যে পুস্তক পাঠ করলে ভাষা শুদ্ধ রূপে লিখতে বলতে এবং পড়তে পারা যায় তাকে ব্যাকরণ বলে। আবার যে পুস্তক পাঠ করলে বাংলা ভাষা শুদ্ধরূপে লিখতে পড়তে এবং বলতে পারা যায় তাকে বাংলা ব্যাকরণ বলে থাকে। বর্ণ বাংলা ব্যাকরণেরই একটি আলোচনার বিষয়। আমরা জানি ভাষার ক্ষুদ্রতম একককে ধ্বনি বলা হয়। আমাদের বাংলা ভাষায় মোট ৩৭ টি মৌলিক ধ্বনি রয়েছে। এই মৌলিক ধনী গুলোকে আবার প্রধান দুই ভাগে বিভক্ত করা যায়। যথা: স্বরধ্বনি ও ব্যঞ্জনধ্বনি। বাংলা ভাষায় ব্যবহৃত সব বর্ণকে একসঙ্গে আমরা বর্ণমালা বলি। অর্থাৎ একটি ভাষা লেখার জন্য যে বর্ণগুলো ব্যবহার করা হয় সেগুলোকে বর্ণ সমষ্টি বা সেই ভাষার বর্ণমালা বলা হয়। বাংলা বর্ণমালার মোট ৫০টি বর্ণ রয়েছে। বর্ণে বর্ণে গাঁথা মালা। আবার বর্ণ যেহেতু ধনীরই লিখিত রূপ তাই ধোনির সঙ্গে মিল রেখে বর্ণমালা কেউ দুই ভাগে ভাগ করা হয়।
বর্ণমালার এই দুই ভাগ হলো ১. স্বরবর্ণ ও ২. ব্যঞ্জনবর্ণ।
স্বরবর্ণ: স্বরধ্বনির প্রতীকবাদ চিহ্ন কে স্বরবর্ণ বলে। বাংলা স্বরবর্ণ মোট 11 টি। যেমন- অ,আ, ই ,ঈ ইত্যাদি।
ব্যঞ্জনবর্ণ: ব্যঞ্জনধ্বনির প্রতীক বা চিহ্নকে ব্যঞ্জনবর্ণ বলে। বাংলা ব্যঞ্জনবর্ণ মোট ৩৯ টি। এ ব্যঞ্জনবর্ণগুলির উদাহরণ হল- ক, খ, গ ইত্যাদি।
আমরা দেখলাম ধনী ভাষার মূল উপাদান এবং ক্ষুদ্রতম একক। আবার ভাষার বা ধোনির ক্ষুদ্রতম একক হল বর্ণ। তাই ধনী বা ভাষা তৈরি করতে হলে অবশ্যই বর্ণের প্রয়োজন আছে। তাই এ কথা বলা যায় যে বাংলা ভাষা জন্য বর্ণ একটি গুরুত্বপূর্ণ বা প্রধান উপাদান হিসেবে গণ্য করা যেতে পারে। যেহেতু আমাদের ভাষার ক্ষুদ্রতম একাকী হল বর্ণ তাই বর্ণ ছাড়া কোন ভাষা উৎপাদন হবে না।
ধ্বনি উচ্চারণের জন্য যেসব অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ব্যবহৃত হয় তাকে কথা বলার যন্ত্র বা বাগ যন্ত্র বলা হয়ে থাকে। বাকযন্ত্রের সাহায্য ছাড়া ভাষার কোন ধ্বনি উচ্চারিত হয় না। এই ধ্বনি উচ্চারণের সহায়তাকারী বাকযন্ত্র গুলো হলো- ফুসফুস, স্বরযন্ত্র, স্বরতন্ত্রী, গণনালী, ঠোঁট দাঁত তালু , মাড়ি বা দন্ত ইত্যাদি। মানুষের বাগযন্ত্র ও ফুসফুস নির্গত বায়ুর সমন্বয়ে উচ্চারিত আওয়াজকেই ধ্বনি বলা হয়। আর বর্ণ হলো ধ্বনির প্রতীক বা চিহ্ন। মানুষ কথা বলে মনের ভাব প্রকাশ করে। মানুষকেবল কথা বলেই ক্ষান্ত হয়নি সে তার মুখের কথাকে প্রতীকের মাধ্যমে প্রকাশ করে সেই কথাকে স্থায়ী রূপ দিতে শিখেছে। এক একটি প্রতীক বা চিহ্ন দিয়ে মানুষ তার ভাষা থেকে এক একটি ধ্বনিকে চিহ্নিত করে। এ রোগ এক একটি প্রতীকবার চিহ্ন কে বর্ণ বলা হয়। অর্থাৎ ধনী নির্দেশক চিহ্ন কেই বর্ণ বা ইংরেজিতে letter বলে।
এই সম্পর্কে ডঃ সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায় বলেন- লিখন কার্যে যে সমস্ত চিহ্ন দ্বারা এই সকল ধনীর নির্দেশ করা হয় সেগুলোকেই বর্ণ বলে। এই বর্ণ কানে শোনার বিষয়কে চোখে দেখার বিষয় পরিণত করে থাকে। ভাষার সবগুলো বর্ণ কে একত্রে বলা হয় বর্ণমালা। ধ্বনির বিভাজন অনুযায়ী বাংলা বর্ণমালাকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়। এইগুলোই আমরা অবশ্যই এর আগেই বলে ফেলেছি যে বর্ণ দুই প্রকার স্বরবর্ণ এবং ব্যঞ্জনবর্ণ। বাংলা বর্ণমালায় মূল বর্ণের সংখ্যা ৫০ টি হয় তবে মূল বর্ণের পাশাপাশি বাংলা বর্ণমালায় রয়েছে নানা ধরনের কার বর্ণ অন বর্ণ যুক্তবর্ণ এবং সংখ্যা বর্ণ।
মূল বর্ণগুলো স্বরবর্ণ এবং ব্যঞ্জনবর্ণ এই দুই ভাগে বিভক্ত হয়েছে সে কথাও আমরা আগেই বলে রেখেছি। তাই আমরা দেখলাম ভাষার সৃষ্টিতে বর্ণমালা অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। অর্থাৎ বর্ণ ছাড়া কোন ভাষায় উৎপন্ন হতে পারবেনা। এই কারণে ভাষার মূল হিসাবে বর্ণমালাকে বুঝে থাকি। অর্থাৎ ভাষার ভিত্তি হল বর্ণ। তাহলে এখন আমরা দেখতে পারি বর্ণ কাকে বলে?
বর্ণ: ধ্বনির প্রতীকে বর্ণ বলা হয়।