শিল্প একটি দেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। অর্থাৎ অর্থনৈতিক দিক থেকে এগিয়ে যেতে হলে দেশের শিল্পকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হয়। আমাদের দেশ কৃষি প্রধান দেশ কৃষি আমাদের একমাত্র জীবিকা নির্বাহের বিষয় ছিল একসময়। কিন্তু বর্তমানে শুধু কৃষি আমাদের জীবিকা নির্বিশেষে এমন নয়। কারণ অনেক ধরনের শিল্পই এখন আমাদের দেশে গড়ে উঠেছে। এবং এই শিল্পের ওপর অনেক মানুষই জীবিকা নির্বাহ করে থাকে। তবে শিল্প বিভিন্ন ধরনের হয়ে থাকে। আয়তনের দিক এবং অর্থনৈতিক যোগানের উপর নির্ভর করে শিল্পকে প্রধানত দুই ভাগে ভাগ করা হয়। এর মধ্যে একটি হল বৃহৎ শিল্প এবং ক্ষুদ্র শিল্প। অর্থাৎ অনেক জনবল এবং অনেক কর্মকর্তা কর্মচারী নিয়ে যে শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠে এবং আয়তনিক দিক থেকেও বড় বৃহৎ যন্ত্রের মাধ্যমে পণ্য উৎপাদন করে থাকে সেগুলোকে পর্যায়ে পড়ে। আমাদের বাংলাদেশেও এ ধরনের অনেক বৃহৎ শিল্প গড়ে উঠেছে স্বাধীনতার পর থেকে।
তবে স্বাধীনতার পূর্বেও আমাদের আদমজী পাটকল বৃহৎ শিল্পের মধ্যে একটি। এই আদমজী পাটকলে একসময় অনেক অর্থ উপার্জন করেছিল। অর্থাৎ যখন বাংলাদেশ ে পাঠদারা অনেক বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করেছিল সেই সময় আমাদের আদমজী জুট মিল দেশের অর্থনীতির একটি বিশাল ক্ষেত্র হয়ে উঠেছিল। এবং সে কারণেই আমরা পাটকে স্বর্ণ সূত্র বলেও অভিহিত করতাম। কিন্তু বর্তমানে পাটের সেই কদর না থাকার কারণে আদম যে জুট মিল স এখন আমাদের দেশের আর অতটা গুরুত্বপূর্ণ করে না এবং সেটি বন্ধ হয়ে গেছে। এই আদমজী পাটকল কে ঘিরে অন্যান্য ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছিল সেই সময়। বর্তমানে অনেক ক্ষুদ্র শিল্প গড়ে উঠেছে আমাদের দেশে।
ক্ষুদ্র শিল্প বলতে বোঝানো যায় যে অল্প পুঁজির অল্প পরিসরে ব্যবসা বাণিজ্য। অর্থাৎ হাতে তৈরি আমাদের দেশজো জিনিসের দ্বারা তৈরিকৃত বিভিন্ন ধরনের শিল্প এই শিল্পের অন্তর্ভুক্ত। এবং কুটির শিল্প আমাদের এই শিল্পেরি অন্তর্ভুক্ত হয়ে থাকে। কুটির শিল্পের মাধ্যমে বিভিন্ন হাতে তৈরি জিনিস মেশিন দ্বারা তৈরি জিনিস উৎপাদন হয়ে থাকে এবং সেই তৈরি কৃত জিনিসগুলি বিদেশে রপ্তানি করেও বর্তমানে অনেক বৈদেশিক মুদ্রা আয় করা হচ্ছে। আর এ কারণেই কুটির শিল্পের অবদানও আমাদের দেশে অনেক বেশি বলে মনে করা হয়। পিসির পরে আমাদের এই কুটির শিল্প অবদান রেখে যাচ্ছে অর্থনৈতিক দিকটির ওপর। তাই আমাদের এই কুটির শিল্পগুলিকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে আমাদের অর্থনীতির জন্যই। এক সময় আমাদের দেশের মহিলারা শখে বিভিন্ন ধরনের কাঁথা বা এ জাতীয় অনেক শেলায় সরায় করতো এগুলো কুটির শিল্পেরই অন্তর্গত। আমাদের দেশের মেয়ে বউদের হাতে তৈরি সেই নকশি কাঁথা বিদেশের মাটিতে অনেক সুনাম অর্জন করেছে।
এবং তাদের সৌখিনতার কারণে আমাদের দেশের অনেক মানুষের জীবিকা নির্বাহ হয়ে থাকে এই নকশি কাঁথা সেলাইয়ের মাধ্যমে। নকশী কাঁথা ছাড়াও আমাদের দেশের মেয়েদের হাতে তৈরি অনেক বস্তু রয়েছে যেগুলি বিদেশের সৌখিন এর প্রতীক হিসেবে ব্যবহার হয়ে থাকে। এবং তারা সৌখিনতার পাশে ব্যবহার করলেও বা আরাম-আয়েশের কারণে ব্যবহার করলেও আমাদের দেশের অনেক মানুষের জীবিকা নির্বাহ হয়ে থাকে এই কুটির শিল্প দিয়ে। এখনো গ্রাম বাংলার অনেক মানুষই এই কুটির শিল্প দ্বারা বা হাতে তৈরি বিভিন্ন জিনিস তৈরি করে তারা তাদের জীবিকা নির্বাহ করে থাকে এবং অনায়াসেইতে সেটি তৈরি করে থাকে। তাদের জীবনও বদলে দিয়েছে এই হাতে তৈরি বিভিন্ন কুটির শিল্পের পণ্য তৈরি করে।
কুটির শিল্প সম্পর্কিত বিভিন্ন ধরনের তথ্য আমরা আমাদের এই পোস্টে তুলে ধরলাম এখন দেখার বিষয় আছে যে কুটির শিল্প কাকে বলে? তাহলে চলুন দেখি কুটির শিল্প কাকে বলে
কুটির শিল্প:পারিবারিক শ্রমিক দ্বারা ঘরে বসে কোনরকমের বিদ্যুৎ ও ভারী যন্ত্রপাতির সাহায্য ছাড়াই হাতের সাহায্যে কোনো দ্রব্যসামগ্রী উৎপাদন করাকে কুটির শিল্প বলা হয়। অর্থাৎ, কোনো ব্যাক্তি যদি ঘরে বসে ছোটখাটো কোনো যন্ত্রপাতি অথবা হাতের সাহায্যে কোনো দ্রব্যসামগ্রী তৈরি করে । ওই শিল্পকে কুটির শিল্প বলা হয়।