সাংস্কৃতিক উৎসব কাকে বলে

আমাদের পৃথিবীতে বিভিন্ন দেশ রয়েছে। এই দেশগুলির ভাষা ও বিভিন্ন হয়ে থাকে। অর্থাৎ যে অঞ্চলের ভাষা যে ধরনের সেই ভাষাভাষীর লোক দেখা যাচ্ছে যে একটি রাষ্ট্রে বা দেশে অধিক সংখ্যক হয়ে থাকলে সেই দেশের রাষ্ট্রভাষা ওই ভাষার উপর নির্ভর করে। তেমনি ভাবে আমাদের ভারতীয় উপমহাদেশের বিভিন্ন দেশ গুলির ভাষা ও বিভিন্ন। আমাদের বাংলাদেশের ভাষা বাংলা। এই বাংলা ভাষা শুধু আমাদের বাংলাদেশের সীমাবদ্ধ নেই। ভারতের পশ্চিমবঙ্গ আসাম ত্রিপুরার বিভিন্ন অঞ্চলে বাংলা ভাষাভাষীর লোক বসবাস করে থাকে। আর বাঙ্গালীদের সাংস্কৃতিক উৎসব হল বাঙালি ঐতিহ্যকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া।

তাই এই ধরনের উৎসব যেগুলি হয় অর্থাৎ বাঙালি সংস্কৃতিকে ঘিরে যে উৎসবগুলি হয় সেগুলিকেই সংস্কৃতিক উৎসব হিসেবে অভিহিত করা যেতে পারে। আমাদের বাংলাদেশের সবচাইতে বেশি সাংস্কৃতিক উৎসব হিসেবে আমাদের বর্ষবরণ অর্থাৎ পহেলা বৈশাখের যে বর্ষবরণের উৎসব হয় সেটিকে আমরা সাংস্কৃতিক উৎসব হিসেবে গণ্য করতে পারি। অর্থাৎ পহেলা বৈশাখের দিন বাঙালি সকল সংস্কৃতি মেনে বাঙালি খাবার দাবার এবং পোশাক পরিচ্ছদে গোটা বাঙালি জাতি বাংলা নববর্ষকে উদযাপন করে থাকে। বাংলা নববর্ষ হলো বাঙালির জীবনে বা বাঙালি জাতির জীবনে বিশেষ এক তাৎপর্য বহন করে।

বাঙালির দের গতানুগতিক জীবন ধরার মধ্যে থেকে তারা এই ঐতিহ্যকে ধারণ করে বা সংস্কৃতিকে ধারণ করে উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্যে পালন করে থাকে বাংলা নববর্ষ। বাংলা নববর্ষ ছাড়াও সাংস্কৃতিক উৎসব হতে পারে আমাদের বিভিন্ন গ্রাম্য মেলা লোকোযোগ বিভিন্ন সংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ইত্যাদি আমার দেশের সাংস্কৃতিক উৎসব বইমেলা একুশের বইমেলা ইত্যাদি আমাদের দেশের সাংস্কৃতিক উৎসবেরই অংশ। অর্থাৎ যেহেতু আমাদের দেশ বাংলাদেশ এবং এই বাংলাদেশের একটি ইতিহাস তো রয়েছে সেই ইতিহাস হাজার বছরের ঐতিহ্যকে ঘিরে বাংলার ইতিহাস। প্রাচীনকাল থেকেই নানা জাতি ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে বাঙালির আনন্দময় উৎসব হিসেবে পরিচিত হয়ে আসছে বাংলা নববর্ষ।

বঙ্গাব্দ সন প্রচলন হওয়ার পরেই বাংলা নববর্ষ উদযাপন শুরু হয়। তবে বাংলা নববর্ষ কবে থেকে শুরু হয়েছিল এটি আজকে বলা খুবই মুশকিল। কারণ বিভিন্ন ইতিহাস বিজ্ঞান বিভিন্ন ভাবে তাদের মতামত তুলে ধরেন। কেউ বলেন সম্রাট আকবরের সময় থেকে বাংলা সন চালু আবার কেউ কেউ বলেন তারও অনেক আগে অর্থাৎ বাঙালি শাসক হিসেবে যখন বাংলাকে শাসন করতো সেই লক্ষণ সেনের সময় থেকেই বাংলা সাল চালু ছিল। তাই এই ধরনের বিলম্ব নয় না গিয়ে আমরা দেখি এই বাংলা নববর্ষটি কিভাবে বাঙালিরা উদযাপন করে থাকে। বাংলা নববর্ষের প্রথম দিন পহেলা বৈশাখ এটি বঙ্গাব্দে শুরুর প্রথম দিন হিসেবেও বলা হতে পারে। স্বাধীন দেশে বাংলা নববর্ষ অর্থাৎ পহেলা বৈশাখ দিনটির মর্যাদা স্বীকৃত রয়েছে বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকেই। কিন্তু বাংলা নববর্ষ সম্পর্কে যে সচেতনতা পরিলক্ষিত হয় তা আর অন্যত্র কোথাও পাওয়া যায় না।

অর্থাৎ বাংলাদেশের মানুষ বা বাঙ্গালীরা আমরা বাংলা সন তারিখ বা দিন তারিখ মনে না রাখলেও বাংলা নববর্ষের দিন অর্থাৎ পহেলা নববর্ষ পহেলা বৈশাখ কত ইংরেজি তারিখে হয় সেটি আমাদের সবারই জানা থাকে। এবং এটি পালন করার জন্য অনেকদিন আগে থেকেই নারী পুরুষ বৃদ্ধ যুবক কিশোর সবার মনে নববর্ষের আগমনে আনন্দে জেগে ওঠে। তবে বাংলা নববর্ষ পালনের পরের ধাপে আসে একুশের বইমেলার উৎসব। অর্থাৎ একুশের বই মেলাটাও বাঙালি দের প্রাণের উৎসব হিসেবে বিবেচিত হয়। ফেব্রুয়ারির প্রথম তারিখ থেকে শুরু করে আঠাশ তারিখ অথবা কোন কোন বছর ২৯ তারিখ পর্যন্ত এই বইমেলা চলে থাকে। এই বইমেলা এই অনুষ্ঠিত হয় বাংলা একাডেমির তত্ত্বাবধানে।

এটি প্রতিবছরই অনুষ্ঠিত হয় এবং এই মেলাটাও বাঙ্গালীদের সকলের কাছে অত্যন্ত আনন্দের এবং সাংস্কৃতির একটা বড় উৎসব বলে মনে করা হয়। এ ধরনের অসাম্প্রদায়িক উৎসবগুলোকে বাঙালির বা বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক উৎসব হিসেবে বলা হয়ে থাকে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *