আমরা জানি চার বাবুদারা সীমাবদ্ধ ক্ষেত্রকে চতুর্ভুজ বলা হয়। অর্থাৎ চারটি রেখাংশ দ্বারা আবদ্ধ চিত্রই হলো চতুর্ভুজ ক্ষেত্র। বিভিন্ন ধরনের চতুর্ভুজ রয়েছে। এগুলি সব গলে চার বাহু দ্বারা সীমাবদ্ধ ক্ষেত্র। তবে বিভিন্ন চতুর্ভুজের বিভিন্ন নাম রয়েছে এগুলি হল যথাক্রমে আয়তক্ষেত্র বর্গক্ষেত্র রম্বস ক্ষেত্র ট্রাপিজিয়াম ক্ষেত্র সামান্তরিক ক্ষেত্র ইত্যাদি। ঐতিহাসিক গ্রাম মনে করেন সর্বপ্রথম প্রাচীন মিশরেই আনুমানিক আজ থেকে চার হাজার বছর আগেই জ্যামিতির উদ্ভব হয়েছিল। জ্যামিতি বা Geometry গণিত শাস্ত্রের একটি প্রাচীন শাখা। ‘Geometry ‘ শব্দটি গ্রীক Geo- ভূমি(Earth) ও metrein- পরিমাপ (measure) শব্দের সমন্বয়ে তৈরি হয়েছে। তাই জ্যামিতি শব্দের অর্থ ভূমি পরিমাপ। আমরা সব সময় কিছু জ্যামিতিক চিত্র বা আকৃতি নিয়েই কাজ করে থাকি। যেমন বই বাকশো ঈদ ফুটবল ইত্যাদি। এগুলা কে ঘনবস্তু বলা হয়ে থাকে।
এই ঘনবস্তু আয়তাকার বর্গাকার গোলাকার ও অন্যান্য আকারেরও হতে পারে। ঘনবস্তুর দৈর্ঘ্য প্রস্থ ও উচ্চতা সকলেই আছে। একটি আয়তাকার ঘনবস্তু এর মোট ছয়টি আয়তাকার পৃষ্ঠ বা তল থাকে যাদের প্রত্যেকটি একটি আয়তক্ষেত্র হয়ে থাকে। পরস্পর বিপরীত পাশের পৃষ্ঠোদয় সমান ও সমান্তরাল। কাজেই পরস্পর বিপরীত পাশে দুইটি পৃষ্ঠের ক্ষেত্রফল সমান হয়ে থাকে। বর্গাকার ঘনবস্তুর মোট ছয়টি পরস্পর সমান বর্গাকার পৃষ্ঠ বা তল থাকে যাদের প্রত্যেকটি এক একটি বর্গক্ষেত্র। আবার পরস্পর বিপরীত পৃষ্ঠ দয় সমান্তরাল। বর্গাকার ঘনবস্তুকে ঘনক বলে অভিহিত করা হয়। পরস্পর দুইটি করে পৃষ্ঠের সেদ এখান থেকে ঘনকের ধার বা বাহু বলা হয়ে থাকে। ঘনকের সকল ধার বা বাহু পরস্পর সমান হয়।
কাজেই ঘনকের সকল পৃষ্ঠের ক্ষেত্রফল পরস্পর সমান হবে। চতুর্ভুজের চারটি বাহু দেওয়া থাকলে নির্দিষ্ট কোন চতুর্ভুজ আঁকা যায় না। চতুর্ভুজ অঙ্কনের জন্য আরো কয়েকটি উপাত্তের প্রয়োজন হয়। চতুর্ভুজের চারটি বাহু চারটি কোণ এবং দুইটি কর্ণ এই মোট দশটি উপাত্ত আছে। একটি চতুর্ভুজ আঁকতে পাঁচটি অনন্য নিরপেক্ষ উপাত্তের প্রয়োজন হয়। যেমন কোন চতুর্ভুজের চারটি বাহু ও একটি নির্দিষ্ট কোণ দেওয়া থাকলে চতুর্ভুজটি আঁকা সম্ভব হবে। চতুর্ভুজ অঙ্কনের পাঁচটি উপাত্ত জানা থাকলে নির্দিষ্ট চতুর্ভুজ আঁকা সম্ভব হবে। নিম্নে এই পাঁচটি উপাত্ত দেওয়া হলো।
(ক) চারটি বাহু ও একটি কোণ (খ) চারটি বাহু ও একটি কর্ণ
(গ) তিনটি বাহু ও দুইটি কর্ণ (ঘ) তিনটি বাহু ও এদের অন্তর্ভুক্ত দুইটি কোণ। (ঙ) দুইটি বাহু ও তিনটি কোণ ।
তাহলে এখন আমরা বিভিন্ন চতুর্ভুজ গুলি কাকে বলে সেই গুলি দেখে নিতে পারি।
সামান্তরিক: মে চতুর্ভুজের বিপরীত বাহুগুলো সমান ও সমান্তরাল হলে তাকে সামন্তরিক বলে। সামান্তরিকের বিপরীত বাহু পরস্পর সমান কিন্তু কোণগুলো সমকোণ নয়।
বর্গক্ষেত্র: বর্গ এমন একটি আয়ত যার সন্নিহিত বাহুগুলো সমান। অর্থাৎ বর্গ এমন একটি সামান্তরিক যার প্রত্যেকটি কোন সমকোণ এবং বাহুগুলো সমান। বর্গের সীমাবদ্ধ ক্ষেত্রকে বর্গক্ষেত্র বলা হয়। যেহেতু বর্গক্ষেত্রের বাহুগুলো সমান তাই বর্গক্ষেত্রের ক্ষেত্রফল হবে=(বাহু ×বাহু) বর্গ একক।
রম্বস: সামান্তরিকের শীর্ষগামী বাহুদ্বয় যদি সমান হয় এবং যদি একটি কোণও সমান না হয়ে থাকে তবে তাকে রম্বস বলা হয়। রম্বসের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য তথ্য গুলি হল-
চার বাহু সমান কিন্তু কোণগুলো সমকোণ নয়।
বিপরীত কোন দায় পরস্পর সমান এবং কর্ণদ্বয় অসম্মান। কর্ণদ্বয় পরস্পরকে সমকোণে সমদ্বিখণ্ডিত করে।
ঘুড়ি: যে চতুর্ভুজের দুই জোড়া সন্নিহিত বাহু সমান, একে ঘুড়ি বলা হয়।
ট্রাপিজিয়াম: যে চতুর্ভুজের একজোড়া বিপরীত বাহু সমান্তরাল একে ট্রাফিক জ্যাম বলা হয়। ট্রাপিজিয়ামের সীমাবদ্ধ ক্ষেত্রের দশজন ক্ষেত্র বলে।
নানা ধরনের চতুর্ভুজ সম্পর্কিত সকল তথ্যগুলি আমরা দেখতে পেলাম। তাহলে চলুন দেখা যাক আর তো কাকে বলে।
আয়ত কাকে বলে: যে সামান্তরিকের একটি কোণ সমকোণ তাই আয়ত। ভারতের চারটি কোণ সমকোণ হয় এবং আয়তের সীমাবদ্ধ ক্ষেত্রকে আয়তক্ষেত্র বলে।