পৃথিবীপৃষ্ঠের উপরিভাগকে মাটি বলা হয়। অর্থাৎ পৃথিবীপৃষ্ঠের যে ভাগে মানুষ সহ সকল জীবজন্তু পশুপাখি বাস করে অথবা উদ্ভিদ জন্মায় তাকেই মাটি বলে। বিভিন্ন প্রকারের মাটি হয়ে থাকে। অর্থাৎ মাটির উপাদানের উপর ভিত্তি করে মাটিকে কয়েক ভাগে বিভক্ত করা যায়। এই ভাগ গুলি হল- এটেল মাটি দোআঁশ মাটি বেলে মাটি কাদামাটি পলিমাটি ইত্যাদি। এই মাটি বাম ঋত্বিকা হলো পৃথিবীপৃষ্ঠের অপরিভাগের নরম অংশ। এই অংশের উপরেই পৃথিবীর যত সব বা সকল স্থলজ উদ্ভিদ জন্ম নেয় এবং বেড়ে ওঠে। কৃষকরা ফসল ফলায় এই অংশের উপরই। অর্থাৎ সকল প্রাণীকুল এবং উদ্ভিদকুল এই মাটিকে সম্বল করেই বেঁচে থাকে। মাটির মধ্যে অনেক ধরনের রাসায়নিক এবং খনিজ জৈব যৌগ থেকে থাকে।
বিভিন্ন কারণে মাটির পরিবর্তন ঘটেছে। কারণ অনেক ধরনের রাসায়নিক পদার্থ এবং যৌগজৈব এই মাটির সঙ্গে মিশে মাটির প্রকৃতি বা ভূমির প্রকৃতি বিভিন্ন প্রকারের হয়ে থাকে। এই কারণে পৃথিবীপৃষ্ঠের প্রাচীন মাটি পাওয়া যায় না এটি এখন অনেক পরিবর্তিত রূপ। ভূত্বক, পানির স্তর, বায়ুর স্তর এবং জৈব স্তরের মিথস্ক্রিয়ার মাধ্যমে শিলা থেকে মাটি গঠিত হয়। মাটির প্রধানত চারটি উপাদানে গঠিত হয়। এই চারটি উপাদান হল খনিজ পদার্থ জৈব পদার্থ বায়ু এবং পানি। এগুলো শতকরা পরিমাপ আমরা নিচে দিচ্ছি-
খনিজ পদার্থ শতকরা ৪৫ পার্সেন্ট। জৈব পদার্থ শতকরা ৫% বায়ু শতকরা ২৫% এবং পানি শতকরা ২৫ পার্সেন্ট এভাবে মাটি গঠিত হয়।
এখন দেখে মাটির প্রকারভেদ গুলি
এঁটেল মাটি: এটেল মাটিতে কাদার পরিমাণ বেশি থাকে অর্থাৎ এই মাটির কণাগুলো অত্যন্ত মিহি হয়ে থাকে তাই এই মাটির পানি ধারণ ক্ষমতাও বেশি। এটেল মাটি পানি দিলে খুব নরম হয় আবার এটি সকালে অনেকটাই শক্ত হয়ে যায়।
বেলে মাটি: বেলে মাটিতে পানি ধারণ ক্ষমতা অত্যন্ত কম। কারণ বেলে মাটির কণাগুলো অনেক বড় বড় হয়ে থাকে। এ মাটির নদী পাথর ছোট ছোট বালুকণা দিয়ে গঠিত হয়। তাই এ মাটিতে পানি ধরে রাখতে পারে না বিধায় বিভিন্ন ধরনের উদ্ভিদের জন্মানোর হার এই মাটিতে খুবই কম হয়ে থাকে। মরুভূমের মাটিতে বালির ভাগ বেশি থাকে। বেলে মাটি দিয়ে বর্তমানে বিভিন্ন বিল্ডিং তৈরি বা কনস্ট্রাকশনের কাজ হয়ে থাকে। পাথর সিমেন্ট বালি মিশিয়ে কংক্রিট তৈরি করা হয় এটি খুব শক্ত হয়। এই কারণে বেলে মাটি দিয়ে আমরা ঘরবাড়ি তৈরি করে থাকি।
দোআঁশ মাটি: এ মাটিতে এটেল মাটি বালি মাটি এবং বিভিন্ন ধরনের জৈব পদার্থ থাকে বলে উদ্ভিদ জন্মানোর বা উদ্ভিদের বেড়ে ওঠার জন্য এই মাটি খুবই উপযোগী হয়ে থাকে। এ মাটিতে বাড়ি চলাচল বেশি করতে পারে সেজন্য উদ্ভিদের খাবার বা বেড়ে ওঠার প্রয়োজনীয় অক্সিজেন কার্বন ডাই অক্সাইড নাইট্রোজেন ইত্যাদি বেশি পেয়ে থাকে। তাইতো আস মাটিতে ফসল ভালো হয়। কৃষিকাজের জন্য দোআঁশ মাটি অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। দোআঁশ মাটিতে সকল ধরনেরই ফসল ফলানো সম্ভব হয়। মরুভূমি ছাড়া পৃথিবীর প্রায় সর্বত্র দোআঁশ মাটি দেখা যায়। আর দোআঁশ মাটিতে ফসল ভালো হয় এ কারণে দোআঁশ মাটির চাহিদা বা সেই এলাকায় বেশি পরিমাণে প্রাণীরা বসবাস করে থাকে।
দোআঁশ মাটি আবার দুই ধরনের হয়ে থাকে। একটি দোআঁশ মাটি এবং অপরটি বেলে দোআঁশ মাটি। বেলে দোওয়াশ মাটিতে বালির পরিমাণ বেশি থাকে বলে এ মাটি দোয়ার মাটির চাইতে ফসল জন্মানোর হার একটু কম হয়ে থাকে। তারপরেও মেলে তো আসে মাটিতে ও কিছু কিছু ফসল অত্যন্ত সুন্দরভাবে হয়ে থাকে। যেমন তরমুজ চিনা বাদাম ইত্যাদি ফসলের জন্য বেলে দোআঁশ মাটি অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। আমরা এতক্ষণে মাটির বিভিন্ন প্রকার উপাদান ইত্যাদি সম্পর্কে বিশদভাবে আলোচনা করা হলো। তাহলে এখন আমরা দেখতে পারি মাটি কাকে বলে?
মাটি: পৃথিবীর অপরিভাগের নরম অংশটি হলো মাটি। যেখানে উদ্ভিদ জন্মে এবং বিভিন্ন প্রাণীর বসবাস হয় সেটি হল মাটি।