পদার্থ বিজ্ঞান কাকে বলে

পদার্থবিজ্ঞান হলো বিজ্ঞানের একটা শাখা। তবে একথা বলা যেতে পারে যে এই শাখাটি হচ্ছে অত্যন্ত প্রাচীনতম শাখা। তার কারণ অন্য বিজ্ঞান গুলো দানা বাধার অনেক আগেই বিজ্ঞানীরা পদার্থবিজ্ঞানের গুরুত্বপূর্ণ শাখা জ্যোতির্বিদ্যা চর্চা করতে শুরু করেছিলেন অনেক আগে থেকেই। পদার্থবিজ্ঞানকে একদিকে যেমন প্রাচীনতম শাখা বলা হয় ঠিক সেভাবে আবার বলা যেতে পারে যে এটা সবচেয়ে বিজ্ঞানের মৌলিক শাখা। এবং এই মৌলিক শাখার ওপর ভিত্তি করেই বিজ্ঞানের অন্যান্য শাখা যেমন রসায়ন দাঁড়িয়েছে রসায়নের উপর ভিত্তি করে জীববিজ্ঞান দাঁড়িয়েছে আবার জীববিজ্ঞানের উপর ভিত্তি করে অন্য অনেক বিষয় দাঁড়িয়েছে। সাধারণভাবে তাই আমরা বলতে পারি যে পদার্থবিজ্ঞান বিজ্ঞানের একটি মৌলিক শাখার নাম।

পদার্থবিজ্ঞান যেহেতু বিজ্ঞানের প্রাচীনতম শাখা এবং সবচেয়ে মৌলিক শাখা শুধু তাই নয় বিজ্ঞানের অন্যান্য শাখা কোন না কোন ভাবে এই পদার্থ বিজ্ঞানের উপর অনেক অতপ্রতভাবে জড়িয়ে রয়েছে। শুধু তাই নয় পদার্থবিজ্ঞানের নানা সূত্র কে ব্যবহার করে নানা ধরনের প্রযুক্তি ও গড়ে উঠেছে সেগুলো আমাদের দৈনন্দিন জীবনে ব্যবহার করি এবং সেখান থেকে আমরা অনেক সুফলও পেয়ে থাকি। অর্থাৎ আমরা যে বলে থাকি ইউরোপের শিপ শিল্প বিপ্লবের কথা। চাকা আবিষ্কারের ফলেই ইউরোপের শিল্প বিপ্লব শুরু হয়েছিল।

এবং এই শিল্প বিপ্লব টি অবশ্যই পদার্থ বিজ্ঞানের মৌলিক শাখা কে কেন্দ্র করেই গড়ে উঠেছিল। কারণ যে ধরনের যন্ত্র ইউরোপের শিল্পকে ত্বরান্বিত করেছিল সে সকল যন্ত্র আবিষ্কার তৈরি করা সেটি পদার্থ বিজ্ঞানের উপরে দাঁড়িয়ে ছিল। এই কারণে বলা যায় যে পদার্থবিজ্ঞানী আধুনিক পৃথিবীর এই পর্যায়ে নিয়ে আসার জন্য অনেকাংশে দায়ী। তাই দৈনন্দিন জীবনযাত্রা ছাড়াও যুদ্ধের তাণ্ডব লীলা থেকে শুরু করে মহাকাশ অভিযান এরকম প্রতিটি ক্ষেত্রেই পদার্থবিজ্ঞানের ব্যবহার রয়েছে। শুধু তাই নয় জ্ঞান-বিজ্ঞানের অন্যান্য শাখা এবং পদার্থবিজ্ঞানকে একত্র করে নিয়মিতভাবে নতুন নতুন শাখা গড়ে উঠেছে। তাই আমরা পদার্থবিজ্ঞান এর ইতিহাস পড়লেই দেখব যে এটি তাত্ত্বিক এবং ব্যবহারিক বিজ্ঞানীদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় গড়ে উঠেছে। অর্থাৎ ল্যাবরেটরীতে গবেষণা করতে হলে নানা রাশিকে শুক্ষভাবে পরিমাপ করতে হয়।

পরিমাপ করার জন্য কিভাবে এককগুলি গড়ে উঠেছে সেগুলো কিভাবে পরিমাপ করতে হয় এবং পরিমাপের জন্য কি ধরনের যন্ত্রপাতি ব্যবহার করতে হয় সেগুলোও আমরা পদার্থবিজ্ঞান থেকেই পেয়ে থাকি। কোয়ান্টাম বলবিজ্ঞান এবং আপেক্ষিক তত্ত্ব ব্যবহার করে যে আধুনিক পদার্থবিজ্ঞান গড়ে উঠেছে সেগুলো হচ্ছে আণবিক ও পারমাণবিক পদার্থবিজ্ঞান, নিউক্লিয় পদার্থবিজ্ঞান, কঠিন অবস্থার পদার্থবিজ্ঞান এবং পার্টিকেল ফিজিক্স। তাই আমরা আগেই বলেছি যে পদার্থবিজ্ঞান কিংবা বিজ্ঞানের অন্যান্য শাখা কে ব্যবহার করে পৃথিবীতে নানা ধরনের প্রযুক্তি গড়ে উঠেছে। অর্থাৎ আমরা শিল্প বিপ্লব বা প্রযুক্তি বিপ্লব যাই বলি না কেন সবই পদার্থবিজ্ঞানের বদৌলতেই হয়েছে।

তাই আধুনিক পৃথিবী গড়তে পদার্থবিজ্ঞানের অবদান অনস্বীকার্য। বিভিন্ন ধরনের প্রযুক্তি ব্যবহার করে আমাদের জীবনকে অত্যন্ত সহজ এবং অর্থপূর্ণ করে তুলেছে আবার কখনো কখনো ভয়ঙ্কর কিছু প্রযুক্তি বের করে শুধু নিজের জীবন নয় পৃথিবীর অস্তিত্ব বিপন্ন করে তুলেছে এই পদার্থবিজ্ঞানের প্রযুক্তি ব্যবহার করে বা পদার্থ বিজ্ঞানীরা। আধুনিক সভ্যতা হচ্ছে বিজ্ঞানের অবদান। বিজ্ঞানের এই অগ্রগতি একদিনে রচিত হয়নি হয়েছে শত শত বছর ধরে। তাই আমাদের মনে রাখতে হবে প্রাচীনকালে তথ্যের আদান-প্রদান এত সহজ ছিল না বিজ্ঞানের গবেষণার ফলাফল হলেই একে অন্যকে জানাতে যথেষ্ট ব্যাগ পেতে হতো হাতে লিখে বই প্রস্তুত করতে হতো এবং সেই বইয়ের সংখ্যাও ছিল খুবই কম। প্রচলিত বিশ্বাসের বিরুদ্ধে কথা বলতে সাহসের প্রয়োজন ছিল।

বিজ্ঞানীদের বন্দি করে রাখা বা পুড়িয়ে মারার উদাহরণও রয়েছে আমাদের এই পৃথিবীতে। তারপরেও বিজ্ঞানের জয়যাত্রা থেমে থাকে নি এগিয়ে চলেছে এখন পর্যন্ত। এত কথা বলার পর এটি দেখা যাক যে পদার্থ কাকে বলে। তাহলে চলুন দেখি
পদার্থ: সাধারণভাবে আমরা বলতে পারি যে বিজ্ঞানের যে শাখা পদার্থ আর শক্তি এবং এই দুইয়ের মাঝে যে অন্তক্রিয়া তাকে বোঝার চেষ্টা করে সেটাই হচ্ছে পদার্থবিজ্ঞান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *