ইন্নালিল্লাহি ওয়াইন্নইলাহি রাজিউন কখন পড়তে হয়

প্রত্যেক মুসলমানের জীবনে চলার ক্ষেত্রে নানান ধরনের ইসলামিক কিছু শব্দ বা বাক্য উচ্চারণ করে থাকি। যেমন একজন মুসলমান আরেকজন মুসলমানের সাথে সাক্ষাৎ হলে সর্বপ্রথম আমরা সালাম বিনিময় করি। আনন্দ সংবাদ পেলে আলহামদুলিল্লাহ বলি। ভবিষ্যতের ব্যাপারে কোন কথা হলে ইনশাল্লাহ বলি আর খারাপ কিছু বললে নাউজুবিল্লাহ বলি। আমরা অনেকেই অনেক সময় ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্নালিল্লাহি রাজিউন এই বাক্যটি মৃত্যুর কথা শুনলে পড়ে থাকি। আসলে এ বাকোটি শুধুমাত্র মৃত্যুর কথা শুনলেই পরতে হয় নাকি আরো অন্য জায়গায় এই দোয়াটি পড়া যায়। চলুন দেখে নেয়া যাক আজকের এই আর্টিকেলটির মাধ্যমে এই দোয়াটি কোথায় কখন ও কিভাবে পড়া যায়।

ইন্নালিল্লাহি ওয়াইন্নইলাহি রাজিউন কখন পড়তে হয

আমাদের মুসলমানদের মধ্যে পরিচিত হোক কিংবা অপরিচিত হোক আত্মীয় হোক কিংবা অনাত্মীয়। মৃত্যুর খবর কানে আসলেই আমরা বলি ইন্ন-লিল্লাহি ওয়া ইন্ন-ইলাইহি রাজিউন। এই দোয়া কি শুধু মৃত্যুর সংবাদ শুনলেই বলতে হয়? না এটা শুধু মৃত্যুর সংবাদ নয় বরং যে কোন দুঃসংবাদ শুনলেই এই দোয়া পড়তে হয়। আমাদের সমাজের মানুষ মনে করে থাকেন এই দোয়া শুধু মৃত্যুর সংবাদ শুনলে পড়তে হয়। এটা সম্পূর্ণ ভুল ধারণা। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ পাক এরশাদ করেছেন কোন মমিন ব্যক্তি মুসিবতে আক্রান্ত হলে ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্নালিল্লাহি রাজিউন দোয়াটি পাঠ করতে হবে সেই মুমিন ব্যক্তির মুসিবত ও বিপদ কেটে যাওয়ার জন্য।

এ আয়াত থেকে স্পষ্টভাবে বোঝা যায় যে একজন মুমিন ব্যক্তি যে কোন বিপদ আপদে ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্নালিল্লাহি রাজিউন এই দোয়াটি পাঠ করবে। মমিন ব্যক্তির এই দোয়াটি শুধু মুখে নয় বরং অন্তরে এক কথা স্বীকার করে নেওয়া তিনি আল্লাহর কৃতিত্ব ধীন ছাড়া কারো ওপর ভরসা করেন না। আল্লাহ তাআলা বলেন, অবশ্যই আমি তোমাদের পরীক্ষা করব কিছুটা ভয়, ক্ষুধা, সম্পদ ও জীবনের ক্ষতি এবং ফল-ফসল বিনষ্টের মাধ্যমে। যখন তারা এসব বিপদে পতিত হয়, তখন তারা বলেবে ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন নিশ্চয় আমরা সবাই আল্লাহর জন্য এব়ং আমাদের বিপদ কেটে যাবার জন্য আমরা এই দোয়াটি অবশ্যই পাঠ করব।

তারা সেসব লোক, যাদের প্রতি আল্লাহর অফুরন্ত অনুগ্রহ ও রহমত রয়েছে এবং এসব লোকই হেদায়েত প্রাপ্ত হবেন। আল্লাহ তাআলাকে স্মরণ রাখার, তার প্রিয় বান্দা হওয়ার এবং তার কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপনের অন্যতম একটি দোয়া হল এটি। আর সবচেয়ে বড় একটি বিষয় হল আমাদের পবিত্র কুরআন মাজিদে তুলে ধরা এ আয়াতটি মানুষের জন্য সবচেয়ে বড় সান্ত্বনা ও প্রশান্তির দোয়া বা পরিভাষা। এ অসাধারণ দোয়া পাঠ করার মাধ্যমেই বড় বড় দুঃখ-বেদনা ও বিপদ-মুসিবতে ঈমানদার বান্দা প্রশান্তি খুঁজে পায়।

আর তা পাঠ করলে মানুষের সব দুঃখ-বেদনা ও বিপদ-মুসিবতের কষ্ট অন্তর থেকে দূরীভূত হয়ে যায়। মানুষের জীবনে শুরু থেকে শেষ হওয়া পর্যন্ত একটি পরিভাষা হওয়া উচিত, আর তা হল এই বাকের প্রথম অংশ ইন্নালিল্লাহি এই কথা অথ নিশ্চয়ই আমরা আল্লাহর জন্য, তাছাড়া অন্য আয়াতে আল্লাহ তা’আলা বলেন দুনিয়ার জীবনে বান্দা সবকিছু তার জন্য বলে ঘোষণা করে দিয়েছেন। আরে দোয়াটির দ্বিতীয় বাকী রয়েছে সবচেয়ে বড় একটি সান্তনা ওয়া ইন্নালিল্লাহি রাজিউন আরে বাকিটির অর্থ হলো নিশ্চয়ই আমরা আবারও আল্লাহ তালার কাছে ফিরে যাব। আর এটাই চিরন্তন বাস্তব।

পরকালের সীমাহীন যাত্রায় মৃত্যু যাচাই পাড়ি দেবো আমরা পৃথিবীর এমন কোন শক্তি নেই যে আমাদের এই চিরন্তন সত্য থেকে আলাদা করতে পারে। এই দোয়াটি শেষ বাক্য ওয়া ইন্নালিল্লাহি রাজিউন অর্থাৎ আবারো আমরা তার কাছে ফিরে যাবো কেউ এই কঠিন বাস্তবতা থেকে রক্ষা পাবে না। তার কাছে ফিরে যেতে হবে, একাধিক আয়াতে এ কথাটি উল্লেখ রয়েছে। আল্লাহতালা আমাদের সব বিপদ আপদ থেকে হেফাজত করুক সেই কামনা করি আমিন।

আজকের এই আর্টিকেলটির মাধ্যমে আমরা আপনাদের জানিয়ে দিলাম আপনাদের কাঙ্খিত প্রশ্নের কিছু তথ্য। আশা করছি আপনি আপনার প্রশ্নের উত্তরটি পেয়েছেন। এই প্রশ্নের উত্তরের তথ্যগুলো সম্পর্কে আরো কিছু জানার থাকলে আমাদের অবশ্যই জানাতে ভুলবেন না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *