জ্যামিতি কাকে বলে Class 2, 3, 4, 5, 6

পৃথিবীর কৃষিভিত্তিক সভ্যতার যুগে ভূমি পরিমাপের প্রয়োজনেই মনে করা হয় জ্যামিতির সৃষ্টি হয়েছিল। তবে জ্যামিতি আজকাল শুধু ভূমির পরিমাপের জন্যই ব্যবহৃত হয় না বরং বহু জটিল গাণিতিক সমস্যা সমাধানে জ্যামিতিক জ্ঞান এখন অপরিহার্য বিষয় হয়ে উঠেছে। প্রাচীন সভ্যতার নিদর্শন গুলোতে জ্যামিতি চর্চার প্রমাণ পাওয়া যায়। ঐতিহাসিকদের মতে প্রাচীন মিশরে আনুমানিক ৪ হাজার বছর আগেই ভূমি জরিপের কাজে জ্যামিতিক ধ্যান ধারণা ব্যবহার করা হতো। প্রাচীন মিশর ব্যাবিলন ভারত চীন ও ইনকা সভ্যতার বিভিন্ন ব্যবহারিক কাজে জ্যামিতিক প্রয়োগের নিদর্শন মিলেছে ঐতিহাসিকদের কাছে।

পাক ভারত উপমহাদেশে সিন্ধু সভ্যতার উপত্যকায় যে সভ্যতা গড়ে উঠেছিল জ্যামিতির বহুল ব্যবহার দেখা যায় সেই সভ্যতায়। হরপ্পা ও মহেঞ্জোদারোর খননে সুপরিকল্পিত নগরীর অস্তিত্বের প্রমাণ পাওয়া যায়। সেখানকার শহরের রাস্তাগুলো ছিল সমান্তরাল এবং ভূগর্ভস্থ জল নিষ্কাশনের ব্যবস্থা ছিল খুবই উন্নত। এছাড়াও সেই শহরের ঘরবাড়ির আকার দেখে বোঝা যায় যে শহরের অধিবাসীরা ভূমি পরিমাপেও দক্ষ ছিলেন। এছাড়াও বৈদিক যুগে বেদি তৈরিতে নির্দিষ্ট জ্যামিতিক আকার এবং ক্ষেত্রফল মেনেই তৈরি করতে হতো সেই বেদিগুলি। এই বেদি গুলি প্রধানত ত্রিভুজ চতুর্ভুজ ও ট্রাপিজিয়াম আকারের সমন্বয়ে গঠিত হতো বলে দেখা গেছে। তবে প্রাচীন গ্রিক সভ্যতার যুগেই জ্যামিতিক প্রণালীবদ্ধ রূপটি সুস্পষ্টভাবে লক্ষ্য করা যায়। গণিতবিদ থেলিস কে প্রথম জ্যামিতিক প্রমাণের কৃতিত্ব দেওয়া হয়ে থাকে। তিনি যুক্তি মূলক প্রমাণ দেন জ্যামিতিতে। তিনি প্রমাণ দেন ব্যাস দ্বারা বৃত্ত সমদ্বিখন্ডিত হয়। এরপর থেলিসের শিষ্য পিথাগোরাস জ্যামিতিক তত্ত্বের বিস্তৃতি ঘটান।

