মুসাফির কাকে বলে

আমরা মানুষেরা সবসময়ই কোথাও না কোথাও ভ্রমণ করে থাকি। এই ভ্রমণ কখনো কখনো দেশের মধ্যে হয়ে থাকে আবার কখনো কখনো এই ভ্রমণ অনেক দূর পর্যন্ত হতে পারে। অর্থাৎ বর্তমানে যখন যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো অর্থাৎ উন্নত পৃথিবীতে উন্নত জাতের ব্যবস্থা তাই মানুষ খুব অল্প সময়ের মধ্যেই অনেক দূর পর্যন্ত যেতে পারে। মানুষকে যদি পাখির সাথে তুলনা করা হয় তাও হতে পারে কারণ মানুষ এখন এখানে কিছুক্ষণ পর আবার অন্য জায়গায় চলে যেতে পারে তার যানবাহনের দ্বারা। কিন্তু এত উন্নত জীবনযাত্রা মানুষের ছিল না। থাকা আবিষ্কারের পূর্ব পর্যন্ত মানুষকে শুধু এটাই এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় যেতে পারতো। তখন মানুষ খুব দূরে অল্প সময়ের মধ্যে যেতে পারত না।

তখন তাদেরকে যেতে হলে বা বেশিদূর যেতে হলে সময় নিয়ে বের হতে হতো সেটি হতে হতো হয়তো বা একদিন এক সপ্তাহ এক মাস এবং এক বছরও লেগে যেত পৃথিবীর এদিক থেকে ওদিকে বা এই ভ্রান্ত থেকে ওই ভ্রান্ত যাওয়ার জন্য। অর্থাৎ মানুষ এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় যাওয়ার জন্য যখন বের হয় তখন তাকে মুসাফির বলা হতে পারে। আমরা জানি মুসাফির শব্দটি আরবি শব্দ।

মুসাফিরের বাংলা অর্থ হতে পারে ভ্রমণকারী। আমরা ভ্রমণ ভিসায় বিভিন্ন দেশে বেড়াতে যেতে পারি অথবা কোন কাজে অথবা চিকিৎসার্থে আমরা আর হামেশাই এক দেশ থেকে আরেক দেশে ভ্রমণ করে থাকি।আর যখন আমরা এক দেশ থেকে আরেক দেশে ভ্রমণ করি তখন আমরাই হয়ে যাই মুসাফির। অর্থাৎ নিজের এলাকা ছেড়ে অন্য এলাকায় গেলে তাকে মুসাফির বলা হয়। মানুষ যখন অন্য এলাকায় যায় তখন সেই এলাকার মুসাফির হিসেবে পরিচিত হয়। আমরা আগেই বলেছি মুসাফির অর্থ ভ্রমণকারী অর্থাৎ মুসাফির আরবি শব্দ এবং সেই আরবী শব্দের বাংলা প্রতিশব্দ হচ্ছে ভ্রমণকারী।

অর্থাৎ যখন মানুষ তিন দিনের পথ অতিক্রম করে তখন তাকে মুসাফির বলা হয়। তবে এই পথটি তিন দিনের পথ চেয়ে শুধু পায়ে হেঁটে যাবার পথ এটা কোন যানবাহনে চড়ে সে তিন দিনে অনেক দূর পর্যন্ত যেতে পারে অর্থাৎ পৃথিবীর এই প্রান্ত থেকে ওই প্রান্ত পৌঁছে যাওয়া যায়। তাই হাঁটার পথে যদি আমরা তিন দিনের পথ অতিক্রম করি তখন তিনি সেই এলাকার মুসাফির হিসেবে বিবেচিত হবে। আমরা সব সময় একই এলাকায় বিভিন্ন যানবাহনে চড়ে অর্থাৎ একই দেশে খুব তাড়াতাড়ি এক এলাকা থেকে আরেক এলাকায় যেতে পারি কিন্তু বর্তমান যুগের মত সেই প্রাচীনকালে অর্থাৎ মহানবীর সময় এত দ্রুততার সহিত মানুষ যেতে পারত না এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায়। মহানবীর সময় বা সেই প্রাচীনকালে মানুষ যখন এক দেশ থেকে আরেক দেশে তিন দিনের পথ অতিক্রম করবে অর্থাৎ হাঁটার গতি অনুযায়ী তিন দিনের পথ অতিক্রম করলে তখন তাকে মুসাফির হিসেবে গণ্য করা হয়।

আর যদি আমরা এটা মাইলের হিসাব করি তাহলে ৪৮ মাইল দূরে গেলে অর্থাৎ নিজ এলাকা থেকে ৪৮ মাইল যদি দূরে যায় তখন তাকে সেই এলাকার মুসাফির হিসাবে গণ্য করতে হবে। আমার এলাকা থেকে যে কোন দিকে যদি ৪৮ কিলোমিটার এগিয়ে যাই বা ৪৮ কিলোমিটার পিছিয়ে যায় তখন আমি সেই এলাকার মুসাফির হিসেবে নির্বাচিত হব। আবার মুসাফির অবস্থায় নামাজ পড়ার নিয়মকে মুসাফিরের নামাজ বলা হয়ে থাকে।

হঠাৎ যদি কোন ব্যক্তি মুসাফির হয় এবং ৪৮ মাইল রাস্তা আর কিলোমিটারে বললে সেটাকে বলা হবে ৭৭. ২৩২ কিলোমিটার রাস্তা অতিক্রম করার পর যদি কোন সে লোকালয়ে যায় তখন সে সেই এলাকার মুসাফির বলে বিবেচিত হবে এবং তখন তার নামাজ পড়ার সময় নাও হয় তাহলে সেজন্য ইসলাম নিয়ে শরীয়ত মতে একটি বিধান রয়েছে। সেই বিধান অনুযায়ী নামাজ পড়ার নিয়মকে বলা হয় নিজ মুসাফিরের নামাজ পড়ার নিয়ম। তাহলে আমরা জানলাম যে যদি তিন দিনের পথ অতিক্রম করার উদ্দেশ্যে মানুষ নিজ এলাকা থেকে বের হয়ে চলতে থাকে তখন তাকে ইসলামী পরিভাষায় মুসাফির বলে গণ্য করা হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *