আমরা জানি সমগ্র জীবজগতের সকল প্রাণী অথবা উদ্ভিদ কোষ দিয়ে গঠিত হয়ে থাকে। এই জীবজগতের উদ্ভিদ এবং প্রাণীরা এককোষী থেকে শুরু করে বহুকোষী পর্যন্ত হয়ে থাকে। অর্থাৎ ছোট্ট একটি চারা থেকে বৃহৎ বৃক্ষের জন্ম হতে পারে। যখন উদ্ভিদের বৃষ্টি চারা অবস্থায় বা সদ্যোজাত উদ্ভিদ হয় তখন তার কোষের সংখ্যা অনেক কম থাকে এবং যখন সেই বৃক্ষ টি এক সময় বৃক্ষে পরিণত হয় তখন তার কোষগুলি সংখ্যা অনেক অনেক হাজার হাজার কোটি কোটি হতে পারে। তাই দেখা যায় যে জীবজগৎ কোষ দ্বারা বৃদ্ধি পাত্র হয়ে থাকে। জীব জগতের দেহের ক্ষুদ্রাংশ বা একাক হল কোষ। তাই জীবজগতের জন্য কোষ কোষের গঠন কোষের বৃদ্ধি বিভিন্ন প্রকার কোষ ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
আজকে আমরা এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সম্পর্কে অবগত হব আশা রাখছি। বিজ্ঞানী লই এবং কেভিএস ১৯৬৯ সালে বৈষম্য ভেদ্য পর্দা দিয়ে আবৃত এবং জীবজ ক্রিয়া-কলাপের একক যা অন্য সজীব মাধ্যম ছাড়াই নিজের প্রতিরোধ তৈরি করতে পারে এমন সত্তাকেই কোষ বলেছেন। সকল জীব কোষ এক রকমের নয়। এই কোষের মধ্যে গঠনগত পার্থক্য থেকে কোষ কে বিভিন্ন প্রকারে ভাগ করা হয়েছে। এখানে নিউক্লিয়াস এর গঠনের উপর ভিত্তি করে কোষ ধরণের হয়ে থাকে। একটি আদিকোষ এবং অপরটি প্রকৃত কোষ। এখন তাহলে আমরা এই দুই প্রকার কোর্স সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিতে পারি।
আদি কোষ: আদি কোষের আরেকটি নাম হচ্ছে প্রাককেন্দ্রিক কোষ। এই ধরনের কোষে অর্থাৎ আদি কোষে কোন সুগঠিত নিউক্লিয়াস থাকে না। এজন্য এদের আদি নিউক্লিয়াসযুক্ত কৌশল বলা যেতে পারে। এসব কোষের নিউক্লিয়াস কোন পর্দা দিয়ে আবৃত থাকে না তাই নিউক্লিয় বস্তু সাইটোপ্লাজমে ছড়ানো থাকে। এসব কষে মাইটোকনড্রিয়া প্লাস্টিক এন্ডোপ্লাজমিক রেটিকুলাম ইত্যাদি অঙ্গানু থাকেনা তবে রাইবোজোম থাকে। ক্রোমোজোম এ কেবলমাত্র ডি এন এ থাকে। নীলাভ সবুজ শৈবাল বা ব্যাকটেরিয়ায় এ ধরনের কোর্স দেখতে পাওয়া যায়। তাই এই ধরনের ছোট ছোট উদ্ভিদে কোষগুলোতে নিউক্লিয়াস সুগঠিত থাকে না। এ ধরনের শৈবাল বা ব্যাকটেরিয়া আমাদের পৃথিবীর যেখানে সেখানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে।
ব্যাকটেরিয়ার জন্মস্থান অবশ্যই ভদ্র জলাশয়ে। বদ্ধ জলাশয়গুলোতে গেলে দেখতে পাওয়া যায় সবুজ সবুজ অনেক জলজ উদ্ভিদ পানির মধ্যে ভেসে আছে। এসব জায়গায় চোখ রাখলে আমরা শৈবাল দেখতে পাবো। এই ধরনের শৈবাল বা ব্যাকটেরিয়া য় আমরা আদিকোষ পেতে পারবো। এরপরে আমরা পরের কোর্স সম্পর্কে বিস্তারিত জানার চেষ্টা করি।
প্রকৃত কোষ: প্রকৃত কোষের আরেকটি নাম আছে সেটি হল সুকেন্দ্রিক কোষ। এসব কোষের নিউক্লিয়াস গঠিত অর্থাৎ নিউক্লিয়ার দিল্লি দিয়ে নিউক্লিয় বস্তু পরিবেষ্টিত ও সুসংগঠিত হয়ে থাকে। এসব কষে রাইবোজোম সহ সকল অঙ্গানু উপস্থিত থাকে। ক্রোমোজোম এ ডি এন এ প্রোটিন পিস্টন এবং অন্যান্য উপাদানও থাকে এই প্রকৃত কোষ বা সুখেন্দ্রিক কোষে। অধিকাংশ জীব কো ষ এই সুখ কেন্দ্রিক বা প্রকৃত কোর্স হয়ে থাকে। কাজের উপর ভিত্তিতে এই প্রকৃত কোষ কে আবার দুই ভাগে ভাগ করা যায়। একটি দেহকোষ এবং অপরটি জনন কোষ।
দেহ কোষ: বহুকোষী জীবের দেহ গঠনে এসব কোষ অংশগ্রহণ করে থাকে। মাইটোসিস পদ্ধতিতে বিভাজনের মাধ্যমে দেহকোষ বিভাজিত হয় এবং এভাবে দেহের বৃদ্ধি ঘটে থাকে। বিভিন্ন তন্ত্র ও অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ গঠনের দেহকোষ অংশ নেয়।
জনন কোষ: যৌন প্রজনন ও জনক্রম দেখা যায় জনন কোষে এমন জীবের জনন উৎপন্ন হয়। মিয়োসিস পদ্ধতিতে জনন কোষ বা জনন মাতৃকোষের বিপদন ঘটে এবং জনন কোষই উৎপন্ন হয়। আপত্ত জনন কোষে ক্রোমোজোম সংখ্যা মাতৃ জনন কোষের ক্রোমোজোম সংখ্যার অর্ধেক হয়ে থাকে। তাহলে আমরা আদিকোষ এবং প্রকৃত কোষ দুইটি কসরি বিস্তারিত আলোচনা করা হলো এই পোস্টে। তাহলে আমরা অবশ্যই এই আলোচনা থেকে কোষ দুইটির পার্থক্য করতে পারব। প্রথমে এই দুই কোষ সম্পর্কিত তথ্য গুলি ভালোভাবে জেনে নেওয়ার পর অবশ্যই সেখান থেকে পার্থক্যগুলি আমরা নির্ণয় করতে পারব বলে আশা রাখি।