প্রথম শহীদ বুদ্ধিজীবী কে

অনেক ত্যাগ তিতিক্ষার পরে আমাদের এই স্বাধীনতা অর্জন। আর এক সাগর রক্তের বিনিময়ে আমাদের এই দেশের স্বাধীনতা। ৩০ লক্ষ শহীদের বিনিময়ে বাঙালি জাতি বাংলা দেশকে একটি স্বাধীন দেশ হিসেবে বিশ্বের বুকে উন্মোচন করতে পেরেছে। আর তাই ১৯৭১ সালের ডিসেম্বর মাসে স্বাধীনতা যুদ্ধের শেষ পর্যায়ে এসে পাকিস্তান বাহিনী যখন বুঝতে শুরু করে যে তাদের এই যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়া অসম্ভব তাদের পরাজয় নিশ্চিত ,তখন তারা নবগঠিত দেশকে সাংস্কৃতিক, সামাজিক ও শিক্ষাগত দিক থেকে দুর্বল এবং পঙ্গু করে দেয়ার জন্য পরিকল্পিত ভাবে এদেশের বুদ্ধি জীবীদের হত্যা করে।

আর তাই অনেকেই জানতে আগ্রহী প্রথম শহীদ বুদ্ধিজীবী কে। তাছাড়া একজন স্বাধীন দেশের নাগরিক ও বাঙালি জাতি হিসেবে এই প্রশ্নের উত্তরটি জেনে থাকা উচিত। তাই আপনাদের সুবিধার জন্য আমরা আমাদের আজকের পোস্টটিতে আপনাদের কাঙ্খিত এই প্রশ্নের উত্তরটি সম্পর্কে জানিয়ে দেব। আমরা প্রতিনিয়ত এই ধরনের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো সম্পর্কে আমাদের ওয়েব সাইডে প্রকাশিত করি।

স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় এদেশের প্রতিটি মানুষ সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণের মাধ্যমে এ দেশ থেকে শত্রুমুক্ত করতে পেরেছিল বাঙালিরা। আর এই স্বাধীনতার যুদ্ধে যখন পাকবাহিনীরা নিশ্চিত পরাজয় বুঝতে পারে তখন ডিসেম্বরের ১০ তারিখ হতে বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ডের প্রস্তুতি নেওয়া হতে থাকে। মূলত ১৪ ডিসেম্বর পরিকল্পনার অনুযায়ী নির্মম এই হত্যাকাণ্ড চালায়। আর এই হত্যাকাণ্ডে অধ্যাপক, সাংবাদিক, শিল্পী, প্রকৌশলী, লেখক-সহ চিহ্নিত বুদ্ধিজীবীদের পাক বাহিনীরা এবং তাদের দোসরেরা অপহরণ করে নিয়ে যায়। সেদিন প্রায় দুইশত জনের মতো বুদ্ধিজীবীদের তাদের বাসা হতে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়। তাঁদের চোখে কাপড় বেঁধে পাখির মত গুলি করে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। যা বাংলার ইতিহাসে একটি নির্মম কাহিনী।

বাঙালি জাতি এমন একটি জাতি কোন আঘাত প্রতিঘাতী এই জাতিকে দাবিয়ে রাখতে পারেনি সবকিছু উপেক্ষা করে ১৬ ডিসেম্বর বিজয় ছিনিয়ে নিয়ে এসেছে বাঙালিরা। তবে এই যুদ্ধে অনেক কিছু হারাতে হয়েছে বাঙালি জাতিকে। আর এই যুদ্ধকে আরো ত্বরান্বিত করেছে এদেশের এ শহীদ হওয়া বুদ্ধিজীবীরা। আর এদেশের প্রথম শহীদ বুদ্ধিজীবী হলেন প্রফেসর ড.শামসুজ্জোহা। তিনি পাক হানাদারদের হাতে নিহত প্রথম বাংলাদেশি বুদ্ধিজীবী। তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন প্রক্টর ও রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ছিলেন। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর হাত থেকে তার বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের বাঁচাতে তিনি শহীদ হয়েছিলেন।

তিনি বাংলা ভাষা আন্দোলনের সময় প্রত্যক্ষভাবে এই আন্দোলনের সাথে নিজেকে যুক্ত করেছিলেন। আর তাই বাংলাদেশের প্রথম শহীদ বুদ্ধিজীবী হিসেবে তাকে স্বীকৃতি প্রদান করা হয়। তার এই অবদান বাঙালি জাতি কখনো ভুলবেনা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *