বিদ্যুৎ প্রবাহ হলো মূলত্ব ইলেকট্রনের প্রবাহ কে বুঝায়। এই প্রবাহ আবার দুই রকমের হয় একটি এসি এবং অপরটি ডিসি প্রবাহ। অর্থাৎ কোন বর্তনীতে তড়িৎ প্রবাহের জন্য দরকার এর দুই প্রান্তের বিভব পার্থক্য। বর্তনীতে তড়িৎযন্ত্র এবং উপকরণ সমূহ কে শ্রেণী এবং সমান্তরাল সংযোগে সংযুক্ত করা যায়। অর্থাৎ দুইটি ভিন্ন বিভাবের ধাতবস্তুকে যখন পরিবাহী তার দ্বারা যুক্ত করি তখন তারের মধ্যে দিয়ে বিদ্যুৎ প্রবাহিত হতে পারে। তাই আধুনিক ইলেকট্রন তত্ত্ব থেকে আমরা জানতে পারি যে প্রত্যেক ধাতব পদার্থের কিছু মুক্ত ইলেকট্রন থাকে যার কারণে ওই পদার্থের মধ্যে দিয়ে মুক্তভাবে ইলেকট্রন ঘুরে বেড়াতে পারে। যখন দুইটি ভিন্ন বিভবের ধাতবস্তুকে আমরা তার দ্বারা সংযুক্ত করি তখন নিম্নবিভাবসম্পন্ন ধাতব বস্তু থেকে ঋণাত্মক আধানযুক্ত ইলেকট্রন উচ্চ বিভব সম্পন্ন ধাতব বস্তুর দিকে প্রবাহিত হতে থাকে। অর্থাৎ এই কথা বলা যায় যতক্ষণ পর্যন্ত ধাতবস্তুর মধ্যে বিভব পার্থক্য বর্তমান থাকে ততক্ষণ পর্যন্ত ঋণাত্মক আধানের এই প্রবাহ চলতে থাকে।
কোনভাবে যদি ধাতব বস্তু জয়ের মধ্যবর্তী বিভব পার্থক্য বজায় রাখা যায় তখন এই প্রবাহ নিরবিচ্ছিন্নভাবে চলতে থাকে আর যদি বিভব পার্থক্য বজায় রাখা না যায় তাহলে বিভব পার্থক্য চলবে না। ঋণাত্ম ক আধান বা ইলেকট্রনের এই প্রবাহের জন্যই মূলত তড়িৎ প্রবাহ চলতে থাকে বা তড়িৎ প্রবাহ হয়। তড়িৎ প্রবাহিত না হলে বাড়ির অথবা যে সকল যন্ত্রপাতির বৈদ্যিক প্রবাহ দ্বারা চলতে থাকে সেগুলি চলবে না। অর্থাৎ ধাতুর মধ্যে অবশ্যই বা এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্তের মধ্যে বিভব পার্থক্য থাকতেই হবে যদি না থাকে তাহলে বিদ্যুৎ প্রবাহিত হবে না বা হতে পারে না। মূলত কোন পরিবাহীর যে কোন প্রস্থচ্ছেদের মধ্যে দিয়ে একক সময়ে যে পরিমাণ আধান প্রবাহিত হয় তাকেই তড়িৎ প্রবাহ বা প্রচলিত তড়িৎ প্রবাহের দিক ইলেকট্রন প্রবাহের বিপরীত দিকে হয়।
তড়িৎ প্রবাহের এককের নাম হল এম্পিয়ার। এম্পিয়ার দ্বারা তড়িৎ প্রবাহকে মাপা যায় বা পরিমাপ করা যায়। দুই ধরনের তড়িৎ প্রবাহ হয় একটি অপর্যাপ্ত প্রবাহ বা সমপ্রবাহ বা একমুখী প্রবাহ অন্যটি পর্যাবৃত্ত প্রবাহ বা পরিবর্তিত প্রবাহ নামে অভিহিত করা হয়। এখন দেখা যাক অপর্যাবৃত্ত বা একমুখী বা ডিসি প্রবাহ কি? যখন সময়ের সাথে সাধারণত তড়িৎ প্রবাহের দিকে কোন পরিবর্তন না ঘটে অর্থাৎ যে তড়িৎ প্রবাহ সবসময় একই দিকে প্রবাহিত হয় সেই প্রবাহকে অপর্যাপৃত্ত প্রবাহ বলে।
অর্থাৎ একথা বলা যায় যে যখন তড়িৎ কোষ বা ব্যাটারি থেকে অপর্যা বৃত্ত প্রবাহ পাওয়া যায় আবার ডিসি জেনারেটর এর সাহায্যেও এই প্রকার তড়িৎ প্রবাহ উৎপন্ন করা যায় কৃত্রিম ভাবে। আমাদের প্রয়োজনে বিভিন্ন সময় এই অপর্যাপৃত্ত বা একমুখী বা ডিসি প্রবাহের তড়িৎ এর প্রয়োজন হয় যখন তখন। অর্থাৎ যে কোন অনুষ্ঠানের জন্য আমরা এই ধরনের তড়িৎ প্রবাহের ব্যবস্থা করে থাকি। দ্বিতীয়ত বলা যায় পর্যায়বৃত্ত বা এসি প্রবাহ: যখন নির্দিষ্ট সময় পর পর তড়িৎ প্রবাহের দিক পরিবর্তিত হয় সেই তড়িৎ প্রবাহকেই পর্যাবৃত্ত প্রবাহ বলা হয়ে থাকে। বর্তমান বিশ্বের সকল দেশের তড়িৎ প্রবাহই মূলত এই পর্যাবৃত্ত প্রবাহের মধ্যে পড়ে।
কারণ হিসেবে বলা যায় যে তুলনামূলকভাবে এটি উৎপন্ন এবং সরবরাহ করা সহজ এবং সাশ্রয়ী হওয়ার কারণে বেশিরভাগ দেশের বিদ্যুৎ প্রবাহই এই এসি প্রবাহ। তাই পর্যাবৃত্ত প্রবাহের উৎস জেনারেটর বা ডায়নামো। বৈদ্যুতিক প্রবাহ সম্পর্কিত বা তড়িৎ প্রবাহের প্রকারভেদ সম্পর্কিত সকল ধরনের তথ্য আমরা আমাদের এই পোস্টে বা লিখায় তুলে ধরলাম। তাহলে আমরা এখন দেখতে পারি বিভব পার্থক্য কাকে বলে?
বিভব পার্থক্য: প্রতি একক আধান কে তড়িৎ ক্ষেত্রের এক বিন্দু থেকে অন্য বিন্দুতে স্থানান্তর করতে সম্পন্ন কাজের পরিমাণ হলো ঐ বিন্দুর তড়িৎ বিভব পার্থক্য। পাঠা দুইটি বিন্দুর মধ্যে বিভব পার্থক্য না থাকলে তড়িৎ প্রবাহিত হতে পারে না। ফলে কোন আধান প্রবাহিত হবে না বা কোন কাজের সম্পন্ন হয় না।