পলাশীর যুদ্ধ কত সালে হয়

বাংলাদেশ তথা ভারতীয় উপমহাদেশের ইতিহাসে পলাশীর যুদ্ধ একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। বাংলার ইতিহাসে এটি একটি নারকীয় ঘটনা বলে পরিচিত। আমরা অনেকেই পলাশীর যুদ্ধ সম্পর্কে অনেক কিছু জানি আবার অনেকেই এসব সম্পর্কে জানিনা। পলাশীর যুদ্ধ ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের নদিয়া জেলার সদর শহর কৃষ্ণনগরের প্রায় ৫০ কিলোমিটার উত্তরে ভাগীরথী নদীর তীরে অবস্থিত একটি গ্রাম এ গ্রামেই বিখ্যাত পলাশীর যুদ্ধ হয়েছিল। বর্তমানে পলাশী একটি গ্রাম পঞ্চায়েত ও বাণিজ্যকেন্দ্র। আপনারা অনেকেই পলাশীর যুদ্ধের ইতিহাস সম্পর্কে জানতে চেয়েছেন। বা এই বিষয়ে জানতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। আমাদের আজকের এই আর্টিকেলটিতে আপনাদের এই বিষয়ে সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব। এই বিষয়টি সম্পর্কে জানতে হলে আপনাদের আমাদের আজকের এই আর্টিকেলটি সম্পন্ন মনোযোগ সহকারে দেখে নিতে হবে চলুন তাহলে দেখে নেয়া যাক পলাশীর যুদ্ধ কত সালে হয়।

১৮৫৭ সালের ২৩ জুন নবাব সিরাজউদ্দৌলা ও ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির মধ্যে এই পলাশীর যুদ্ধটি সংঘটিত হয়। প্রায় আট ঘন্টা চলাকালীন এই যুদ্ধটি স্থায়ী ছিল। নবাব সিরাজউদ্দৌল প্রধান সেনাপতি মীরজাফর আলী খানের বিশ্বাসঘাতকতার করার জন্য এই যুদ্ধে হেরে যান নবাব।এই যুদ্ধের রাজনৈতিক ফলাফল ছিল সুদূরপ্রসারী। তারপরও ছোটখাটো দাঙ্গার মত এটি ঘটনা ছিল। তবুও এটাকে যুদ্ধ বলে ঘোষণা করা হয়। পলাশীর যুদ্ধের ফলে ১৭৫৭ সালে বাংলায় বৃটিশ শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়। এর পূর্বে ভারতবর্ষ পুরো বিশ্ব অর্থনীতিতে ২৫ শতাংশ অবদান রাখত।সেসময় বৃটিশরা বিশ্ব অর্থনীতির মাত্র ২ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ করত। আর বৃটিশরা যখন ভারতবর্ষ ছেড়ে চলে যায় তখন ভারতীয় অর্থনীতি ছিল মাত্র ২ শতাংশ আর বৃটিশরা এসময় বিশ্বের অন্যতম ধনী দেশ বলে বিবেচিত হতো।

সিরাজউদ্দৌলা ছিলেন বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব। তিনি নবাব আলীবর্দী খাঁর দৌহিত্র ছিলেন। নবাব আলীবর্দী খাঁর মৃত্যুর পর সিরাজউদ্দৌলা সিংহাসনে আরোহণ করেন। তরুণ নবাবকে নানা ষড়যন্ত্র ও বিরোধী শক্তির মুখোমুখি হতে হয়। তার সামনে একদিকে ছিল ইংরেজদের ক্রমবর্ধমান শক্তি, অন্যদিকে বড় খালা ঘসেটি বেগম, সেনাপতি মীর জাফর আলী খানের মতো ঘনিষ্ঠজনদের ষড়যন্ত্র। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছিল রায় দুর্লভ এবং জগৎ শেঠের মতো প্রভাবশালী বণিক গোষ্ঠীর ষড়যন্ত্র। এ সময় বাংলায় ইংরেজ বণিকদের বাণিজ্য সংস্থার নাম ছিল ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি। ইংরেজদের সঙ্গে নবাব বিরোধী শক্তিগুলো একজোট হয়ে ষড়যন্ত্রে যোগ দেয়। তারা সবাই নবাবকে উৎখাতের চেষ্টা করতে থাকে।

শেষঅবধি ১৭৫৭ সালের ২৩ জুন ইংরেজ শক্তির সঙ্গে নবাবের সৈন্যদের পলাশীর প্রান্তরে যুদ্ধ হয়। এ যুদ্ধটি পলাশীর যুদ্ধ নামে পরিচিত।এই যুদ্ধে নানা কূটকৌশল ও ছল চাতুরীর আশ্রয় নেয় চতুর ইংরেজরা। সিরাজউদ্দৌলার কয়েকজন মন্ত্রী ও সেনাপতিকে ক্ষমতা ও অর্থের লোভ দেখিয়ে তারা কিনে নেয়। যুদ্ধে তারা সক্রিয় না থেকে ইংরেজদের সহায়তা করে। এতে সিরাজউদ্দৌলা পরাজিত হন। বাংলা তার স্বাধীনতা হারায়। ভারতবর্ষে ইংরেজ শাসন প্রতিষ্ঠার পথ সুগম হয় ওঠে।

পলাশীর যুদ্ধের ফলাফল ছিল সুদূর প্রসারী। এ যুদ্ধে সেনাপতি মীর জাফরের বিশ্বাস ঘাতকতায় নবাব সিরাজউদ্দৌলা পরাজিত হন। পরে তাকে হত্যা করা হয়। পলাশীর যুদ্ধের মাধ্যমেই বাংলায় ইংরেজ শাসনের ভিত্তি স্থাপিত হয়। কিন্তু ইংরেজদের হাতেই চলে গেল মূল ক্ষমতা। এভাবে বাংলা স্বাধীনতা হারায়। পরবর্তী প্রায় দুইশত বছর ইংরেজরা এ দেশে শাসন চালায়। আসলে পলাশীর যুদ্ধের ফলে বাংলায় তাদের শাসন প্রতিষ্ঠিত হয় এবং ভারতীয় উপমহাদেশে তাদের সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠার দুয়ার খুলে যায়। পুরো বিশ্ব রাজনীতিতেই এযুদ্ধের প্রভাব পড়েছিল।পলাশীর যুদ্ধের পরবর্তী সময়ে বাংলায় ইংরেজ শাসনের সূচনা হয়েছিল।

আপনারা যারা পলাশীর যুদ্ধ কত সালে হয় এই প্রশ্নটির উত্তরটি জানার জন্য এখানে ওখানে ইন্টারনেটের বিভিন্ন জায়গায় অনুসন্ধান করছেন, আপনাদের সুবিধার জন্য আমরা আমাদের আজকের এই আর্টিকেলটিতে আপনাদের এই প্রসঙ্গে বিস্তারিত আলোচনা করলাম। আপনারা আমাদের ওয়েবসাইটে এসে আপনাদের এই কাঙ্ক্ষিত প্রশ্নের সঠিক উত্তরটি খুব সহজেই জেনে নিন। তাছাড়া ইতিহাস সম্পর্কে যেকোনো প্রশ্নের উত্তর জানার জন্য আমাদের ওয়েবসাইটে নিয়মিত ভিজিট করুন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *