অব্যয় পদ কাকে বলে

যে পদের কোন ব্যয় হয় না তাকে সাধারণভাবে আমরা অব্যয় পদ বলে থাকি। বাংলাতে পদ সাধারণত পাঁচ প্রকার। যথা: বিশেষ্য, বিশেষণ, সর্বনাম, অব্যয় ও ক্রিয়া। আমরা জানি যে বাক্যে ব্যবহৃত বিভক্তিযুক্ত শব্দ ও ধাতুকে পদ বলা হয়। প্রথমত পদকে সাধারণত দুই ভাগে বিভক্ত করা হয় একটি হল সব্বাই পদ অপরটি অব্যয় পদ। এই সব্বাই পথকে চার ভাগে বিভক্ত করা হয়। এই সময় চার প্রকার পদ হলো বিশেষ্য বিশেষণ সর্বনাম এবং ক্রিয়া। এবং আরেকটি পদ রয়েছে সেটি হল অব্যয় পদ। আমরা আগেই বলেছি যে বিভক্তিযুক্ত শব্দ পদ নামে পরিচিত হয়ে থাকে।

বাংলা ভাষায় ব্যবহৃত শব্দ বা পদগুলোকে উপরে উল্লেখিত পাঁচ ভাগে ভাগ করা হয়েছে। এক পথকে প্রয়োজন অনুসারে অন্য পদে আবার পরিবর্তন করা যায়। এই রোগ এক পথকে অন্য পদে পরিবর্তন করাকে আবার পদ পরিবর্তন বলে। বাংলা ভাষায় পদ পরিবর্তন বলতে আমরা সাধারণত বিশেষ্য পদকে পরিবর্তন করে বিশেষণ এবং বিশেষণ পদ কে পরিবর্তন করে বিশেষ্য পদে রূপান্তরিত করার প্রক্রিয়াকে বুঝে থাকি। এছাড়াও সর্বনাম থেকে বিশেষণ পদে এবং বিশেষ্য থেকে বিশেষ্য ও পরিবর্তিত হতে পারে। মানুষ যখন মনের ভাষায় বিচিত্র ভঙ্গিতে অর্থবহ করে প্রকাশ করতে চায় তখন বিভিন্ন পদের প্রয়োগ হয়। তবে সম্পূর্ণ নতুন শব্দ ব্যবহার করলে ভাষা দুর্বোধ্য হতে পারে।

এই কারণে মানুষ পথ বা শব্দের প্রকার পরিবর্তন করে মনের ভাব প্রয়োজন অনুসারে প্রকাশ করার রীতি আবিষ্কার করেছে। যাইহোক আমরা এখন দেখি এই পথগুলি কি এবং কাকে বলে। প্রথমে দেখা যাক বিশেষ্য পদ: কোন কিছুর নাম কে সাধারণভাবে বিশেষ্য পদ বলে। যেমন রহিম করিম শ্যামল অনিল সুনীল ইত্যাদি। বাক্য মধ্যে ব্যবহৃত যে সমস্ত পথ দ্বারা কোন ব্যক্তি জাতি সমষ্টি বস্তু স্থান কাল ভাবকর্ম বা গুণের নাম বোঝানো হয় তাকে বিশেষ্য পদ বলে।

বিশেষণ পদ: যে পথ বিশেষ্য সর্বনাম এবং ক্রিয়া পদের দোষ গুণ অবস্থা সংখ্যা পরিমাণ ইত্যাদি প্রকাশ করে তাকেই বিশেষণ পদ বলে। যেমন উদাহরণ হিসেবে বলা যায় যে চলন্ত গাড়ি, করুণাময় তুমি, দ্রুত চল। ইত্যাদি সবই বিশেষ্য সর্বনাম বা ক্রীড়া পদের দোষগুণ অবস্থা বোঝায়।
সর্বনাম পদ: বিশেষ্যের পরিবর্তে যে শব্দ ব্যবহৃত হয় তাকে সর্বনাম পদ বলে। সর্বনাম সাধারনত ইতোপূর্ব ব্যবহৃত বিশেষ্যের প্রতিনিধি স্থানীয় শব্দ।
ক্রিয়া পদ: বাক্যের অন্তর্গত যে পথ দ্বারা কোন পুরুষ কর্তৃক নির্দিষ্টকালে কোন কার্যের সংগঠন বোঝায় তাকে ক্রিয়াপদ বলে। তাই বোঝা যায় যে যেসব শব্দ দ্বারা হওয়া করা ইত্যাদি বোঝায় অর্থাৎ কোন কাজকে বোঝায় তাকেই ক্রিয়াপদ বলে।

অব্যয় পদ: যার ব্যয় বা পরিবর্তন হয়না অর্থাৎ যা অপরিবর্তনীয় শব্দ তাই অব্যয়। অব্যয় শব্দের সাথে কোন বিভক্তি ছিন্ন যুক্ত হয় না সেগুলোর একবচন বা বহুবচন হয় না এবং সেগুলোর স্ত্রী এবং পুরুষ বাস্তবতা নির্ণয় করা যায় না। অর্থাৎ যে পথ সর্বদা অপরিবর্তনীয় থেকে কখনো বাক্যের শোভা বর্ধন করে কখনো একাধিক পদের ভাগ্যাংশের বা বাক্যের সংযোগ বা বিয়োগ সম্বন্ধ ঘটায় তাকেই অব্যয় পদ বলে। বাংলা ভাষায় তিন ধরনের অব্যয় শব্দ রয়েছে। যথা: বাংলা অব্যয় শব্দ তৎসম অধ্যায় শব্দ এবং বিদেশি অব্যয় শব্দ। এছাড়াও বিবিধ উপায়ে গঠিত অব্যয় শব্দও রয়েছে।

যেমন একাধিক অব্যয় শব্দ যোগে কদাপী নতুবা অতএব অথবা ইত্যাদি আমরা বিভিন্ন বাক্য তৈরি করার সময় বলে থাকি এগুলি বিবৃত উপায় গঠিত অব্যয় শব্দরূপে ব্যবহৃত হয়। এছাড়াও আনন্দ বা দুঃখ প্রকাশক একই শব্দের দুইবার প্রয়োগে সিসি ধিক ধিক বেশ বেশ ইত্যাদি শব্দ আমরা ব্যবহার করে থাকি। এগুলো কেউ অব্যয় শব্দ বলা হয়। আবার দুটি ভিন্ন শব্দযোগে যেমন মোটকথা হয়তো যেহেতু নইলে ইত্যাদিও অব্যয় শব্দ। অলকার শব্দযোগেও অব্যয় হতে পারে। যেমন কুহু কুহু গুনগুন ঘেউ ঘেউ শান শান ছলছল কনকন ইত্যাদি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *