আমরা শক্তির বিভিন্ন রূপ সম্পর্কে জানি। আমাদের দৈনন্দিন জীবনে বিভিন্ন ধরনের শক্তি দেখতে পাই। এগুলোর মধ্যে হল সৌরশক্তি বায়ু শক্তি তাপ শক্তি বিদ্যুৎ শক্তি ইত্যাদি বিভিন্ন ধরনের শক্তি দেখতে পাই। তাই যেকোনো কাজ করতে হলে শক্তির প্রয়োজন হয়। পৃথিবীর সভ্যতার ইতিহাসকে সহজ ভাবে বলা যায় শক্তির ব্যবহারের ইতিহাস। মোটামুটি ভাবে বলা যায় যে কোন দেশ কতটা উন্নত সেটা বোঝার একটা সহজ উপায় হচ্ছে মাথা পতি তারা কতটুকু বিদ্যুৎ শক্তি ব্যবহার করে তার একটা হিসাব নেওয়া।
তাই পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের বিভিন্ন ধরনের শক্তির রূপ আমরা এর আগে দেখতে পাই। এই মুহূর্তে পৃথিবীর শক্তির সবচাইতে বড় উৎস হল জ্বালানি শক্তি। জ্বালানি শক্তিগুলো হল তেল গ্যাস বা কয়লা। তেল গ্যাস বা কয়লা এই তিনটি হচ্ছে ফসিল জ্বালানি। অর্থাৎ লক্ষ-কোটি বছর আগে গাছপালা মাটির নিচে চাপা পড়ে দীর্ঘদিনের তাপ আর চাপে এই জ্বালানির রূপ নিয়েছে। মাটির নিচ থেকে কয়লা তেল এবং গ্যাসকে আমরা তুলে আমাদের সহজে ব্যবহার করে থাকি। তবে শক্তির সবচাইতে সুবিধা জনক রূপ এর আগে আমরা বলেছি সেটি হচ্ছে বৈদ্যুতিক শক্তি। তবে অনেক দেশ নিউক্লিয়ার শক্তিকে ব্যবহার করছে, সেখানেও এক ধরনের জ্বালানির দরকার হয় সেই জ্বালানি হচ্ছে ইউরেনিয়াম।
তবে পৃথিবীতে যে নবায়নযোগ্য শক্তি রয়েছে সেই শক্তি দিয়ে আর বেশি দিন চলবে না তাই আমাদের নবায়নযোগ্য শক্তির উৎস খুঁজতে হচ্ছে। নবায়নযোগ্য শক্তির বড় উৎস হচ্ছে সূর্য। সৌর শক্তির অপর পৃথিবীর মানুষ এখন জোর দিচ্ছে কারণ এই শক্তি অফুরন্ত শক্তি। এই শক্তি কখনো নিঃশেষ হবে না। কিন্তু যে অনবায়নযোগ্য শক্তি আছে তা আস্তে আস্তে শেষের পথে বা ফুরিয়ে যাচ্ছে। তাই আমাদের এখন নবায়নযোগ্য শক্তির দিকে বেশি ঝুঁকতে হবে। সৌরশক্তি এখন সবচেয়ে বেশি ব্যবহারযোগ্য শক্তি। আমরা শুনে অনেকেই হয়তো অবাক হয়ে যাব যে মাত্র এক বর্গ কিলোমিটার এলাকার সূর্য থেকে আলো তাপ হিসেবে প্রায় হাজার মেগাওয়াট শক্তি পাওয়া যায়। যেটা একটা নিউক্লিয়ার শক্তি কেন্দ্রের কাছাকাছি প্রায়। সূর্য থেকে আসা আলো আর তাপের একটা অংশ বায়ুমণ্ডল শোষিত হয়ে যায় রাতের বেলা সেটা থাকে না মেঘ বৃষ্টির কারণে সেটা অনিয়ন্ত্রিত হয়।
আরেকটি শক্তি রয়েছে সেটি হচ্ছে বায়ো ফুয়েল। পৃথিবীর মানুষ বহুদিন থেকে পান করার জন্য অ্যালকোহল তৈরি করে আসছে সেটা এক ধরনের জ্বালানি। ভোটটা আখ এ ধরনের খাবার থেকে জ্বালানোর জন্য অ্যালকোহল তৈরি করা মোটামুটি একটা গ্রহণযোগ্য পদ্ধতি। রান্না করার জন্য আমরা যে তেল ব্যবহার করি সেটা ডিজেলের পরিবর্তে ব্যবহার করা যায়। পৃথিবীতে অনেক ধরনের গাছপালা আছে সেখান থেকে সরাসরি জ্বালানি তেল পাওয়া যায়।
আমরা জানি শক্তির কোন ক্ষয় নেই এটি শুধু এক রূপ থেকে অন্য রূপে পরিবর্তন হতে পারে। একটা পাথর যদি উপর থেকে ছেড়ে দিই বিভব বা স্মৃতিশক্তি কমতে থাকে এবং গতিশক্তি বাড়তে থাকে। মাটির স্পর্শ করার পূর্ব মুহূর্ত পুরো শক্তিটাই গতিশক্তিতে রূপান্তরিত হয়। পরিমাণের দিক থেকে যদি বিবেচনা করা হয় তাহলে এটা নিঃসন্দেহে বলা যায় যে পৃথিবীতে সবচেয়ে বেশি শক্তির রূপান্তর হয় তাপ শক্তি থেকে। জেনারেটরে যখন বিদ্যুৎ তৈরি হয় তখন আসলে যান্ত্রিক শক্তি ব্যবহার করে তাদের কুণ্ডলীকে চৌম্বক ক্ষেত্রে ফুরিয়ে বিদ্যুৎ শক্তিতে রূপান্তর করা হয়। ঘর্ষণের কারণে সব সময়ই তাপশক্তি তৈরি হচ্ছে সেখানে আসলে যান্ত্রিক শক্তি তাপ শক্তিতে রূপান্তরিত হচ্ছে।
আর এই তাপ শক্তি যান্ত্রিক শক্তিতে রূপান্তরিত হয়। আমরা পৃথিবীতে বিভিন্ন ধরনের যন্ত্র ব্যবহার করে থাকি। এবং এই যন্ত্র গুলির শক্তি আলাদা আলাদা হয়ে থাকে। বিভিন্ন প্রকারের যন্ত্র বিভিন্ন ধরনের কাজ করে থাকে। এ সকল যন্ত্র ব্যবহার করে আমরা বিভিন্ন ধরনের কাজ সম্পাদন করে থাকি আমাদের প্রাত্যহিক জীবনে। তাহলে এখন দেখতে পারি যান্ত্রিক শক্তি কাকে বলে?
যান্ত্রিক শক্তি: যান্ত্রিক শক্তি হলো সেই শক্তি, যা কোনো বস্তু তার স্থির অবস্থান বা গতিশীল অবস্থার জন্য লাভ করে। কাজেই, যান্ত্রিক শক্তিকে দুইভাগে প্রধানত বিভক্ত করা যায়। যথা- স্থিতিশক্তি ও গতি শক্তি।