আধুনিক বাংলা সাহিত্যের একটি শাখা হলো উপন্যাস। এবং এই উপন্যাসের বেশি বয়স হয়নি। বাংলা সাহিত্যের অনন্য সৃষ্টি আধুনিক যুগের অনন্য সৃষ্টি হলো উপন্যাস। বাংলা সাহিত্যে বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের হাত ধরে বেশ কিছু উপন্যাস বাংলা সাহিত্যকে অত্যন্ত সমৃদ্ধশালী করেছে। এবং আধুনিক যুগের ঘোড়ার দিকে সাহিত্যের এই শাখাটি মানুষের কাছে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল। অর্থাৎ সে সময়কার শিক্ষিত মানুষজনের কাছে উপন্যাস একটি বিনোদনের বিষয় ছিল। উপন্যাসকে কথাসাহিত্য বলা হয়ে থাকে। উপন্যাস বাংলা সাহিত্যের দীর্ঘাবয়ব বিস্তারিত বর্ণনা সহকারে একটি কথাসাহিত্য হলো উপন্যাস। অর্থাৎ একটি পূর্ণাঙ্গ জীবন কাহিনী হতে পারে অথবা পূর্ণাঙ্গ প্রেম কাহিনী স্থান পায়। বা কোন ঐতিহাসিক বিষয়বস্তুগুলি স্থান পায় উপন্যাসের মধ্যে। উপন্যাস লেখার জন্য কোন ধারাবাজার ছক নিয়ম বা কোন ধরনের এক্সট্রা কোন কাঠামো নেই।
যেকোনো ধসেই অর্থাৎ পাঠক কে বোঝানোর জন্য লেখক পূর্ণ বর্ণনাত্মক বিষয়বস্তু তুলে ধরেন। অর্থাৎ বর্ণনার মাধ্যমেই একটি জীবন্ত ছবিকে বা জীবন্ত ছবি ফুটিয়ে তুলেন তার লেখনীর মাধ্যমে। উপন্যাস সাধারণত ছোটগল্পের চেয়ে অনেক বড় হয়ে থাকে অর্থাৎ অধিকাংশ উপন্যাসের আখ্যান ভাগ্য চরিত্রের অনেক বিস্তার লাভ করে থাকে। হাস্যকর উপন্যাস কে অনুপ উপন্যাস বা উপন্যাসিকাও বলা হয়ে থাকে। উপন্যাসিক তার উপন্যাসে পরিবেশের বর্ণনা রূপরেখা চরিত্র সংলাপ ইত্যাদি যখন মানুষের জীবন কাহিনী কে খুব সুন্দর এবং সার্থকভাবে ফুটিয়ে তোলে এবং যে উপন্যাসিক যত সুন্দর ভাবে সে সকল চরিত্রগুলিকে বেশি ভাবে সুন্দর ভাবে ফুটিয়ে তুলতে পারে সে উপন্যাসিকের উপন্যাস সকলের জনপ্রিয় হয়ে থাকে এবং উপন্যাসের গুনাগুন ঠিক থাকে। অর্থাৎ বলা যায় যে নাটক রাজাবলি বাধারাবিবরণী থেকে উপন্যাসের উপজীব্য গ্রহণ করে উপন্যাস রচনার প্রথাও রয়েছে।
উপন্যাসের মধ্যে নানা রূপভেদ পরিলক্ষিত হয় সাধারণত উপন্যাসের রূপ অত্যন্ত নমনীয় এবং মিশ্র হয়। একথা বলা যায় যে বাংলা সাহিত্যের বিভিন্ন শাখার মধ্যে উপন্যাসী হলো সর্বাধুনিক এবং সর্বাপেক্ষা জনপ্রিয় শাখা হচ্ছে এই উপন্যাস। তবে কবে কোনটি প্রথম উপন্যাস সে সম্পর্কে বলতে গেলে বলতে হয় যে অষ্টাদশ শতাব্দীতে ইংল্যান্ডে প্রথম আধুনিক উপন্যাসের রচনা হয়। আর পূর্বেই আমরা বলেছি যে বাংলা সাহিত্যে উপন্যাসের প্রবেশ ঘটে আধুনিক যুগের শুরুতে অর্থাৎ উনবিংশ শতাব্দীর মাঝামাঝি ভাবে বাংলা ভাষার প্রথম উপন্যাস প্রবর্তন হয়। একথা স্বীকার্য যে বাংলা সাহিত্যে কুলীন লেখক বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের হাত ধরেই বাংলা সাহিত্যে প্রথম উপন্যাস শাখাটির প্রবর্তন হয়ে থাকে। সেই মতে ধারণা করা হয় যে বাংলা সাহিত্যের প্রথম উপন্যাস “দুর্গেশ নন্দিনী”।
ব্যুৎপত্তিগত অর্থে উপন্যাস শব্দটির মানুষের জীবন জীবিকা নিয়ে রচিত হয় তাই বলা যায় যে মানব জীবনের বাস্তবতা অবলম্বন করে যে বিশ্লেষণাত্মক কাহিনী লেখক প্রকাশ করে তাকেই উপন্যাস বলে ধরা হয়। অর্থাৎ আধুনিক কালের একটি বিশেষ শিল্প রূপ অ জনপ্রিয় সাহিত্য হলো উপন্যাস। আধ্যাতে কথা বলা যায় যে উপন্যাস হলো কাহিনী রূপ একটি উপাদানকে বিবৃত করার বিশেষ কৌশল পদ্ধতি বা রীতিকে উপন্যাস বলা হয়। উপন্যাস শব্দটি ইংরেজি Novel এর আভিধানিক অর্থ- a fictitious prose narrative or tale presenting picture of real life of the men and women portrayed. অর্থাৎ উপন্যাস হচ্ছে গদ্যে লিখিত এমন এক বিবরণ বা কাহিনি যার ভেতর দিয়ে মানব-মানবীর জীবনযাপনের বাস্তবতা প্রতিফলিত হয়ে থাকে।
তাহলে আমরা এতক্ষণে উপন্যাস সম্পর্কিত বিস্তারিত যে তথ্যগুলি উপস্থাপন করলাম এখান থেকে অবশ্যই উপন্যাস কাকে বলে উপন্যাস শব্দটি কোথা থেকে এসেছে এবং উপন্যাস কি ধরনের সাহিত্যিক ইত্যাদি সব তথ্য আমরা দেখে নিলাম। তাই উপন্যাস নিয়ে আমাদের আর তেমন কোন তথ্য জানার নেই। অর্থাৎ একথা বলা হচ্ছে যে উপন্যাস কাকে বলে এই সম্পর্কে সকল ধরনের তথ্যই আমরা প্রকাশ করে দিলাম। বাংলার সাহিত্যের প্রথম উপন্যাস প্রথম ঔপন্যাসিক এবং ও উপন্যাসের শাখা কবে থেকে বাংলায় প্রচলিত হয়েছে ইত্যাদি সফল তথ্য আপনাদের জ্ঞাতার্থে জানানো হলো।