বাক্য কাকে বলে

মানুষের মুখ থেকে বেরিয়ে আসা অর্থপূর্ণ কতগুলো আওয়াজ বা ধ্বনির সমষ্টি হচ্ছে ভাষা। ভাষা হচ্ছে মনোভাব প্রকাশের বাহন। ভাষার মাধ্যমে মানুষ মনের ভাব অনেক বেশি অর্থপূর্ণ করে একে অপরের নিকট প্রকাশ করতে পারে। প্রাণী জগতে একমাত্র মানুষই অর্থপূর্ণ ভাষা প্রকাশে সক্ষম। মানুষ তীব্র অনুভূতি সম্পন্ন জীব। সে বুদ্ধি দিয়ে চিন্তা করে, হৃদয় দিয়ে অনুভব করে। মানুষ নিজের ভাব অন্যের মধ্যে সঞ্চারিত করে অন্য কেউ তার চিন্তা-চেতনার সঙ্গী করতে চায়। মানুষের এই মহান চেতনা বোধ থেকেই ভাষার সৃষ্টি হয়েছে বলে ধারণা করা হয়ে থাকে। মানুষের সুকুমার ভিত্তিগুলো বিশেষ করে শিল্প-সাহিত্য, কাব্য- দর্শন- বিজ্ঞান সবকিছুর মূলে রয়েছে ভাষা। মনের ভাব প্রকাশ বা ব্যক্ত করার বিভিন্ন কৌশল রয়েছে। যেমন হাতে ইশারা করে মানুষ মনের ভাব প্রকাশ করে।

চোখের ইশারা বা ইঙ্গিত অঙ্গি-ভঙ্গি ইত্যাদি দ্বারা অন্যকে কিছুনা কিছু বোঝানো যায়। তবে ব্যাপকভাবে মনের ভাব প্রকাশের জন্য মুখের ভাষাই প্রধান ও উপযুক্ত মাধ্যম। ভাষা হচ্ছে ভাব বিনিময়ের মাধ্যম। মানুষ সামাজিক জীব। তাই সে সবার সঙ্গে মিলেমিশে জীবন যাপন করতে চায়। আর সবার সঙ্গে মিশতে হলে প্রথমেই প্রয়োজন ভাবের আদান-প্রদান, এই আদান-প্রদান সংঘটিত হয় ধ্বনির মাধ্যমে। আমরা যে কথা বলি তা কতগুলো অর্থপূর্ণ ধ্বনির সমষ্টি। ধ্বনির সাহায্যে ভাষার সৃষ্টি হয়। আপনারা আমাদের ওয়েবসাইটটি ভিজিট করতে পারেন কারণ আমাদের ওয়েবসাইটের শিক্ষা বিষয়ক সকল ধরনের সকল তথ্য সকল শ্রেণীর সকল বিষয়ের প্রশ্নের উত্তরগুলি খুব সঠিক সুন্দর নির্ভুলভাবে প্রকাশ করে থাকি। তাই আপনার যে ধরনের প্রশ্নের উত্তর খুঁজবেন অবশ্যই আমাদের ওয়েবসাইট থেকে দেখলে পেয়ে যাবেন। সে কারণে আমাদের ওয়েবসাইট টি ভিজিট করে আপনারা আমাদের পাশে থাকবেন আশা করি।

ভাষার মূল উপকরণ বাক্য এবং বাক্যের মূল উপাদান শব্দ। শব্দের সঙ্গে বিভক্তি যোগ করলেই পদ তৈরি হয়। বাক্যের অন্তর্গত প্রতিটি পদ একটি বিশেষ উদ্দেশ্যে সম্পর্কযুক্ত। আর তা হলো একটি সম্পূর্ণ এবং সঙ্গত অর্থ প্রকাশের ক্ষমতা। আবার একটিমাত্র পদেও বাক্য গঠিত হতে পারে । যেমন: “থাম”। এক্ষেত্রে কর্তৃপদ (তুমি) উহ্য আছে। তবে কতগুলো পদের সমষ্টিতে বাক্য গঠিত হলেও যে কোন পদ সমষ্টি বাক্য নয়। বাক্যের বিভিন্ন পদের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক বা অন্বয় থাকা আবশ্যক। এছাড়াও বাক্যের অন্তর্গত বিভিন্ন পদ দ্বারা মিলিতভাবে একটি অখন্ড ভাব পূর্ণ রূপে প্রকাশিত হওয়া প্রয়োজন, তবে তা বাক্য হবে। অর্থাৎ কোন ভাষায় যে পথ সমষ্টি সার্থকতা থাকে এবং গঠনের দিক দিয়ে যা সম্পূর্ণ ও সম্পর্কযুক্ত তাকে ব্যাকরণের ভাষায় বাক্য বলা যায়। অর্থাৎ এক বা একাধিক পদের দ্বারা কোন বিষয়ে যখন বক্তার মনোভাব সম্পূর্ণরূপে প্রকাশিত হয় তখন তাকে বাক্য বলে। আমরা এখানে বিভিন্ন ভাষাবিদের দেওয়া বাক্যের সংজ্ঞা গুলি দেখতে পারি।

ডক্টর সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায় বলেছেন “যে পদ বা পদ সমষ্টির দ্বারা কোন বিষয়ে বক্তার ভাব সম্পূর্ণরূপে প্রকাশিত হয় সেই শব্দ বা শব্দ সমষ্টিকেই বাক্য বলে”।
ড. মুহম্মদ এনামুল হক বলেন “সুবিন্যাস্ত পদ সমষ্টির দ্বারা যদি বক্তার পুরোপুরি আকাঙ্ক্ষা প্রকাশ পায়, তবে ওই পদ সমষ্টিকে বাক্য নামে অভিহিত করা যেতে পারে”।
ডক্টর সুনীল কুমার মুখোপাধ্যায় বলেন “পরস্পর অর্থ -সম্বন্ধ বিশিষ্ট যে পথ গুলোর দ্বারা একটি সম্পূর্ণ ধারণা বা বক্তব্য বা ভাব প্রকাশ পায় সেই পথগুলোর সমষ্টিকে বাক্য বলে”।
জ্যোতিভূষণ যাকে বলেন “যথাযথ বিন্যস্তোর শব্দসমষ্টি যদি একটি সম্পূর্ণ মনোভাব প্রকাশ করে থাকে তাকে বাক্য বলে”।
বক্তার মনের ভাব সম্পূর্ণরূপে প্রকাশ না পেলে অবশ্যই সেটি বাক্য হতে পারেনা। বাক্য হতে হলে পথগুলোকে সুবিন্যাস্ত ভাবে সাজাতে হবে। সাধারণত কর্তা কর্ম ও ক্রিয়া পদ নেই বাক্য গঠিত হয়। তবে একটি বাক্যকে সার্থক করে তুলতে আরো কতগুলো গুন বা শর্ত মানতে হয়। একটি সার্থক বাক্য গঠনের জন্য নিম্নলিখিত তিনটি গুণ থাকা চাই। এই গুণগুলি হল আকাঙ্ক্ষা আসক্তি বা নৈকট্য এবং যোগ্যতা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *