প্রাকৃতিক যতগুলি উপাদান রয়েছে তার মধ্যে বাতাস এবং পানি এই দুইটি উপাদান আমাদের জন্য সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব বহন করে থাকে। বায়ু আমাদের জীবন ধারণের জন্য খুবই উপযোগী বা প্রাণ বাঁচাতে প্রধান উপাদান। বায়ুর মাধ্যমে বা বায়ু ছাড়া মানুষ বা কোন প্রাণী জীবন ধারণ করতে পারে না। বায়ু একটি মিশ্র পদার্থ। বায়ুর মধ্যে অক্সিজেন হাইড্রোজেন কার্বন-ডাই-অক্সাইড নাইট্রোজেন ইত্যাদি অনেক উপাদান থাকে। এবং এই কারণেই বায়ুকে মিশ্র পদার্থ বলা হয়ে থাকে। বায়ুর একটি উপাদান অক্সিজেন যা প্রাণীরা শ্বাস প্রশ্বাস হিসেবে গ্রহণ করে থাকে।
শ্বাস নেওয়ার সময় প্রাণী বা সকল প্রাণী নিঃশ্বাসের সাথে অক্সিজেন এবং কার্বন-ডাই-অক্সাইড গ্যাস গ্রহণ করে থাকে। পরবর্তীতে অক্সিজেন প্রাণীদের রক্তের সঙ্গে মিশে দেহের সকল স্তরে পৌঁছে যায় এবং কার্বন ডাই-অক্সাইড প্রশ্বাসের মাধ্যমে সেটা বেরিয়ে যায়। আবার আমরা যে কার্বন-ডাই-অক্সাইড ছেড়ে দেই প্রশ্বাস হিসেবে সেই কার্বন-ডাই-অক্সাইড উদ্ভিদ খাদ্য তৈরি করতে ব্যবহার করে। তাই আমরা এ কথা বলা বলতে পারি যে বায়ুর প্রতিটি উপাদান আমাদের জন্য অত্যন্ত জরুরী। শুধু জরুরী বললে ভুল হবে যে আমাদের বেঁচে থাকার জন্য বায়ু প্রয়োজন।
আমরা ইতিমধ্যে দেখতে পেয়েছি যে করোনা কালীন সময়ে বা করো না মহামারীর সময়ে মানুষ অক্সিজেনের জন্য হাহাকার করেছে। অর্থাৎ অক্সিজেন সিলিন্ডার টাকা থাকলেও তারা পায়নি এবং অক্সিজেন ব্যতি রেখে অনেক জন মৃত্যুবরণ করেছে। এই মৃত্যুবরণ আমাদের জন্য অত্যন্ত দুঃখজনক। তাহলে আমাদের বুঝতে হবে যে এই বায়ু দূষণ আমাদের জন্য কতটা ক্ষতির কারণ হতে পারে। কিন্তু আমরা কখনোই হিসাব করে চলি না। জাতীয়তত্রভাবে ইটভাটা তৈরি গাড়ির কালো ধোয়া কলকারখানার কালো ধোঁয়া জ্বালানি পুড়িয়ে বায়ুকে দূষণ করে যাচ্ছি যত্রতত্রভাবে। কারোরই হুশ হচ্ছে না যে বায়ুকে দূষণ করলে আমাদের জীবন অতিষ্ঠ হয়ে যাবে। জলবায়ুর পরিবর্তনের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে বায়ু দূষণ। মানুষ যত সভ্যতার দিকে এগোচ্ছে পৃথিবীকে তত হুমকির সম্মুখীন করে ফেলছে।
বসবাসের অযোগ্য হয়ে উঠছে আমাদের আবাসভূমি পৃথিবী। তাই আমাদের যতদিন পর্যন্ত হুঁশ না হবে ততদিন পর্যন্ত আমাদের বায়ু দূষণ আমরা রোধ করতে পারব না। পৃথিবীর প্রত্যেকটি নাগরিককে এই বায়ু দূষণের প্রতি সচেতন করতে পারলে হয়তো কিছুটা হলেও বায়ু দূষণ কমে যাবে বলে আশা রাখি। প্রাণীর বা উদ্ভিদের জীবন দায়ী এই পদার্থটি যাতে দূষিত না হয় সেই দিকে আমাদের অবশ্যই সুদৃষ্টি রাখতে হবে। যেখানে সেখানে ইটভাটা তৈরি না করা কলকারখানার কালো ধোয়া বের হওয়ার আগেই যেন সেটিকে যতটুকুন পারা যায় পরিশুদ্ধ করে তারপরে ছেড়ে দেওয়া প্রয়োজন না হলে জ্বালানি পুড়িয়ে অযথাবায়ুকে দূষিত না করা এদিকে আমাদের সচেতন ভাবে সজাগ থাকতে হবে। যদি আমরা এই দিকে সচেতন না হই তাহলে খুব অল্প সময়ের মধ্যেই আমাদের পৃথিবী ধ্বংস হতে সময় লাগবে না।
বায়ু দূষণ আমাদের শুধু একা সমস্যা নাই এটি ধর্ম বর্ণ গোত্র দেশ জাতি নির্বিশেষে সকলেরই একটি সমস্যা। তাই পৃথিবীর সকল সচেতন নাগরিককে অবশ্যই এগিয়ে আসতে হবে এই বায়ু দূষণ রোধ করার জন্য। পৃথিবীর প্রতিটি বাসিন্দাকে অবশ্যই সজাগ করে তুলতে হবে জানাতে হবে বায়ু দূষিত হলে কি কি হতে পারে। বায়ু দূষিত হলে এটি নিজের পায়ে নিজেই কুড়োল মারার মত অবস্থা হবে। অর্থাৎ আমাদের বাসযোগ্য পৃথিবী আমাদের পরবর্তী প্রজন্মের জন্য নরক বানিয়ে ফেলবো আমরা নিজেরাই একথা আমাদের সকলেরই ভাবতে হবে।
প্রাকৃতিক পরিবেশের উপাদানগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো বায়ু বা বাতাস। প্রাকৃতিক ও মানবসৃষ্ট কারণে বাতাস তার স্বাভাবিক বৈশিষ্ট্য থেকে পরিবর্তিত হচ্ছে। অথচ জীবনধারণের জন্য বায়ু অত্যাবশ্যক। বায়ু না থাকলে পৃথিবী শূন্যতায় পর্যবসিত হতো। অন্যান্য দূষণের চেয়ে বায়ু দূষণের পরিধি এবং ব্যাপকতা সবচেয়ে বেশি। কারণ বাতাস স্বল্প সময়ে দূষিত পদার্থকে চতুর্দিকে ছড়িয়ে দিতে পারে।