আনুমানিক খ্রিস্টপূর্ব ৩০০ অব্দে গ্রিক পন্ডিত ইউক্লিড জ্যামিতির ইততঃস্থ বিক্ষিপ্ত সূত্রগুলোকে বিধিবদ্ধ ভাবে সুবিন্যস্ত করে তার বিখ্যাত গ্রন্থ “ইলিমেন্টস” রচনা করেন। ১৩ খন্ডের সম্পূর্ণ কালোতীর্ণ এই ইলিমেন্টস গ্রন্থটি আধুনিক জ্যামিতির ভিত্তি স্বরূপ বলে ধরে নেওয়া হয়। তাহলে আমরা দেখতে পাই জ্যামিতির শুরু বিন্দু থেকে। বিন্দু থেকে রেখা। রেখা দুই প্রকার সরলরেখা ও বক্ররেখা। সরলরেখা দুই প্রকার সমান্তরাল সরলরেখা এবং তির্যক সরলরেখা। বক্ররেখার উদাহরণ বৃত্ত। ইজ্জত সরলরেখাকে তিন ভাগে বিভক্ত করা যায় যথা কোণ ত্রিভুজ এবং চতুর্ভুজ। কোন ৮ প্রকারের হয় যথা সূক্ষ্মকোণ সমকোণ স্থূলকোণ সরল কোণ প্রবৃদ্ধ কোণ সম্পূরক কোণ বিপ্রতীপ কোণ এবং সন্নিহিত কোণ। বাহু বেদের ত্রিভুজ তিন প্রকার এবং কোন ভেদে ত্রিভুজ তিন প্রকার। বাহুভদের তিন প্রকার ত্রিভুজ হলো সমবাহু ত্রিভুজ সমদ্বিবাহু ত্রিভুজ এবং বিষমবাহু ত্রিভুজ।

আবার কোন ত্রিভুজ তিন প্রকার হলো সূক্ষ্মকোণী ত্রিভুজ স্থূলকোণী ত্রিভুজ এবং সমকোণী ত্রিভুজ। চতুর্ভুজ কয়েক প্রকারের হয়ে থাকে যেমন রম্বস আয়তক্ষেত্র সামন্তরিক ট্রাপিজিয়াম বর্গ ঘুড়ি ইত্যাদি।

বিন্দু: লক্ষ্যবস্তু থেকে লক্ষ্যবস্তুর দূরত্বের তুলনায় ব্যাসার্ধ অতিক্ষুদ্র হলে ওই অবস্থানকে বিন্দু বলা হয়।

সমরেখবিন্দু: যেসব বিন্দু একই সরলরেখায় অবস্থান করে তাদেরকে সমরখ বিন্দু বলা হয়।

রশ্মি: একটি রেখার কোন বিন্দু ও উহার একপাশের অংশকে একত্রে রশ্মি বলা হয়। এবং ওই বিন্দুটিকে রশ্মিটির প্রান্ত বিন্দু বলা হয়।

সমবিন্দু: দুই বা ততোধিক সরলরেখার একটি সাধারণ বিন্দু থাকলে তবে উক্ত সরলরেখাকে ওই বিন্দুর সমবিন্দু বলে।
তাহলে এখন দেখা যাক জ্যামিতি কাকে বলে?

জ্যামিতি: গণিতবিদ্যার যে শাখায় ভূমি বা স্থানের পরিমাপ সম্পর্কে আলোচনা করা হয় তাকেই জ্যামিতি বলে। জ্যামিতিকে অনেক সময় স্থানভিত্তিক বিজ্ঞান ও বলা হয়ে থাকে। অধ্যাপক দীপ পন্ডিত ইউক্লিড জ্যামিতির পরিমাপ পদ্ধতির সংজ্ঞা ও প্রক্রিয়া সমূহ ধারাবাহিকভাবে একটি পুস্তকে লিপিবদ্ধ করে থাকেন। সেই পুস্তকটিই আধুনিক জ্যামিতির ভিত্তি বলে ধরে নেওয়া হয়। সর্বপ্রথম মিশরের জ্যামিতিক আলোচনা গুলি শুরু হয় বলে মনে করেন।

গ্রিক শব্দ জ্যা ও মিতি নিয়ে গঠিত জ্যামিতি। আপনারা আমাদের ওয়েবসাইটটা ভিজিট করুন কারণ আমাদের ওয়েবসাইটে আপনাদের প্রয়োজনীয় সকল ধরনের তথ্য প্রকাশ করে থাকি আমরা। আমাদের ওয়েবসাইট থেকে আপনারা আপনাদের পছন্দ কৃত প্রশ্নের উত্তরগুলি ডাউনলোডও করে নিতে পারবেন অনাহাসেই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *