সম্পদ কাকে বলে

বাস্তবে আমরা সাধারণত সম্পদ বলতে বুঝে থাকি একজন ব্যক্তির কাছে যে অর্থবোধক বা অর্থকারী বিভিন্ন জিনিস থাকে সেগুলিকেই তার সম্পদ বলা হয়। কিন্তু অর্থনীতিতে সম্পদ আলাদা কিছু হয়ে থাকে। আজকে আমরা এ সম্পদ কাকে বলে এ নিয়ে এখন আলোচনা করব। তাই আমরা বলতে পারি যে কোন উপাদান বা উপকরণকে যখন তার উপযোগ কে কাজে লাগিয়ে মানুষের বিভিন্ন ধরনের উপকার করা হয় তখন তাকে সম্পদ বলা হয়ে থাকে। যখন সেই উপযোগী যদি মানুষের উপকারে না আসে তখন তাকে সম্পদ হিসেবে গণ্য করা হবে না। উদাহরণ হিসাবে আমরা বলতে পারি পানি আমাদের জাতীয় সম্পদ। পানির অপর নাম জীবন। কিন্তু অতিরিক্ত পানি যখন আমাদের বিভিন্ন অঞ্চল একের পর এক প্লাবিত করে তখন সেই পানিকে আর সম্পদ বলা হবে না। তখন পানি সম্পদ না যতক্ষণ পর্যন্ত পানি মানুষের উপকারে থাকছে উপকারে লাগছে বা উপকার করে যাচ্ছে ততক্ষণ পর্যন্ত পানি সম্পদ থাকে কিন্তু অতিরিক্ত পানি বা বন্যার পানি কখনো সম্পদ হতে পারে না।

তাই কোন বস্তু মানুষের সম্পদ হয়ে ওঠার জন্য মানুষের অভাবকে বা চাহিদার অভাবকে পূরণ করতে হবে বিভিন্ন বিশেষজ্ঞ এবং বিজ্ঞানীরা তাদের নিজেদের মতো করে সম্পদের বিভিন্নভাবে বর্ণনা দিয়েছেন বা সম্পদকে বিশ্লেষণ করেছেন। তাহলে সে সকল বিশেষজ্ঞ এবং বিজ্ঞানীদের বা অর্থনীতিবিদদের সেই আলোচনা বা সম্পদ কাকে বলে তাদের ধারণা এখানে উল্লেখ করতে পারি। তাদের মধ্যে অধ্যাপক জি মারমেদ এর মতামত হচ্ছে- “কোন পদার্থকে বোঝায় না, তবে ঐ বস্তুর মধ্যে কার্যকর শক্তি নিহিত থাকে তাকে সম্পদ বলে”।

আবার এনসাইক্লোপিডিয়া অব দ্য সোশ্যাল সায়েন্সে তারা সম্পদের সংজ্ঞা দিতে গিয়ে বলেছেন – “সম্পদ হলো মানুষের পরিবেশের সেই সমস্ত বিষয় সমূহ, যা মানুষের চাহিদা পূরণ করে ও সামাজিক উদ্দেশ্য সাধন করে বা উদ্দেশ্য সাধনে সহায়তা করে। তাই আমরা বলতে পারি যে কোন উপাদান বা উপকরণ যখন উপযোগী তাকে কার্যকর করে তোলে বা মানুষের জন্য কার্যকর করে তোলে এবং মানুষের বিভিন্ন চাহিদা পূরণ করে থাকে তখন সেই উপযোগ কে অবশ্যই সম্পদ বলা হয়। মানুষের অভাব মোচন বা চাহিদা পূরণ না হলে সেই উপযোগ কে সম্পদ বলা যায় না। যেমন আমরা বলতে পারি যে আমার চাহিদা পূরণের অতিরিক্ত কোন সম্পদ রয়েছে যেমন আমার দুইটি শার্টের প্রয়োজন কিন্তু আমার পাঁচটি সাত আছে তাহলে এই দুইটি শার্ট আমার সম্পদ বাকি তিনটি শার্ট আমার সম্পদ হতে পারে না।

এদিকে আবার অধ্যাপক জুমার ম্যান সম্পদের সংজ্ঞা দিয়েছেন এভাবে যে- “সম্পদ বলতে কোন বস্তু বা পদার্থ কে বোঝায় না, ওই বস্তু বা পদার্থের মধ্যে যে কার্যকর শক্তি নিহিত থাকে তাকেই সম্পদ বলে”। তাই আমরা সম্পদ কাকে বলে সেটিকে বলতে গিয়ে অবশ্যই এনসাইক্লোপিডিয়া অব দ্য সোশ্যাল সায়েন্সের সম্পদের সংজ্ঞাকে অবশ্যই মান্যতা প্রদান করতে হয়। তাদের সন্ধ্যায় বলা হয়ে থাকে বা উল্লেখ করা হয়েছে যে মানুষ এর চাহিদা পূরণ করেও সামাজিক উদ্দেশ্য সাধন করে বা উদ্দেশ্য সাধনে সহায়তা করে তাই হল সম্পদ। ১৯৯২ সালে ব্রাজিলের রিওডি জেনিরো অনুষ্ঠিতব্য বসুন্ধরা সম্মেলনে সম্পদের সংজ্ঞা দিতে গিয়ে সেখানকার অর্থনীতিবিদ রাজ্যের সংজ্ঞা প্রদান করেছেন বা যে সংজ্ঞা নির্ধারণ করা হয়েছে তা হলো যা কিছু তার কার্যকারিতার মাধ্যমে মানুষের চাহিদা পূরণের সঙ্গে সঙ্গে পৃথিবীর জৈব পরিমণ্ডলের রক্ষণাবেক্ষণ কেউ সুনিশ্চিত করে, তাকেই সম্পদ বলা হয়।

তাহলে আমরা দেখতে পাই বিভিন্ন সংগঠনের বিভিন্ন অর্থনীতিবিদের বিভিন্ন বিজ্ঞানীর সম্পদ সম্পর্কিত বিভিন্ন সংজ্ঞা প্রদান করেছেন তারা। এবং সকলেই একটি কথা নিশ্চিত করেছেন যে সেটা হল মানুষের অভাব পূরণের পর চাহিদা মোতাবেক অভাব পূরণের পর সেটি পৃথিবীর কল্যাণেও আসতে হবে তবেই তাকে সম্পদ বলা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *