আমরা জানি এই পৃথিবীর সব জীব তার নিজস্ব চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যমন্ডিত হয়ে থাকে। তবে এইসব বৈশিষ্ট্যমণ্ডিত হয়ে থাকার একটি কারণ রয়েছে যে জীবের বংশগতি। ফাঁকি ও বৈশিষ্ট্যগুলো পরবর্তী প্রজন্মে প্রায় অবিকল স্থানান্তর এবং প্রস্ফুটিত হওয়ার একটি কারণ হচ্ছে জীবের বংশগতি। পৃথিবীর সব জীবের ক্ষেত্রেই এই প্রাকৃতিক নিয়ম প্রযোজ্য রয়েছে। এটি প্রাকৃতিকভাবে এক প্রজন্ম থেকে আরেক প্রজন্ম স্থানান্তরিত হয়। তাই আমরা দেখতে পাই যে ধান গাছের বিষ থেকে ধান গাছ এবং আম গাছের বীজ থেকে আম গাছ পাট গাছের বীজ থেকে পাটগাছই জন্মায়। তাই এভাবেই বংশানুক্রমে প্রজাতির বৈশিষ্ট্য বজায় থাকে।
এক প্রজন্ম থেকে আরেক প্রজন্ম এই বংশগতির বাহকগুলি স্থানান্তরিত হয় শুধুমাত্র সেই জীবের বংশগতি অর্থাৎ জিনের কারণে। আজকে আমাদের এই জ্বীন সম্পর্কে আলোচনা করতে হবে। অর্থাৎ জিন কাকে বলে। পিতা-মাতার বৈশিষ্ট্যগুলো বংশানুক্রমে সন্তান-সন্ততির দেহে সঞ্চারিত হওয়ার প্রক্রিয়ায় হল বংশগতি। বংশগতি সম্বন্ধে বিশদ আলোচনা ও গবেষণা করা হয় বংশগতিবিদ্যা নামের জীববিজ্ঞানের বিশেষ একটি শাখায়। জীবের সাদৃশ্য এবং অদৃশ্যমান লক্ষণ বা বৈশিষ্ট্য নিয়ন্ত্রনকারী এককের নাম জিন। অর্থাৎ পিতা-মাতার সম্পূর্ণ বৈশিষ্ট্য গুলি এক প্রজন্ম থেকে আরেক প্রজন্মে নিয়ে যায় যে প্রক্রিয়াটি সেটি অবশ্যই জিনের মাধ্যমে। এই জেন এ সকল বৈশিষ্ট্য বহনকারী রাসায়নিক পদার্থ। যা প্রাণীর পিতা-মাতার বৈশিষ্ট্য গুলি এক প্রজন্ম থেকে আরেক প্রজন্মে পৌঁছে দেয়।
জিনের অবস্থান জিভের ক্রোমোজোম এ। ক্রোমোজোমের যে স্থানে জিন অবস্থান করে তাকে লোকাস বলে। সাধারণত একটি বৈশিষ্ট্যের জন্য একটি নির্দিষ্ট জিন থাকে। কোন কোন ক্ষেত্রে একাধিক দিন মিলিতভাবে একটি বৈশিষ্ট্য প্রকাশের সহায়তা করে। আবার কোন কোন সময় একটি জিন একাধিক বৈশিষ্ট্য নিয়ন্ত্রণ করে। বিভিন্ন গবেষণার তথ্য থেকে জানা যায় যে জিনিই বংশগতির নিয়ন্ত্রক। এই জিন প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম দ্বিসুত্র ডিএনএ নিজের হুবহু অনুলিপি করতে পারে। আবার ডিএনএ থেকে প্রয়োজনীয় সংকেতের অনুলিপি নিয়ে আর এন এ সাইটোপ্লাজম এর রাইবোজোম এ নিয়ে আসে এবং সেই সংকেত অনুসারে সেখানে প্রোটিন তৈরি করে তারা। সুকেন্দ্রিক কোষের ক্ষেত্রে সেই প্রোটিন প্রথমে জমা হয় এন্ডোপ্লাজমিক রেটিকুলামে সেখান থেকে গোলজি বস্তু এবং বিএসসি কল গুলোর দ্বারা সেই প্রোটিনের নানাবিধ পরিবর্তন হয় এবং তা উপযুক্ত স্থানে বাহিত হয়।
এভাবেই জেন পিতা-মাতার বৈশিষ্ট্যগুলি প্রজন্মের পর প্রজন্ম স্থানান্তর করে আসছে। আর এই কারণে জেন বংশগতি সম্পর্কে অবশ্যই একটি গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হয়। তাই ডি এন এর দুইটি পলি নিউক্লিয় টাইট সূত্র বিপরীতভাবে অবস্থান করে। অনেকটা পেঁচানো সিঁড়ির ধাপের মতো ক্ষার গুলো শায়িতভাবে প্রধান অক্ষের সাথে লম্বভাবে অবস্থান করে। অর্থাৎ ডিএনএ অনুর বাইরের দিকের দন্ড দুইটি পরপর সুগার এবং ফসফেট দিয়ে গঠিত এবং এদের ভেতরের দিকে এন টু বেস অবস্থান করে থাকে। তাই আমাদের জিনের বিষয়টি একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বলে মনে করা হয়। কারণ পৃথিবীর ইতিহাসে দেখা যায় যে মানুষ বা প্রাণীর সৃষ্টি বহুদিন থেকে কিন্তু এই জিনের কারণে এক বংশগতি থেকে অপর বংশ গতির এই বাহক হয়ে এসেছে জিন। তবে কিছু কিছু জীনগত অসুখ আছে যেগুলোতে মিউটেশন হয় সেক্স ক্রোমোজোম এ অবস্থিত দিনগুলোর কারণে। এসব অসুখকে বলে সেক্স লিংক অসুক।
তাই এটি আবার জিনের কারণে হওয়ার জন্য জিনের বিষয়টি একটি বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। অর্থাৎ কিছু কিছু রোগ রয়েছে যেগুলি বাবা-মায়ের থাকলে সন্তানের প্রতি বা সন্তানের দিকে সংক্রামিত হতে পারে। একই জিনের বিভিন্ন সংস্করণ একই ধরনের বৈশিষ্ট্যকে বিভিন্ন রূপে বা মাত্রায় প্রকাশ করতে পারে। মাতা পিতার বৈশিষ্ট্য যে উদ্ভিদের বংশধরদের মধ্যে কিভাবে প্রকাশ পায় সেই সম্বন্ধে প্রথম দেখতে পান বিজ্ঞানী গ্রেগর জোহান মেন্ডেল মটর গাছ নিয়ে পরীক্ষা মাধ্যমে মূল্যবান তথ্য আবিষ্কার করেছিলেন তিনি।
জিন:DNA -তে অবস্থিত যে নির্দিষ্ট সংখ্যক নাইট্রোজেনযুক্ত বেস একটি নির্দিষ্ট প্রোটিন বা এনজাইম এর সংকেত বহন করে এবং যে-কোনো জীবের যাবতীয় দৈহিক ও চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের নিয়ন্ত্রক তাকে জিন বলা হয় ।