সাধারণ ভাষায় আমরা ছোট বাচ্চাদেরকে শিশু বলে জেনে থাকি। তবে একজন বাচ্চা কত বছর পর্যন্ত শিশু হিসেবে গণ্য করা হয় বা তাদেরকে শিশু বলা হয় এর সম্পর্কে আমাদের বিস্তারিত ভাবে জানতে হলে আমাদের এই পোস্টটি আপনাদের শেষ পর্যন্ত পড়ে যেতে হবে। তাহলে আপনারা বুঝতে পারবেন শিশু কারা। কাদেরকে শিশু বলে গণ্য করা হয়। ইংরেজি ভাষার child এর প্রতিরোধ বাংলা ভাষার শিশু। এই শিশু ন্যায়া বিভিন্ন ধরনের সংজ্ঞা রয়েছে। চিকিৎসা শাস্ত্রের ভাষায় শিশুর সংজ্ঞা হলো মাতৃগর্ভে বোন থেকে শুরু করে অপনিষ্ঠ কালীন অবস্থায় সন্তানকে শিশু বলা হয়ে থাকে। তবে আবার জীববিজ্ঞানের ভাষায় শিশুর সংখ্যা অন্য রূপ। জীববিজ্ঞানের ভাষায় শিশু শব্দের অর্থ হলো নিষ্ঠুর হবার পর থেকে বয়ঃসন্ধিকালের পূর্ব পর্যন্ত সময়কে মানব সন্তানকে শিশু বলে অভিহিত করা হয়।
শিশু শব্দের আভিধানিক অর্থ হল ভূমিষ্ঠ কালীন ব্যক্তির প্রাথমিক রূপকে শিশু বলে গণ্য করা হয়। একটি রাষ্ট্রের শিশুর সংজ্ঞা হলো যে এখনো যৌবনপ্রাপ্ত হয় নাই কিংবা বয়ঃসন্ধিক্ষণে প্রবেশ করেনি তাকেই সু বলা হয়। সচারচর ভাবে ছেলে বা মেয়ে বয়স যদি ১৮ বছরের নিচে থাকে তাদেরকে রাষ্ট্রসমাজ শিশু বলে চিহ্নিত করে। আবার কখনো কখনো অনাগত সন্তান অর্থাৎ যে সন্তান এখনো মাতৃগর্ভে রয়েছে ভূমিষ্ঠ হয় নাই তাকেও শিশু বলে অভিহিত করা হয়। একজন ব্যক্তির কাছে তার সন্তান সারা জীবনই শিশুরূপে বিবেচিত হয়ে থাকে। শিশুসুলভ আচরণ আর শিশু এই দুইয়ের মধ্যে বিস্তার পার্থক্য রয়েছে। তারপরেও আমরা শিশুসুলভ আচরণকে ভালো চোখেই দেখে থাকি।
এজন্য প্রতিটি শিশুকেই সহজ সরল এবং অত্যন্ত প্রিয় হয়ে থাকে সকলের কাছেই। আবার শিশু বয়সেই যদি বড়দের মতো আচরণ করে তাহলেও সেটাকে ভালো চোখে দেখা হয় না। এ কারণে সমাজে শিশুরাই সবচেয়ে বেশি আপন হয়ে থাকে সবার কাছেই। আমাদের বাংলাদেশের জাতীয় শিশু নীতিতে 18 বছরের কম বয়সী ছেলে-মেয়েদেরকে শিশু বলে অভিহিত করা হয়েছে। শিশু অধিকার সনদ প্রত্যেক দেশের নিজস্ব আইন ও প্রথাকেও স্বীকৃতি দিয়ে থাকে। সাধারণত আমাদের বাংলাদেশের শিশুদেরকে তিন শ্রেণীতে বিভক্ত করা হয়ে থাকে। এই তিন শ্রেণীর হল পাঁচ বছরের নিচে শৈশবকাল এরপর ৬ বছর থেকে দশ বছর পর্যন্ত শিশুদেরকে শৈশবকাল বা বাল্যকাল এবং সবশেষে ১১ বছর থেকে ১৮ বছরের নিচে পর্যন্ত ছেলে-মেয়েদেরকে বা মানব সন্তানদেরকে কৈশোর কাল বলে বিবেচনা করা হয়।
১৯৯৭ সালে বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার 61 দশমিক ৭৫ মিলিয়ন ছিল শিশু। অর্থাৎ ১৮ বছরের কম বয়সী ছেলে মেয়েরা হল সমগ্র জনসংখ্যার শতকরা প্রায় 49 দশমিক ছয় ভাগ। এবং ১৪ বছরের কম বয়সি জনসংখ্যা ৬ কোটি ৩০ লক্ষ ছিল যা মোট জনসংখ্যার ৪০ দশমিক ছয় তিন ভাগ। যেহেতু প্রায় একটি দেশের অর্থাৎ আমাদের বাংলাদেশেরই মোট জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেক হলো শিশু। এবং এই শিশুরা আগামী দিনের ভবিষ্যৎ। অর্থাৎ এই শিশুদের মধ্যে থেকেই আগামী দিন কেউ দেশ চালাবে কেউ হবে শিক্ষক কেউ ডাক্তার প্রকৌশলী ইত্যাদি। তাই আমাদের প্রত্যেকেরই উচিত হবে যে প্রত্যেকটি শিশুকেই আগামী প্রজন্মের ভবিষ্যৎ কর্ণধার হিসেবে গড়ে তোলা।
যে ধরনের শিশুর যে ধরনের মেধার রয়েছে তাদেরকে সেই দিকে দক্ষ করে তোলা। প্রতিটি পরিবারের উচিত হবে তাদের শিশুদের যত্ন নেওয়া এবং ভবিষ্যতে জন্য তাদেরকে তৈরি করা। রাষ্ট্রের উচিত হবে শিশুদেরকে যাতে আগামী দিন তারা নিজ নিজ ক্ষেত্রে দক্ষ হয়ে ওঠে অর্থাৎ পরিবেশের সকল দিক থেকে তারা যেন দক্ষ হয়ে ওঠে সেই দিকে নজর দেওয়া। অর্থাৎ তাদেরকে যদি মানুষের মত মানুষ তৈরি করা যায় তাহলে আগামী ভবিষ্যৎ বা আগামী দিনের দেশ বিশ্বে মাথা উঁচু করে টিকে থাকতে পারবে। তাই প্রত্যেকটি শিশুকে গুরুত্ব দিয়ে আমাদের তৈরি করতে হবে আগামী দিনের ভবিষ্যৎ রূপে।