আয়নিক বন্ধন কাকে বলে

আয়নিক বন্ধনকে তরিদ্র যে বন্ধন ও বলা হয়ে থাকে। আমরা জানি রাসায়নিক পদার্থের অনুগুলো সেটি যৌগের হোক অথবা মৌলের হোক তাদের একটি বন্ধন থাকে। এই বন্ধন গুলি বিভিন্ন প্রকারের হয়ে থাকে। যেমন সমযোজী বন্ধন আয়নিক বন্ধন রাসায়নিক বন্ধন ইত্যাদি। তাই আজকে আমাদের রসায়নের রাসায়নিক বন্ধন বা পরমাণুর গঠনের যে বন্ধন সে বন্ধন গুলি সম্পর্কে আলোচনা করতে হবে এই পর্যায়ে। আমরা আগেই জানি যে ধাতুগুলো আয়নীকরণ শক্তির মান অনেক কম হয় এরা অতি সহজেই সর্বশেষ শক্তিস্থানের এক বা একাধিক ইলেকট্রন ত্যাগ করে ধনাত্মক আধান বিশিষ্ট আয়ন বা ক্যাটায়নে পরিণত হয়।

আবার এ কথাও জানি যে অধাতু গুলোর ইলেকট্রন আসক্তির মান বেশি হওয়ায় এরা সহজেই সর্বশেষ শক্তিস স্তরে এক বা একাধিক ইলেকট্রন গ্রহণ করে ঋনাত্মক আধান বিশিষ্ট আয়ন বা অ্যানায়নে পরিণত হয়ে থাকে। যৌগের অনুগুলি একে অপরের সাথে ইলেকট্রন আদান-প্রদান এবং শেয়ারের মাধ্যমে বা ত্যাগ করে বর্জন করে তাদের মধ্যে বন্ধনের সৃষ্টি হয়ে থাকে। আজকে আমাদের এ পর্যায়ে দেখাতে হবে আহ্নিক বন্ধন বাদ তড়িৎযোজী বন্ধন কাকে বলে। এইযে এক বা একাধিক ইলেকট্রন গ্রহণ করে ঋনাত্মক আধান বিশিষ্ট আয়ন বা অ্যানায়নে পরিণত হয় এভাবে সৃষ্ট বিপরীত আধানের ক্যাটায়ন ও অ্যানায়নের মধ্যে স্থির বৈদ্যুতিক আকর্ষণ বল বা ইলেকট্রিক বল কাজ করে থাকে। এই electrol static বল বা কুলম্ব আকর্ষণ বল এর ফলে তারা একে অপরের সাথে যুক্ত থাকে। এই যুক্ত থাকার কারণে বা যুক্ত থাকার জন্য একটি আকর্ষণ বল প্রয়োজন। এই আকর্ষণ শক্তিটি কিভাবে সৃষ্টি হয় এখন আমরা তা দেখব।

আমরা আবার বলতে পারি যে যে আকর্ষণের ফলে ক্যাটায়ন ও আনানের পরস্পরের সাথে যুক্ত থাকে বা এ ধরনের যুক্ত থাকার কারনই হচ্ছে আইনিক বা তড়িৎযোজী বন্ধনের কারণে। যেমন সোডিয়াম পরমাণু তার সর্বশেষ শক্তি স্তরের একটি ইলেকট্রন ত্যাগ করে নিষ্ক্রিয় গ্যাসের মত ইলেকট্রন বিন্যাস অর্জন করে। অর্থাৎ সর্বশেষ শক্তি স্তরের আটটি ইলেকট্রন গঠন করে সোডিয়াম ক্যাটায়নে পরিণত হয়। আবার আরেক দিকে খেয়াল করলে দেখা যাবে যে ক্লোরিন পরমাণুর সাথে তার সর্বশেষ শক্ত স্তরের সোডিয়ামের ত্যাগকৃত অর্থাৎ ছেড়ে দেয়া ইলেকট্রনটিকে গ্রহণ করে নিষ্ক্রিয় গ্যাসের মত আচরণ করে বা নিষ্ক্রিয় গ্যাসের মত ইলেকট্রন বিন্যাস অর্জন করে অর্থাৎ এটা বলা যায় যে সর্বশেষ স্তরে আটটি ইলেকট্রন গঠন করে ক্লোরিন পরিণত হয়। এভাবে সৃষ্ট ধনাত্মক আধান সোডিয়াম ও ঋণাত্মক আধান ক্লোরিন পরস্পরের সাথে স্থির বৈদ্যুতিক আকর্ষণে আবদ্ধ হয়। এই আকর্ষণ বলে আয়নিক বন্ধন বা তড়িৎযোজী বন্ধন।

অর্থাৎ ধাতব ও অধাতব পরমাণুর রাসায়নিক সংযোগের সময় ধাপ পরমাণু তার সর্বশেষ শক্তিস্তরের এক বা একাধিক ইলেকট্রনকে অধাতব পরমাণুর সর্বশেষ শক্ত স্তরে স্থানান্তর করে ধনাত্মক ঋণাত্মক আয়ন সৃষ্টির মাধ্যমে যে বন্ধন গঠিত হয় তাকে আইনিক বা তড়িৎযোজী বন্ধন বলা যেতে পারে। যে যুগে আয়নিক বন্ধন থাকে তাকেই আইনিক যৌগ বলা হয়। ম্যাগনেসিয়াম অক্সাইড এর অণুতে ম্যাগনেসিয়ামের দুইটি ইলেকট্রন ত্যাগ করে নিষ্ক্রিয় গ্যাস নিয়নের মতো ইলেকট্রন বিন্যাস অর্জন করে অর্থাৎ তার সর্বশেষ শক্ত স্তরে আটটি ইলেকট্রন গঠন করে ম্যাগনেসিয়াম ধনাত্মক আয়নে পরিণত হয়। আবার অক্সিজেন পরমাণু ওই দুইটি ইলেকট্রন গ্রহণ করে নিষ্ক্রিয় গ্যাস নিয়মের মতো ইলেকট্রন বিন্যাস অর্জন করে অর্থাৎ সর্বশেষ শক্ত স্তরে আটটি ইলেকট্রন গঠন করে অক্সিজেন ঋণাত্মক আধানে পরিণত হয়।

এভাবেই আয়নিক বন্ধন গঠিত হয়। তাহলে এখন আমরা দেখতে পারি আয়নিক বন্ধন কাকে বলে?
আয়নিক বন্ধন: আয়নিক বন্ধন বলতে আমরা বুঝি যে ধাতব ও অধাতব পরমাণুর রাসায়নিক সংযোগের সময় ধাতব পরমাণু তার সর্বশেষ শক্ত স্তরের এক বা একাধিক ইলেকট্রনকে অধাতব পরমাণুর সর্বশেষ শক্ত স্তরে স্থানান্তর করে ধনাত্মক ঋণাত্মক আয়ন সৃষ্টির মাধ্যমে যে বন্ধন গঠিত হয় তাকে বন্ধন বলা হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *