গতিশক্তি কাকে বলে

গতিশক্তি এবং স্থিতিশক্তি এই দুইটি শক্তির রূপকে পদার্থবিজ্ঞানে আলোচনা করা হয়ে থাকে। আমরা জানি যে আমাদের চারপাশে যা কিছু আছে তার মাঝে কোনটি স্থির বা স্থিতিশীল এবং কোনটি চলমান বা গতিশীল সেটি বুঝতে আমাদের কখনো অসুবিধা হয় না। আমরা যদি মনে করি কোন কিছু স্থির আছে আসলে সেটিও তার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। কারণ যেহেতু পৃথিবী গতিশীল তাই পৃথিবীর সকল বস্তি গতিশীল অবস্থান রয়েছে বলে বলা হয়ে থাকে। আমরা গাছপালা ভূমি রাস্তা ঘরবাড়ি ইত্যাদিকে আপাত দৃষ্টিতে মনে হয় স্থির রয়েছে কিন্তু যেহেতু পৃথিবী গতিশীল তাই পৃথিবীর সঙ্গে এগুলো গতিশীল অবস্থায় রয়েছে।

তাই আমাদের চোখ দিয়ে আমরা এমনভাবে দেখি যে কোন কিছু একটুখানি নড়লেই আমরা চট করে সেটা ধরে ফেলতে পারি। কাজের স্মৃতি বা গতি বলতে কী বোঝায় সেটি আমরা খুব চমৎকারভাবে অনুভব করতে পারে। গতিশীল অর্থাৎ কোন বস্তু চলমান অবস্থায় আছে তাকে আমরা গতিশীল অবস্থায় রয়েছে বলে বলতে পারি। এবং ঘরবাড়ি রাস্তাঘাট ইত্যাদি স্থিতিশীল অবস্থায় রয়েছে তাই এটি স্থিতিশীল।

তাই বলা যায় যে পদার্থবিজ্ঞানে গতিশীল বলতে কোন বস্তু এর গতির কারণে কাজ করার যে সামর্থ লাভ করে তাকে বোঝানো হয়। অর্থাৎ কোন বস্তুকে স্থির অবস্থা থেকে কোন নির্দিষ্ট বেগে ত্বরিত করতে যে পরিমাণ কাজ করতে হয় তা দিয়ে এর গতিশক্তির পরিমাপ নির্ণয় করা হয়। পদার্থবিজ্ঞানে বিভিন্ন ধরনের গতি রয়েছে। আমরা আমাদের চারপাশে যে ধরনের গতি দেখতে পাই যেমন কোন কিছু নড়ছে কোন কিছু কাঁপছে ঘুরছে কিছু সরে যাচ্ছে এ সকলেরই হল বাস এই সবগুলোই হল গতির উদাহরণ। তাই বিভিন্ন প্রকার গতির কথা বলা হয়ে থাকে। এগুলো হলো সরলরৈখিক গতি ঘূর্ণন গতি চলন গতি পর্যায়ে বৃত্ত গতি সরল স্পন্দন গতি ইত্যাদি। তাই কোন বস্তুকে তড়িত করার সময় যে শক্তি অর্জন করে বা বস্তুটি যদি বেগ পরিবর্তন না করে তাহলে ত্বরণের সময় অর্জিত এই গতিশক্তি অব্যাহত থাকে।

এবং পরবর্তীতে বস্তুটিকে এর বর্তমান বেগ থেকে পুনরায় স্থির অবস্থায় নেওয়ার জন্য মন্দনের ফলে একই পরিমাণ কাজ সম্পন্ন করে থাকে। কোন গতিশীল বস্তু যদি নির্দিষ্ট সময় পরপর একটি নির্দিষ্ট বিন্দু দিয়ে একই দিকে একইভাবে অতিক্রম করে তাহলে সেটাকে পর্যাবৃত্ত গতি বলা যায়। আবার একটি বিশেষ ধরনের পর্যাবৃত্ত গতি হচ্ছে সরল স্পন্দন গতি। স্পন্দন গতির বেলায় একটি নির্দিষ্ট বিন্দুর দুই পাশে বস্তুটি স্পন্দিত হয়ে থাকে। কোন কিছু যদি সরলরেখায় যায় তাহলে তার গতিটিকে বলা হয় সরল রৈখিক গতি। এবং কোন কিছু যদি একটা নির্দিষ্ট বিন্দুর সম দূরত্ব থেকে ঘুরতে থাকে তাহলে সেটাকে বলে ঘূর্ণন গতি। আবার যদি কোন কিছু এমন ভাবে চলতে থাকে যেন একই সময় একই দিকে যেতে থাকে তাহলে সেটা হচ্ছে চলন গতি। কোন রোলার কোস্টারের গাড়িগুলি যখন পথের সবচেয়ে নিচে থাকে তাদের গতিশক্তি সর্বাধিক হয়ে থাকে। আবার যখন উপরে উঠতে থাকে তখন গতিশক্তি বিভব শক্তিতে রূপান্তরিত হতে শুরু করে। চলন্ত সাইকেল চালক এবং সাইকেলের গতিশক্তি অন্য রূপে রূপান্তরিত হতে পারে।

উদাহরণ হিসেবে বলা যায় সাইকেল আরোহী অনায়াসে পার হওয়ার জন্য যথেষ্ট উঁচু একটি পাহাড়ের মুখোমুখি হতে পারে যাতে সেটির শীর্ষে সাইকেলটি পুরোপুরি থেমে যায়। গতিশক্তি এখন মহাকর্ষীয় বিভব শক্তিতে রূপান্তরিত হয়েছে যা ব্যবহার করে আর কোন গতিশক্তি ছাড়াই পাহাড়ের অপর প্রান্তে পৌঁছা যায়। আমরা এতক্ষণে গতিশক্তি সম্পর্কে বিভিন্ন ধরনের প্রমাণ উদাহরণ সংজ্ঞা দেখে নিলাম। তাহলে চলুন দেখতে পারি এখন গতিশক্তি কাকে বলে।
গতিশক্তি: কোন গতিশীল বস্তুত তার গতির জন্য কাজ করার যে সামর্থ্য লাভ করে তাকে গতিশক্তি বলে। কোন একটি বস্তুর গতিশক্তি অপরিবর্তনীয় নয়। বস্তুরগতি পরিবর্তিত হতে পারে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *