলাদেশের শরণার্থীদের কে সাহায্য করার জন্য বিভিন্ন ধরনের ত্রান সহায়তা পাঠান। আর সেই সময় ভারতীয় প্রতিনিধি সমর সেন বাংলাদেশের শরণার্থীদের জন্য জাতি সংঘের বিভিন্ন দেশ থেকে ত্রান সহায়তা প্রার্থনা করেন। এ ভাবে নানার দিক দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের সময় জাতিসংঘ বাংলা দেশকে বিশেষ সহায়তা প্রদান করেছিলেন।
বাংলাদেশের যুদ্ধের সময় অর্থাৎ যুদ্ধের প্রথমদিকে ১৯৭১ সালের মে মাসে জাতিসংঘের বিভিন্ন দেশের কাছ থেকে বাংলাদেশের শরণার্থীদের জন্য বিশেষ সহায়তা চান। আর তারই প্রেক্ষাপটে আন্তর্জাতিক এই প্রতিষ্ঠানটি বাংলাদেশের শরণার্থীদের জন্য ২৬ কোটি ৩০ লাখ ইউ এস ডলার সহায়তা প্রদান করেছিলেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় জাতিসংঘের মহাসচিব বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের জন্য নানান ধরনের ত্রাণ সহায়তা করেন। তাই মুক্তিযুদ্ধের সময় জাতিসংঘের মহাসচিব কে ছিলেন এ প্রশ্নের উত্তরটি অনেকে জেনে নিতে ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় জাতিসংঘের মহাসচিব ছিলেন উ থান্ট। তিনি ১৯৬১ থেকে ১৯৭১ সাল পর্যন্ত এ দায়িত্বে ছিলেন। তিনি এশিয়া মহাদেশ থেকে নির্বাচিত জাতি সংঘের প্রথম মহাসচিব। তিনি ছিলেন একজন মায়ানমারের নাগরিক। জাতিসংঘের তৃতীয় মহাসচিব হিসেবে এ দায়িত্ব গ্রহণ করেছিলেন তিনি।