সমাস বাংলা সাহিত্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। বাংলা ভাষার শব্দ গঠনে একটি বিশিষ্ট প্রক্রিয়া হলো সমাস। আপনারা যারা সমাস কত প্রকার এ প্রশ্নের উত্তর জানার জন্য ইন্টারনেট সহ বিভিন্ন জায়গায় অনুসন্ধান করছেন আপনাদের বলব এ প্রশ্নের উত্তরটি জানতে হলে আপনাকে সঠিক জায়গাটি নির্বাচন করতে হবে। আজকে আমাদের এই আর্টিকেলটিতে সমাস কত প্রকার এই প্রসঙ্গে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে। আপনারা যারা সমাস কত প্রকার এই প্রশ্নের উত্তরটি অনুসন্ধান করছেন আমাদের আজকের আর্টিকেলটি সম্পন্ন মনোযোগ সহকারে করুন আর দেখে নিন আপনার প্রশ্নের উত্তর টি । আপনাদের সুবিধার জন্য আমাদের আজকের এই আর্টিকেলটিতে সমাস সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে কিছু তথ্য তুলে ধরা হলো।
সাধারণত বাংলা সাহিত্যের দিক থেকে সমাস শব্দের অর্থ পারস্পারিক সম্বন্ধযুক্ত একাধিক পদের পদীকরণ। অর্থাৎ দুই বা ততোধিক শব্দের আঠ গত মিলন পদ্ধতি। অর্থাৎ এক কথায় বলা হয় সমাস শব্দের সাধারণ অর্থ হল সংক্ষেপ।সমাস সংস্কৃত শব্দ। এর অর্থ সংক্ষেপ, মিলন, একাধিক পদের এক পদীকরণ। অর্থ সম্বন্ধ আছে এমন একাধিক শব্দের একসঙ্গে যুক্ত হয়ে একটি নতুন শব্দ গঠনের প্রক্রিয়াকে সমাস বলে।সমাসের উদ্দেশ্য অল্পকথায় অধিক ভাব প্রকাশ করা । একটা বিরাট শব্দ গুচ্ছকে সমাসের মাধ্যমে সংক্ষেপণ করা যায়। তবে সাহিত্যিক প্রয়োজনেই সংস্কৃত ভাষায় সমাসের আবির্ভাব হয়েছিল বলে মনে হয়। কারণ সাহিত্য মূলক কর্মে সমাসের ব্যবহার একে আরও আকর্ষণীয় করে তোলে। যা বাংলা সাহিত্যের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ এক ভূমিকা পালন করে।
আপনারা যারা সমাস কয় প্রকার এ প্রশ্নের উত্তরটি জানতে চাচ্ছেন তাদের জন্য বলছি বাংলা সাহিত্যের দিক থেকে সমাসকে ছয় ভাগে ভাগ করা হয়।
১. দ্বন্দ্ব সমাস
২. তৎপুরুষ সমাস
৩. কর্মধারয় সমাস
৪. দ্বিগু সমাস
৫. অব্যয়ীভাব সমাস
৬ বহুব্রীহি সমাস
১. দ্বন্দ্ব সমাস: যে সকল সমাসে প্রতিটি সম স্যমান পদের অর্থের প্রাধান্য থাকে সেগুলোকে দ্বন্দ্ব সমাস বলে। দ্বন্দ্ব সমাসে পর্বপদ এবং পর পদের সম্বন্ধ বুঝাতে ব্যাসবাক্যে ও এবং আর এই তিনটি অব্যয় পদ ব্যবহৃত হয়।
যেমন – ভাই ও বোন = ভাইবোন।
মাতা ও পিতা = মাতাপিতা। ইত্যাদি এগুলো হলো দ্বন্দ্ব সমাসের উদাহরণ।
২. তৎপুরুষ সমাস: পূর্ব পদের বিভক্তির লোপে যে সমাস হয় এবং যে সমাসে পর পদের অর্থ প্রধান ভাবে বোঝায়, তাকে তৎপুরুষ সমাস বলে। উদাহরণস্বরূপ বলা যায় মধু দিয়ে মাখা- মধুমাখা। মেঘ থেকে মুক্ত -মেঘ মুক্ত।
৩. কর্মধারয় সমাস: যে সমাসের সমস্যমান পদের দুটি পদের মধ্যে একটি বিশেষ্য এবং অন্যটি বিশেষণ কিংবা দুটি পদই বিশেষ্য কিংবা বিশেষণ হয় এবং পরপদ এর অর্থ প্রাধান্য পায় তাকে কর্মধারয় সমাস বলা হয়। যেমন উদাহরণ স্বরূপ বলা যায় যে, যিনি দাদা তিনি সাহেব=দাদা সাহেব। মহান যে নবী- মহানবী, সিংহের যে চিহ্নিত আসন-সিংহাসন।
৪. দ্বিগু সমাস: যে সমাসের পূর্বের পদের সংখ্যাবাদের শব্দের সমাহার বা মিলনের অর্থ তাকে এবং তারপরেও বিশেষ্য পদের সঙ্গে মিলে যায় সাধারণত তাকেই দ্বিগু সমাস বলা হয়। যেমন উদাহরণসহ বলতে গেলে, যেখানে চৌরাস্তা সমাহার তাকে সাধারণত চৌরাস্তা বলা হয়। তারপর তিনমাস তার সমাহার তে মাথা বলা হয়। সপ্ত অহের সমাহার-সপ্তাহ।
৫. অব্যয়ীভাব সমাস: যে সমাসে পূর্বপদে একটি অব্যয় এবং পরপদে একটি বিশেষ্য থাকা স্বত্বেও অব্যয় পদের অর্থ প্রাধান্য পায় তাকে অব্যয়ীভাব সমাস বলা হয়। যেমন কুলের সমীপে-উপকূল, গ্রহের ক্ষুদ্র- উপগ্রহ, মরণ পর্যন্ত- অমরণ।
৬. বহুব্রীহি সমাস: যে সমাসে সমস্যমান পদগুলোর কোনটির অর্থ না বুঝিয়ে অন্য কোন অর্থ প্রকাশ করে, তাকে বহুব্রীহি সমাস বলে। উদাহরণস্বরূপ বলা যায় যে আশিতে বিষ যার-আশীবীষ। নীলকন্ঠ যার- নীলকন্ঠ, ঘরের দিকে মুখ যার -ঘর মুখো।
বাংলা সাহিত্যের গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ হলো সমাস। সমাস সাধারণত বাংলা ভাষাকে সুন্দর ও সুশৃংখল করে তোলে। বাংলা ভাষায় সমাসের অবদান অনেক বেশি। সমাস বাক্যের বিভিন্ন পদের মধ্যে সংযোগ স্থাপন করে বাক্যকে করে তোলে সমৃদ্ধ করে।
আজকের এই আর্টিকেলটিতে আমরা সমাস সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করলাম। সমাজ কত প্রকার এই প্রশ্নের উত্তরটি জানার জন্য আপনারা যারা ইন্টারনেটে বিভিন্ন জায়গায় অনুসন্ধান করছেন আপনারা আমাদের আজকের আর্টিকেলটি সম্পূর্ণভাবে পড়ুন আর দেখে নিন আপনার সমাস সম্পর্কে না জানা সকল তথ্যগুলো।