বর্তনী কাকে বলে

বর্তনী হল বিদ্যুতের রাস্তাকে বলা হয়। অর্থাৎ আমাদের বিভিন্ন প্রয়োজনে যে বিদ্যুৎ ব্যবহার করি এই বিদ্যুৎ যাবার যে রাস্তা তৈরি করা হয় তাকেই বর্তনী বলা হয়ে থাকে। তাই বলতে পারি যে মানুষের চলার জন্য যেমন পথের প্রয়োজন তেমনি বিদ্যুৎ বা তড়িৎ এর জন্য নির্দিষ্ট পথ প্রয়োজন এবং এই নির্দিষ্ট পথ অর্থাৎ তড়িৎ চলার পথই হলো বর্তনী ভালোভাবে বললে বলা হয় যে তড়িৎ বর্তনী। যখন তড়িৎ উচ্ছে দুই প্রান্তকে একবার একাধিক রোদ তড়িৎ যন্ত্র বা উপকরণের সাথে সংযুক্ত করা হয় তখন একটি তড়িৎ বর্তনী তৈরি হয়। একটি সুইচ বা চাবির সাহায্যে বর্তনী বন্ধ করা যায় এবং খোলা যায় অর্থাৎ সুইচটি সেই বর্তনের চাবি হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। যখন আমাদের বর্তনী চালু করার প্রয়োজন তখন সুইচ টিপলে সেটি বর্তনী চালু হবে এবং সুইচ অফ করে দিলে বর্তনীটি আবার বন্ধ হবে অর্থাৎ বিদ্যুতের রাস্তা বন্ধ হয়ে গেল তখন আর আমাদের সেই ইলেকট্রনিক যন্ত্রপাতিগুলি আর চলবে না।

তাই বলা যায় বর্তনী বন্ধ থাকলে তড়িৎ প্রবাহিত হবে খোলা থাকলে তড়িৎ প্রবাহিত হবে না। সাধারণত বর্তনীতে তড়িৎযন্ত্র ও উপকরণ সমূহ দুইভাবে সংযুক্ত করা হয় এই দুই ভাবে সংযুক্ত করার নাম হচ্ছে অর্থাৎ বর্তনী দুই প্রকারের হয়ে থাকে। একটি শ্রেণি সংযোগ বত্ত নিয়ে অপরটি সমান্তরাল সংযোগ বর্তনী। আমরা তাহলে এই দুই বর্তনী নিয়ে এখন আলোচনা করতে পারি।

শ্রেণী সংযোগ বর্তনী: কোন বর্তনীতে যদি রোধ যন্ত্র বা উপকরণ সমূহ এমন ভাবে যুক্ত করা হয় যেন প্রথমটির এক প্রান্তের সাথে অপরটির অর্থাৎ দ্বিতীয় টির আরেক প্রান্ত, দ্বিতীয়টির অপর প্রান্তের সাথে তৃতীয় টি র উপর এক প্রান্ত এবং যে কয়টি লাগানো থাকবে পর্যায়ক্রমে সাজানো থাকে তবে এই সংযোগকে বা অনুক্রম শ্রেণী সংযোগ বলা হয়।

এ ধরনের শ্রেণী সংযোগ বর্তনী তে একটি সুইচ ব্যবহার করলেই সবগুলি বৈদ্যুতিক বাল্ব বা বৈদ্যুতিক বাল্ব ফ্যান এ ধরনের যতগুলি সংযোগ থাকবে সবগুলি একই সাথে চলতে থাকবে আবার যখন বর্তনী বন্ধ করা হবে সবগুলি একসঙ্গে বন্ধ হবে। এই কারণে এই প্রকার বর্তনীর সুবিধা বা অসুবিধা দুই রয়েছে বলে মনে করা হয়। কারণ আমাদের যখন একটি বাল্ব বা একটি ইলেকট্রনিক্স যন্ত্র চালাতে হবে তখন একসাথে সবগুলি চলবে। তাই এটি অনেক সময় প্রয়োজন হলেও আমরা এই বর্তনী চালাতে হয়। এবার আসা যাক সমান্তরাল সংযোগ বর্তনীর বিষয়ে।

সমান্তরাল সংযোগ বর্তনী: কোন বর্তনীতে দুই বা ততোধিক রোদ তড়িৎ উপকরণ বা যন্ত্র যদি এমনভাবে সংযুক্ত থাকে যে সব কয়টির এক প্রান্ত একটি সাধারণ বিন্দুতে এবং অপরপ্রান্ত গুলো অপর একটি সাধারণ বিন্দুতে সংযুক্ত হয় তবে সেই সংযোগের সমান্তরাল সংযোগ বলে। সমান্তরাল সংযোগে প্রত্যেকটির মধ্যে দিয়ে ভিন্ন ভিন্ন তড়িৎ প্রবাহ চলে কিন্তু প্রত্যেকটির দুই সাধারণ বিন্দুর বিভব পার্থক্য একই থাকে। এই সমান্তরাল সংযোগবর্তনের তে যদি একটি বাল্ব নষ্ট হয় তাহলে অপর বাল্ব গুলি চলতে থাকবে কিন্তু শ্রেণী সংযোগ বর্তনীতে একটি বাল্ব ফিউজ হলে অন্য বাল্ব গুলি আর জ্বলবে না বর্তনীটি ভেঙ্গে যাবে। সমান্তরাল সংযোগে প্রত্যেকটির মধ্য দিয়ে ভিন্ন ভিন্ন তড়িৎ প্রবাহ চলে কিন্তু প্রত্যেকটির দুই সাধারণ বিন্দুর বিভব পার্থক্য একই থাকে।

কোন রৌপ্যকে দুই প্রান্তের বিভব পার্থক্য পরিমাপের জন্য ভোল্ট মিটার ব্যবহৃত হয় এবং এ কারণে একে রোধকের দুই প্রান্তের সাথে সমান্তরালে যুক্ত করতে হয়। ভোল্ট মিটারে পজেতিভ্রান্ত কেউ অবশ্যই কোষের ধনাত্মক প্রান্তের সাথে যুক্ত করতে হয় অন্যথায় যন্ত্রটি নষ্ট হয়ে যেতে পারে। আমরা এতক্ষন বর্তনী সম্পর্কিত বিভিন্ন ধরনের তথ্য এখানে তুলে ধরা হলো। এই বর্তনী ভালো-মন্দ বা সুফল কুফল সকল কিছুই আমরা এখানে তুলে ধরলাম। তাহলে এখন আমরা দেখতে পারি যে বর্তনী কাকে বলে?

বর্তনী: মানুষের চলার জন্য যেমন পথের প্রয়োজন তেমনি ভাবে তড়িৎ প্রবাহের জন্য প্রয়োজন নির্দিষ্ট পথ। তড়িৎ প্রবাহ চলার এই সম্পূর্ণ পথকেই তড়িৎ বর্তনী বলে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *