আমরা আমাদের চারপাশে অনেক ধরনের জীব দেখতে পাই। এই জীব গুলি কখনো এককোষী হয় এবং কখনো বহুকোষী হয়। এছাড়াও কিছু জীব আমরা খালি চোখে দেখতে পাই না এ ধরনের জীব রয়েছে। এদের নির্দিষ্ট কেন্দ্রীকা যুক্ত সুগঠিত কোষও নেই। এরাই অণুজীব নামে পরিচিত। এই অনুজীবের মধ্যেই রয়েছে ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়া। আজ আমাদের ভাইরাস এবং ব্যাকটেরিয়ার মধ্যেকার পার্থক্যগুলি নিরূপণ করতে হবে। ভাইরাস রিকেটস ছত্রাক ব্যাকটেরিয়া শৈবাল প্রোটোজোয়া ইত্যাদি বিভিন্ন ধরনের অনু যেগুলি আমাদের পরিবেশের ছড়িয়ে ছিটিয়ে একাকার হয়ে রয়েছে। এরা আবার অধিকাংশই আমাদের উপকার করে কিছু কিছু ভাইরাস এবং ব্যাকটেরিয়া ছাড়া।
তবে কিছু কিছু অনুজীব আছে যারা আমাদের দেহে বিভিন্ন ধরনের রোগের সৃষ্টি করে। তাহলে আমরা প্রথমেই ভাইরাস সম্পর্কে কিছু দেখে নিই।
ভাইরাস: ইলেকট্রন অণুবীক্ষণ যন্ত্র ছাড়া আমরা ভাইরাসকে খালি চোখে দেখতে পাই না। এরা সরলতম জীব। ভাইরাসের দেহে কোষ প্রাচীর প্লাজমালেমা, সুসংগঠিত নিউক্লিয়াস সাইটোপ্লাজম ইত্যাদি এদের কিছুই নেই। তাই ভাইরাস দেহকে অকোষীয়ও বলা হয়। এরা শুধুমাত্র আমিষ আবরণ ও নিউক্লিক এসিড নিয়ে গঠিত হয়। এদের আমিষ আবরণ থেকে নিউক্লিক অ্যাসিড বের হয়ে গেলে এরা জীবনের সকল লক্ষণ হারিয়ে ফেলে তবে অন্য জীবদেহে যেইমাত্র আমি সাধারণ ও নিউক্লিক অ্যাসিডকে একত্র করা হয় তখনই এরা জীবনের সব লক্ষণ আবার ফিরে পায়।
অর্থাৎ জীবিত দেহ ছাড়া বা জীবদেহের বাহিরে এরা জীবনের কোন লক্ষণ দেখায় না এ কারণেই এদেরকে অনুচিত অর্থাৎ জীবের মতো কখনো আচরণ করে এবং কখনো কখনো জড়ের মতো আচরণ করার কারণেই এদেরকে অণুজীব শ্রেণীতে ফেলা হয়েছে। ভাইরাস সাধারণত গোলাকার ডন্ডাকার ব্যাঙ্গাচির মত পাউরুটির ন্যায় ইত্যাদি হতে পারে। ভাইরাস মানবদেহে বসন্ত হাম সর্দি ইনফ্লুয়েঞ্জা ইত্যাদি বিভিন্ন ধরনের রোগের সৃষ্টি করে থাকে। বসন্ত হাম সর্দি ইত্যাদি বায়ুবাহিত রোগ। ধানের টুকরো রোগও তামাকের মোজাক রোগ ইত্যাদি বিভিন্ন প্রকার বা ভিন্ন ভিন্ন ধরনের ভাইরাসের কারণে হয়ে থাকে। এরপর আমরা ব্যাকটেরিয়া সম্পর্কিত বিভিন্ন তথ্য দেখা যাক কি আছে।
ব্যাকটেরিয়া: ব্যাকটেরিয়ার কিছু কথা আমরা এর আগে একটু শুনলে পারেও বিস্তারিত তেমন কিছু জানিনা। ব্যাকটেরিয়া হলো আদি নিউক্লিয়ার যুক্ত অশবুজ এককোষী এবং আণুবীক্ষণিক জীব। ব্যাকটেরিয়ার অস্তিত্ব লক্ষ্য করেন সর্বপ্রথম বিজ্ঞানী এন্টনি ফরম লিবেন হুক। ব্যাকটেরিয়ার কোষ গোলাকার দণ্ডকার কম আকার প্যাঁচানো ইত্যাদি নানা ধরনের হয়। দেহের আকার আকৃতির ভিত্তিতে একে বিভিন্ন রূপে ভাগ করা হয় যেমন কক্কাসাকৃতির বেসিলা চাকৃতির কমাকৃতির পাইরিয়াম আকৃতির হয়ে থাকে। মৃত জীবদেহ ও আবর্জনা বসাতে ব্যাকটেরিয়া খুবই উপকারী। আমরা যে দই খাই সে দইও তৈরিতে ব্যাকটেরিয়ার ভূমিকা থাকে। পান্তা মজানোর খেতে ক্ষেত্রেও এক ধরনের ব্যাকটেরিয়া সাহায্য করে বলে পান্তা ভাত আমাদের এত প্রিয় হয়।
আবার আমাদের দেশের সোনালী আঁশ বলে খেত পাট এই পাট গাছের ছাল পচাতে ব্যাকটেরিয়া দারুন ভাবে সাহায্য করে এ কারণেই পাট থেকে সোনালী আঁশ বের করতে পারা যায়। আবার একমাত্র ব্যাকটেরিয়ায় প্রকৃতি থেকে মাটিতে নাইট্রোজেন সংবন্ধন করে থাকে তাই মাটির গুনাগুন রক্ষার্থে বা মাটির উর্বরতা বৃদ্ধিতে ব্যাকটেরিয়ার ব্যাপক ভূমিকা রয়েছে। আমরা বিভিন্ন জীবন রক্ষাকারী এন্টিবায়োটিক ব্যাকটেরিয়া থেকে তৈরি করে থাকি। ব্যাকটেরিয়ার জিন প্রকৌশলের মূল ভিত্তি কিছু কিছু ক্ষেত্রে জীবের কাঙ্খিত বৈশিষ্ট্য পাওয়ার জন্য জিনগত পরিবর্তনের কাজে ব্যাকটেরিয়াকে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। আমরা আমাদের এই পোস্টে ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাস সম্পর্কে বিভিন্ন ধরনের তথ্যপ্রদর্শন করলাম যা আপনাদের ব্যাকটেরিয়া এবং ভাইরাসের পার্থক্যগুলি পরিলক্ষিত হয়।
অর্থাৎ আমরা যদি আমাদের এই পোস্টটি ভালোভাবে পড়ে থাকি তাহলে অবশ্যই ব্যাকটেরিয়া এবং ভাইরাস সম্পর্কিত পার্থক্যগুলি অবশ্যই করে ফেলতে পারব। ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাসের পার্থক্য করতে তাহলে আমাদের আর কোন অসুবিধা হবে না বলে আশা করছি।